ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা দিলে রোগীর মাংসপেশিতে ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি ঘাড়ে ব্যথা, কোমরেও ব্যথা অনুভব করতে পারেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘‘রোগী কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেই ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। এসব উপসর্গ দেখা দিলে রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে পারেন ভিটামিন ডি-এর অভাব হয়েছে কিনা।  এর অভাবে শরীরে নানা জটিলতা তৈরি হয় শিশুদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে রিকেটস হয়ে থাকে, অর্থাৎ পা ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে যায়।  আর বড়রা ভুগতে পারেন অস্টিওমাইলোসিস। এরপর ধীরে ধীরে হাড়ের গুণগতমান কমতে থাকে।’’ 

কনসালট্যান্ট ডা.

মোহাম্মদ জোবায়ের একটি পডকাস্টে বলেন, ‘‘একজন মানুষের শরীরে প্রতিদিন ৬০০ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট করে ভিটামিন ডি লাগে। আমরা আমাদের প্রয়োজনের আশি শতাংশ ভিটামিন ডি পাই সূর্যের আলো থেকে। সূর্যের আলো যখন আমাদের ত্বকে পড়ে তখন শরীরেই ভিটামিন ডি তৈরি হয়। এই ভিটামিন লিভার এবং কিডনী হয়ে এ্যাকটিভ ফর্ম হয় এবং আমাদের শরীরে নানা রকম কাজ করে।’’

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘‘সূর্যের আলো ছাড়াও আমরা ভিটামিন ডি পাই বিভিন্ন প্রাণীজ উৎস থেকে। যেমন— ডিমের কুসুম, দুধ, মাখন থেকে পেতে পারি। প্রাণীজ ছাড়াও  শাব সবজি থেকেও ভিটামিন ডি পেতে পারি। ’’

আরো পড়ুন:

‘ইউরিন ইনফেকশন’ হলে কেন সতর্ক হবেন?

অ্যালার্জি থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়

আমরা অনেক বেশি রোগে যাই, তারপরেও কেন ভিটামিন ডি-এর অভাব থাকছে। এর কারণ এখন আমাদের অনেকেরই রোদে যাওয়ার প্রবণতা কমে গেছে। আবার কেউ রোদে গেলেও পুরো শরীর ঢেকে তারপর রোদে যান। ফলে ভিটামিন ডি পান না। সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পেতে হলে শরীরে বিশ থেকে আঠারো শতাংশ অংশ খোলা রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন ডা. জোবায়ের। 

তিনি বলেন, ‘‘হাতের কিছুটা অংশ এবং মুখমন্ডল যদি খোলা না থাকে তাহলে ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব না। বিশেষ করে সকাল দশটা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত প্রতিদিন ২০ মিনিট নিয়মিত যদি রোদে না থাকেন তাহলে আপনার শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।’’

ভিটামিন ডি-এর উৎসগুলো সম্পর্কে জেনে সেই খাবারগুলো খেতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে রোদে যেতে হবে। কিছু কিছু মানুষ আছেন, ঘরের কাচের জানালা বন্ধ করে তার পাশে দাঁড়িয়ে রোদ পোহান। এতে কিন্তু পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব নয়। সানস্ক্রিন লাগিয়ে ঘরের বাইরে গেলেও পরিমাণমতো ভিটামিন ডি পাবেন না। রোদ থেকে ভিটামিন ডি পেতে আপনাকে সরাসরি সূর্যালোকে দাঁড়াতে হবে।

তবে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে রক্তে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমা হওয়া সহ নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। হতে পারে কিডনির সমস্যা।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স র য র আল আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচ বেড়েছে যুক্তরাজ্যে

বিদেশে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচ করার মোট হিসাব কিছুটা কমলে একক দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে বেড়েছে। 

দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে গিয়ে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে সেবা ও পণ্য কিনে চলতি বছরের জুলাইয়ে ৮৮৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা জুনের চেয়ে ৬৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা কম। জুনে এই ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৯৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

একসময় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি খরচ করতেন। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রবণতা ক্রমেই নিম্মমুখী হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিদের খরচ বেড়েছে, যেখানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে বেশি খরচ করে। এর মধ্যে জুলাইয়ে শীর্ষে রয়েছে ক্রমান্বয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর। বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচের ৫০ শতাংশের বেশি এই কয়েকটি দেশে হয়েছে। তবে জুনের চেয়ে জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে বেশি খরচ করেছে বাংলাদেশিরা। বিপরীত দিকে আমেরিকায় খরচ কমিয়েছে।

বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ ভারতে ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য যেতেন। ভিসা কড়াকড়ির কারণে ভারতে খরচ কমেছে। বিপরীতে যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ বেড়েছে; ফলে ভারতের চেয়ে খরচও বেড়েছে।

প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ১৪৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা মোট খরচের ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে খরচের এ অঙ্ক জুনে ছিল ৯৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। একইভাবে জুলাইয়ে আমেরিকায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ১২১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা মোট খরচের ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আমেরিকায় খরচের এ অঙ্ক জুনে ছিল ১২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। জুলাইয়ে থাইল্যান্ড গিয়ে বাংলাদেশিরা খরচ করেছেন ৬৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা মোট খরচের ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ভারতে ৬০ কোটি এবং মালয়েশিয়ায় ৫৯ কোটি এবং সিঙ্গাপুর ৫৪ কোটি টাকা কার্ডে খরচ করেছেন বাংলাদেশিরা।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, একজন বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশে গিয়ে প্রতি বছর ১২ হাজার ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে পারেন। এই অর্থ কার্ডের মাধ্যমে খরচ করতে পারেন, আবার বিদেশে যাওয়ার সময় নগদ ডলারও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন। তবে কার্ডের মাধ্যমে ডলার পেমেন্ট করতে গেলে একবারে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত খরচ করার সুযোগ রয়েছে।

ঢাকা/নাজমুল/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ