দূষণ কমিয়ে সাশ্রয়ী উপায়ে ইট উৎপাদনে নতুন পদ্ধতি নিয়ে এসেছেন একদল আন্তর্জাতিক গবেষক। নতুন পদ্ধতিতে ইট উৎপাদনে জ্বালানির ব্যবহার ও কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। এ গবেষণায় যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের গ্রিনটেক নলেজ সলিউশন ও আইসিডিডিআরবি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ সালে ইট উৎপাদনের মৌসুমে ২৭৬টি ইটভাটার মালিকদের শিক্ষা উপকরণ, প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয়। ইটবোঝাই, ইট পোড়ানোর উন্নত পদ্ধতি, কয়লার পাশাপাশি কাঠের গুঁড়া ও ধানের তুষ ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হয় মালিকদের। এগুলো জ্বালানি সম্পূর্ণ পোড়াতে ও তাপ অপচয় রোধ করতে সক্ষম।
এতে দারুণ ফল এসেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬৫ শতাংশ ইটভাটার মালিক এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। এতে কার্বন–ডাই–অক্সাইড ২৩ শতাংশ ও ২০ শতাংশ সূক্ষ্ম বস্তুকণা (পিএম ২.

৫) কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে কয়লার খরচ। ইটের গুণগত মানও উন্নত হয়েছে এ পদ্ধতিতে।

এ গবেষণার প্রধান লেখক বোস্টন ইউনিভার্সিটির স্কুল অব পাবলিক হেলথের সহকারী অধ্যাপক নিভা ব্রুকস বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ইট উৎপাদন একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। তবে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও উন্নয়নে অনেক কিছু করা বাকি আছে এখনো।
ব্রুকস বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় আমরা দেখেছি, ইটভাটার মালিকরা সহজ পরিবর্তন গ্রহণে ইচ্ছুক। যদি তাঁরা সঠিক প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা পান এবং একই সঙ্গে সেটা তাঁদের আর্থিক লাভের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহলে তাঁরা পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি গ্রহণে ইচ্ছুক।’

ইটভাটাকে নিয়ন্ত্রণের আগের অনেক চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে এই গবেষক বলেন, এর আগে জিগজ্যাগ পদ্ধতি নিয়ে মালিকেরা দ্বিধার মধ্যে ছিলেন। তাঁরা মনে করেছিলেন, এতে শ্রমিকদের কাজ বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে সেটি সফল হয়নি।

গবেষণার সহলেখক আইসিডিডিআরবির সহকারী বিজ্ঞানী দেবাশীষ বিশ্বাসকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটা শুধু প্রযুক্তি ও কৌশলের বিষয় নয়। যদি সংশ্লিষ্টদের স্বার্থের প্রতি মনোযোগ দেওয়া না হয়, তাহলে প্রত্যাশিত সাফল্য আসে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইটভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

বদ নজরের দোয়া: ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা

‘বদ নজর’ ইসলামে একটি বাস্তব সত্য, যা মানুষের ঈর্ষা, হিংসা বা অতিরিক্ত প্রশংসার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি করতে পারে। কোরআন ও হাদিসে বদ নজরের বাস্তবতা এবং এর থেকে সুরক্ষা লাভের উপায় উল্লেখ করা হয়েছে।

তাই মুসলমানদের জন্য বদ নজর থেকে রক্ষার দোয়া ও আমল জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বদ নজরের বাস্তবতা

আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর নিশ্চয় যারা অবিশ্বাস করেছে, তারা যখন কোরআন শোনে তখন প্রায় তাদের দৃষ্টির দ্বারা তোমাকে পতিত করবে। আর তারা বলে: ‘সে তো অবশ্যই পাগল।’” (সুরা কলাম, আয়াত: ৫১)

রাসুল (সা.) বলেছেন: “চোখ লাগা (বদ নজর) সত্য।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১৮৮)

আরও পড়ুনশিশুদের বদ নজর থেকে বাঁচাতে১৫ আগস্ট ২০২৫বদ নজর থেকে বাঁচার দোয়া

রাসুল (সা.) বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো:

১. বদ নজর থেকে শিশুদের রক্ষার দোয়া

রাসুল (সা.) হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর জন্য এই দোয়া পড়তেন:

উচ্চারণ: উ‘ঈযুকুমা বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিল লাম্মাহ।

অর্থ: “আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে আশ্রয় দিচ্ছি, প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং ক্ষতিকর বদ নজর থেকে।” (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ২০৬০)

২. বদ নজর থেকে রক্ষার সাধারণ দোয়া

উচ্চারণ: আ‘ঊযু বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন শার্রি মা খালাক।

অর্থ: “আমি আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির অশুভ দিক থেকে আশ্রয় চাই।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭০৮)

৩. বদ নজর দূর করার আমল

রাসুল (সা.) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের মধ্যে এমন কিছু দেখে যা তাকে ভালো লাগে, তখন সে যেন তার জন্য বরকতের দোয়া করে। কারণ বদ নজর সত্য।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৫০৯)

এক্ষেত্রে দোয়া করা যায়—

উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু ফীক।

অর্থ: “আল্লাহ তোমার জন্য বরকত দান করুন।”

আরও পড়ুনদোয়া কবুলের জায়গা০৪ জুন ২০২৪বদ নজর প্রতিরোধে করণীয়

১. সকালে-সন্ধ্যায় জিকির–আজকার পাঠ করা (যেমন আয়াতুল কুরসি, সুরা ফালাক, সুরা নাস)।

২. অন্যের প্রশংসায় বরকতের দোয়া করা।

৩. আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং তাওয়াক্কুল করা।

বদ নজর মানুষের জন্য বাস্তব ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে আল্লাহর উপর ভরসা, কোরআনের আয়াতসমূহ পাঠ এবং রাসুল (সা.)-এর শিখানো দোয়া পাঠের মাধ্যমে মুসলমান সহজেই এর ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারে।

তাই প্রতিদিনের জীবনে বদ নজর প্রতিরোধের দোয়াগুলো নিয়মিত পড়া প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ