‘ভিটামিন ডি’ এর ঘাটতি হলে শরীরে যা যা ঘটতে পারে
Published: 10th, May 2025 GMT
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা দিলে রোগীর মাংসপেশিতে ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি ঘাড়ে ব্যথা, কোমরেও ব্যথা অনুভব করতে পারেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘‘রোগী কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেই ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। এসব উপসর্গ দেখা দিলে রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে পারেন ভিটামিন ডি-এর অভাব হয়েছে কিনা। এর অভাবে শরীরে নানা জটিলতা তৈরি হয় শিশুদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে রিকেটস হয়ে থাকে, অর্থাৎ পা ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে যায়। আর বড়রা ভুগতে পারেন অস্টিওমাইলোসিস। এরপর ধীরে ধীরে হাড়ের গুণগতমান কমতে থাকে।’’
কনসালট্যান্ট ডা.
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘সূর্যের আলো ছাড়াও আমরা ভিটামিন ডি পাই বিভিন্ন প্রাণীজ উৎস থেকে। যেমন— ডিমের কুসুম, দুধ, মাখন থেকে পেতে পারি। প্রাণীজ ছাড়াও শাব সবজি থেকেও ভিটামিন ডি পেতে পারি। ’’
আরো পড়ুন:
‘ইউরিন ইনফেকশন’ হলে কেন সতর্ক হবেন?
অ্যালার্জি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
আমরা অনেক বেশি রোগে যাই, তারপরেও কেন ভিটামিন ডি-এর অভাব থাকছে। এর কারণ এখন আমাদের অনেকেরই রোদে যাওয়ার প্রবণতা কমে গেছে। আবার কেউ রোদে গেলেও পুরো শরীর ঢেকে তারপর রোদে যান। ফলে ভিটামিন ডি পান না। সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পেতে হলে শরীরে বিশ থেকে আঠারো শতাংশ অংশ খোলা রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন ডা. জোবায়ের।
তিনি বলেন, ‘‘হাতের কিছুটা অংশ এবং মুখমন্ডল যদি খোলা না থাকে তাহলে ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব না। বিশেষ করে সকাল দশটা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত প্রতিদিন ২০ মিনিট নিয়মিত যদি রোদে না থাকেন তাহলে আপনার শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।’’
ভিটামিন ডি-এর উৎসগুলো সম্পর্কে জেনে সেই খাবারগুলো খেতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে রোদে যেতে হবে। কিছু কিছু মানুষ আছেন, ঘরের কাচের জানালা বন্ধ করে তার পাশে দাঁড়িয়ে রোদ পোহান। এতে কিন্তু পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব নয়। সানস্ক্রিন লাগিয়ে ঘরের বাইরে গেলেও পরিমাণমতো ভিটামিন ডি পাবেন না। রোদ থেকে ভিটামিন ডি পেতে আপনাকে সরাসরি সূর্যালোকে দাঁড়াতে হবে।
তবে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে রক্তে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমা হওয়া সহ নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। হতে পারে কিডনির সমস্যা।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স র য র আল আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
অপতথ্য রোধে মানুষের আস্থা অর্জন জরুরি
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও প্রযুক্তির বর্তমান সময়ে যেভাবে অপতথ্য ছড়াচ্ছে, তা রোধে মানুষের আস্থা অর্জন সবচেয়ে জরুরি। এ জন্য আইন, নীতি প্রণয়নে অংশীদারদের সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি এসব নীতির ক্ষেত্রে মানুষের অধিকার ও সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিতে হবে। তাহলেই মানুষের আস্থা আসবে।
আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৫ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘কীভাবে ভুয়া তথ্য শাসনব্যবস্থার হাতিয়ার হয়ে উঠল’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন গত শনিবার শুরু হয়েছে।
ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ-এর সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। যারা এক যুগের বেশি সময় শাসন করেছে। এই অভ্যুত্থানে যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তা নিয়ে পরাজিত শক্তি বিশ্বে প্রোপাগান্ডা (অপপ্রচার) ছড়াচ্ছে যে আন্দোলনকারীরাই এদের হত্যা করেছে। এ ধরনের বয়ান তৈরি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব নিয়ে ক্যাম্পেইন (প্রচার) চলছে। বিশ্বের অনেকেই এটা বিশ্বাস করাও শুরু করেছে যে এই অভ্যুত্থান হয়তো একটি ষড়যন্ত্র ছিল।
গণমাধ্যমে ফ্যাক্ট-চেকার থাকা নিয়ে এই সম্পাদক বলেন, একটি গণমাধ্যমের কেন ফ্যাক্ট-চেকার দরকার হবে? কারণ, প্রত্যেক প্রতিবেদক নিজেই একজন ফ্যাক্ট-চেকার। পেশাদার সাংবাদিকতায় এটার দরকার নেই।নূরুল কবীর বলেন, বাংলাদেশে সামনে নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলো প্রচারণা শুরু করেছে। একটি রাজনৈতিক দল যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় সক্রিয়ভাবে যুদ্ধের বিপক্ষে অংশ নিয়েছিল এবং গণহত্যায় জড়িত ছিল, সেই দলের একজন নেতা এখন বলছেন, তাঁরাও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। তারা টুইস্ট করছে। কথা হচ্ছে তারা কোন অংশে ছিল? এগুলো বলে তারা অপতথ্য ছড়াচ্ছে।
গণমাধ্যমে ফ্যাক্ট-চেকার থাকা নিয়ে এই সম্পাদক বলেন, একটি গণমাধ্যমের কেন ফ্যাক্ট-চেকার দরকার হবে? কারণ, প্রত্যেক প্রতিবেদক নিজেই একজন ফ্যাক্ট-চেকার। পেশাদার সাংবাদিকতায় এটার দরকার নেই।
কোনো রাষ্ট্রই পুরোপুরি আইন ছাড়া ভুল তথ্য প্রতিরোধ করতে পারে না উল্লেখ করে নূরুল কবীর বলেন, কিন্তু বাংলাদেশের অভিজ্ঞতায় এ ধরনের আইন উল্টো তথ্যপ্রবাহ সীমিত করার কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তাই আইন গুরুত্বপূর্ণ হলেও আইন প্রণয়নের সময় জনগণ ও রাজনৈতিক অংশীদারদের সতর্ক থাকা জরুরি। তারা যেন বুঝতে পারে আইনটি সত্যিই তথ্য রক্ষা করছে, নাকি তথ্য নিয়ন্ত্রণ করছে।
ইউএনডিপির লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যুরোর ডিজিটাল ডেমোক্রেসি অ্যানালিস্ট আলভারো বেলত্রানো উরুতিয়া বলেন, এখন যে অবস্থায় সবাই দাঁড়িয়েছে, তাতে গণতন্ত্রকে ও তথ্যব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে মনোযোগ দিতে হবে। অনেকেই এসব খাতে বিনিয়োগ করছেন, নানা সমাধান তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছেন, কিন্তু সমস্যার মূলটা জানছেন না।
একটি রাজনৈতিক দল যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় সক্রিয়ভাবে যুদ্ধের বিপক্ষে অংশ নিয়েছিল এবং গণহত্যায় জড়িত ছিল, সেই দলের একজন নেতা এখন বলছেন, তাঁরাও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। তারা টুইস্ট করছে। কথা হচ্ছে তারা কোন অংশে ছিল?নূরুল কবীর, সম্পাদক, নিউ এজনির্বাচনের সময় ভুল তথ্যের বিষয়টি শুধু ভোটের দিনের বিষয় নয়, পুরো প্রক্রিয়াই ঝুঁকিতে থাকে উল্লেখ করে ইউএনডিপি বাংলাদেশের ইলেকটোরাল সাপোর্ট প্রজেক্টের প্রধান প্রযুক্তি পরামর্শক অ্যান্দ্রেস দেল কাস্তিও বলেন, নির্বাচন পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে স্বচ্ছতা বজায় রাখা। এতে জন-আস্থা গড়ে ওঠে। নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছতা না থাকলে ভুল তথ্য সহজে ছড়িয়ে যায়।
সিঙ্গাপুরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়নুল আবেদিন রশিদ বলেন, তথ্যব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ না করলে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যায়। নির্বাচন কার্যকারিতা হারায়। তরুণদের কাছে একটি ভারসাম্যপূর্ণ তথ্য-পরিবেশ তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। একটি দেশ বা সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলোকে কীভাবে মোকাবিলা করে, তার ওপরই নির্ভর করবে—তথ্য খাত কোন দিকে যাবে।
বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৫ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘কীভাবে ভুয়া তথ্য শাসনব্যবস্থার হাতিয়ার হয়ে উঠল’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা। আজ রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে