ইট উৎপাদনের নতুন পদ্ধতি কমাবে দূষণ ও জ্বালানির ব্যবহার
Published: 10th, May 2025 GMT
দূষণ কমিয়ে সাশ্রয়ী উপায়ে ইট উৎপাদনে নতুন পদ্ধতি নিয়ে এসেছেন একদল আন্তর্জাতিক গবেষক। নতুন পদ্ধতিতে ইট উৎপাদনে জ্বালানির ব্যবহার ও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। এ গবেষণায় যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের গ্রিনটেক নলেজ সলিউশন ও আইসিডিডিআরবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ সালে ইট উৎপাদনের মৌসুমে ২৭৬টি ইটভাটার মালিকদের শিক্ষা উপকরণ, প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয়। ইটবোঝাই, ইট পোড়ানোর উন্নত পদ্ধতি, কয়লার পাশাপাশি কাঠের গুঁড়া ও ধানের তুষ ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হয় মালিকদের। এগুলো জ্বালানি সম্পূর্ণ পোড়াতে ও তাপ অপচয় রোধ করতে সক্ষম।
এতে দারুণ ফল এসেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬৫ শতাংশ ইটভাটার মালিক এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। এতে কার্বন–ডাই–অক্সাইড ২৩ শতাংশ ও ২০ শতাংশ সূক্ষ্ম বস্তুকণা (পিএম ২.
এ গবেষণার প্রধান লেখক বোস্টন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব পাবলিক হেলথের সহকারী অধ্যাপক নিভা ব্রুকস বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ইট উৎপাদন একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। তবে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও উন্নয়নে অনেক কিছু করা বাকি আছে এখনো।
ব্রুকস বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় আমরা দেখেছি, ইটভাটার মালিকরা সহজ পরিবর্তন গ্রহণে ইচ্ছুক। যদি তাঁরা সঠিক প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা পান এবং একই সঙ্গে সেটা তাঁদের আর্থিক লাভের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহলে তাঁরা পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি গ্রহণে ইচ্ছুক।’
ইটভাটাকে নিয়ন্ত্রণের আগের অনেক চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে এই গবেষক বলেন, এর আগে জিগজ্যাগ পদ্ধতি নিয়ে মালিকেরা দ্বিধার মধ্যে ছিলেন। তাঁরা মনে করেছিলেন, এতে শ্রমিকদের কাজ বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে সেটি সফল হয়নি।
গবেষণার সহলেখক আইসিডিডিআরবির সহকারী বিজ্ঞানী দেবাশীষ বিশ্বাসকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটা শুধু প্রযুক্তি ও কৌশলের বিষয় নয়। যদি সংশ্লিষ্টদের স্বার্থের প্রতি মনোযোগ দেওয়া না হয়, তাহলে প্রত্যাশিত সাফল্য আসে না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইটভ ট
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপে দল বৃদ্ধি, অলিম্পিকে ২৮ ম্যাচ—আইসিসির সভায় আরও যেসব সিদ্ধান্ত
আইসিসির ত্রৈমাসিক সভার শেষ দিন ছিল গতকাল। দুবাইয়ে আইসিসির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিশ্ব ক্রিকেটের প্রায় সব বড় কর্মকর্তা ও সংগঠকেরা উপস্থিত ছিলেন।
এবারের সভায় আইসিসি বোর্ড এমন কিছু কৌশলগত পদক্ষেপ অনুমোদন করেছে, যা বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে, নারী ক্রিকেটকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেবে এবং খেলাটিকে নিয়ে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা আরও দৃঢ় করবে।
তবে এশিয়া কাপজয়ী ভারতীয় দলকে এসিসির সভাপতি মহসিন নাকভির এখনো ট্রফি হস্তান্তর না করা নিয়ে কোনো সমধান হয়নি।
চলুন, দেখে নেওয়া যাক আইসিসির সভায় কী কী গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো—
মেয়েদের বিশ্বকাপে দল বৃদ্ধি২০২৯ সালের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপকে ১০ দলে সম্প্রসারণের ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। এ বছর ভারত নারী দল প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফাইনালের ভেন্যু নাবি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়াম ছিল দর্শকে ভরপুর, যা বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করেছে।
আইসিসির এই পদক্ষেপের লক্ষ্য বিশ্বকাপের মান বাড়ানো এবং উদীয়মান দেশগুলোকে বৈশ্বিক মঞ্চে সুযোগ করে দেওয়া। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘টুর্নামেন্টের সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে আরও অগ্রগতি আনতে আইসিসি বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে পরবর্তী আসরে ৮ দলের পরিবর্তে ১০টি দল অংশ নেবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘প্রায় ৩ লাখ দর্শক স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকে টুর্নামেন্টটি উপভোগ করেছেন, যা নারী ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো টুর্নামেন্টে সর্বাধিক দর্শকের রেকর্ড। এ ছাড়া টেলিভিশনে ও অনলাইনে দর্শকসংখ্যা বেড়েছে। শুধু ভারতেই প্রায় ৫০ কোটি মানুষ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এই টুর্নামেন্ট দেখেছেন।’
সহযোগী সদস্যদের জন্য রাজস্ব বণ্টনের বৃদ্ধিআইসিসি সমতার ভিত্তিতে উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই ২০২৬ সালে সহযোগী সদস্যদের জন্য তহবিলের বণ্টন প্রায় ১০% বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে। এই অতিরিক্ত তহবিলের মাধ্যমে দেশগুলো তাদের স্থানীয় কার্যক্রম, হাই–পারফরম্যান্স (এইচপি) কাঠামো ও উদীয়মান অঞ্চলে ক্রিকেটের উন্নয়নে আরও বিনিয়োগ করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট নিয়ে বিতর্কযুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের সদস্য পদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে আইসিসি। সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশটির ক্রিকেট বোর্ড বারবার আইসিসির নিয়ম ভঙ্গ করে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট নিয়ে আইসিসির অভিযোগ ছিল তিনটি—বোর্ডে কার্যকরী প্রশাসনিক কাঠামো না থাকা, মার্কিন অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটি থেকে জাতীয় স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতি না হওয়া এবং খেলাটির সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি।
সদস্য পদ স্থগিত করার পর প্রথমবারের মতো ‘প্রজেক্ট ইউএসএ’ সম্পর্কিত তথ্য পেয়েছে আইসিসি। সংস্থাটির নির্দেশ ছিল, বোর্ডের সদস্য পদ স্থগিত থাকলেও মার্কিন জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের খেলা, বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়নে যেন কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি না করা হয়।
‘প্রজেক্ট ইউএসএ’–এর মূল উদ্দেশ্য হলো ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেটের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করা এবং মার্কিন দলগুলোর জন্য পারফরম্যান্স উন্নয়নের পথ সুগম করা, যেন তারা নিয়মিতভাবে আইসিসির টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারে।
অলিম্পিকে ২৮ ম্যাচলস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক ক্রিকেটে ছয়টি করে পুরুষ ও নারী দল খেলবে, তা আগেই জানা গিয়েছিল। আইসিসি এবারের সভায় ম্যাচের সংখ্যাও নির্ধারণ করেছে। আসরে মোট ২৮টি ম্যাচ হবে বলে জানানো হয়েছে।
আফ্রিকান ও প্যান আমেরিকান গেমসেও ক্রিকেট২০১০ সালে এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট যুক্ত করা হয়েছে। এবার আফ্রিকান গেমস ও প্যান আমেরিকান গেমসেও খেলাটির অভিষেক হতে চলেছে। ২০২৭ সালে মিসরের রাজধানী কায়রোয় আফ্রিকান গেমস এবং পেরুর রাজধানী লিমায় হবে প্যান আমেরিকান গেমস। দুটি আসরেই ক্রিকেট যুক্ত হয়েছে বলে কাল নিশ্চিত করেছে আইসিসি।
ভিডিও গেমস তৈরিভিডিও গেমস তৈরির স্বত্ব দেওয়ার জন্য দরপত্র (ইনভাইটেশন টু টেন্ডার বা আইটিটি) আহ্বানের অনুমতি দিয়েছে আইসিসি। এতে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান আইসিসির সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবে এবং ক্রিকেটভক্তদের আধুনিক ও মজার ডিজিটাল অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে পারবে। আইসিসি মনে করছে, এটি ক্রিকেটকে আরও বেশি ডিজিটাল ও বিনোদন জগতে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ।
নারী কমিটিতে নতুন সদস্যনারী ক্রিকেট কমিটির নতুন সদস্যদের নিয়োগ অনুমোদন করেছে আইসিসি বোর্ড। কমিটির সদস্যদের মধ্যে আছেন ভারত নারী দলের সাবেক অধিনায়ক মিতালি রাজ, শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) প্রধান নির্বাহী অ্যাশলে ডি সিলভা, বিশ্বকাপজয়ী ভারত নারী দলের প্রধান কোচ অমল মজুমদার, নিউজিল্যান্ড নারী দলের প্রধান কোচ বেন সোইয়ার ও বেন সোয়ার, সামোয়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী সালা স্টেলা সিয়ালে-ভায়েয়া এবং ইংল্যান্ড নারী দলের প্রধান কোচ শার্লট এডওয়ার্ডস।