সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার ইতালিতে কর্মী কম যাচ্ছেন, কারণ কী
Published: 10th, May 2025 GMT
ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারের নাম ইতালি; কিন্তু ভাষা ও কারিগরি জ্ঞান ছাড়া দেশটিতে গিয়ে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারছে না অনেকে। ভুয়া নিয়োগপত্রের অভিযোগও আছে। তাই ভিসা প্রদানে কড়াকড়ি আরোপ করে ইতালি সরকার। এর ফলে দেশটিতে বড় সুযোগ থাকলেও কর্মী যাচ্ছেন কম।
টানা সাত বছর বন্ধ থাকার পর কর্মী নিয়োগ নিয়ে ২০২০ সালে দুই দেশের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর ২০২১ সাল থেকে দেশটিতে আবার কর্মী পাঠানো শুরু হয়। বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২১ সালে ইতালি যান ৬৫৩ জন। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৭ হাজার ৫৯৪ জন, পরের বছর যান ১৬ হাজার ৮৭৯ জন। আর ২০২৪ সালে যান মাত্র ১ হাজার ১৬৪ জন। এ বছরের প্রথম চার মাসে গেছেন ১ হাজার ২৪৬ জন।
ইতালিতে এসে ৮০ শতাংশ কর্মী বৈধ হন না। ভাষা জানেন না, কাজ জানেন না। যাঁরা ইতালির ভাষা শেখেন, তাঁরা সহজেই ভিসা পাচ্ছেন। তাই দক্ষতা ও ভাষা শেখার প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী পাঠাতে হবে। শাহ মো.তাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক, প্রবাসী উন্নয়ন সমিতি
সংশ্লিষ্টরা বলেন, কাজের নিয়োগপত্র এলেও ভিসা দিতে যাচাই–বাছাইয়ে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে ঢাকায় ইতালি দূতাবাস। এতে এক বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে কোনো কোনো কর্মীকে। আবার দীর্ঘদিন পাসপোর্ট আটকে থাকায় কর্মীরা গত বছর ক্ষোভ প্রকাশ করার পর অনেকের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপত্র যাচাই–বাছাই শেষে আবার পাসপোর্ট জমা নেওয়া হবে। বৈধ পথে ইতালি যাওয়ার সুযোগ ব্যাহত হলে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধ পথে ইতালি প্রবেশের প্রবণতা বাড়তে পারে।
বরিশালের শাহজাদা (ছদ্মনাম) প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ইতালিতে অবকাঠামো নির্মাণশ্রমিক হিসেবে নিয়োগপত্র পান। এরপর জুলাইয়ে তিনি ভিসার জন্য ইতালি দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দেন। ছয় মাস পর ডিসেম্বরে ভিসা ছাড়া পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি দূতাবাসের মেইল পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তাঁর মতোই গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি নিয়োগপত্র পেয়ে ভিসার অপেক্ষায় আছেন আরেকজন।
ইতালিতে কর্মী পাঠানোর সঙ্গে যুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বলছে, বিদেশের শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক। এর বাইরে এশিয়ার তিনটি দেশে কর্মী যায়। নানা জটিলতায় এসব দেশে কর্মী পাঠানো ব্যাহত হচ্ছে। অথচ ইউরোপে কয়েক লাখ কর্মী পাঠানোর সুযোগ আছে। মজুরি বেশি থাকায় ইউরোপের দেশগুলো থেকে প্রবাসী আয়ও আসবে বেশি। কিন্তু এ সুযোগের অবহেলা করছে বাংলাদেশের প্রতিটি সরকার। দুই দেশের সরকারের মধ্যে ইতালির ভিসার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিত। যাতে দ্রুততম সময়ে ভিসার আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়।
রিক্রুটিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ফর ইউরোপ অ্যান্ড ডেভেলপড কান্ট্রিজের সভাপতি আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ইতালির ভিসা জটিলতা নিয়ে আলোচনা করতে পারে সরকার। ইউরোপের সব দেশে কর্মী পাঠানো নিয়ে একটি পথনকশা তৈরি করা উচিত। এর ভিত্তিতে ভাষা ও কারিগরি জ্ঞানের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী তৈরি করা হবে। তারপর দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের মাধ্যমে ভালো নিয়োগকর্তা খুঁজে কর্মী পাঠানো যেতে পারে।
দক্ষতা ও ভাষা শিক্ষা জরুরিইতালিপ্রবাসীদের সেবায় ১৯৯২ সালে গঠিত হয় ইতালবাংলা সমন্বয় ও উন্নয়ন সমিতি। তারা বলছে, বিভিন্ন উপায়ে ইতালিতে বাংলাদেশিদের যাওয়া শুরু হয় আশির দশকে। ১৯৮৭ সালে প্রথম বৈধতা পান অবৈধ কর্মীরা। এরপর ইতালি সরকারের ঘোষণায় কয়েক দফায় কর্মীরা বৈধ হতে শুরু করেন। ২০০৩ সালে প্রথম বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করে ইতালি। এতে দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মী বাড়তে শুরু করে। ২০১৫ সালে মোট বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর আগে ২০১১ সালে কিছু অবৈধ কর্মীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায় ইতালি; কিন্তু দুই দেশের মধ্যে কোনো চুক্তি না থাকায় এটি সম্ভব হয়নি। ২০১২ সালে বাংলাদেশের কোটা–সুবিধা বাতিল করে ইতালি সরকার। পরের বছর থেকে কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। এতে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
ইতালবাংলা সমিতি সূত্র বলছে, ২০২০ সালে ইতালির সঙ্গে অভিবাসনসংক্রান্ত একটি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ সরকার। ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বৈধ কাজের ভিসায় ইতালি গিয়েও পরে ৮০ শতাংশ কর্মী অবৈধ হয়ে যান। গত বছর থেকে ভিসায় কড়াকড়ি আরোপ করায় গত বছর এক লাখ কর্মী ইতালি যেতে ভিসা জটিলতায় পড়েন। ভিসা ছাড়াই পাসপোর্ট ফেরতও পাচ্ছেন কোনো কোনো কর্মী। সম্প্রতি তারা সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাকরাইল এলাকায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতালিতে অন্য কোনো ভাষা ব্যবহার হয় না। তাই ইতালির ভাষা না শিখে দেশটিতে গেলে কাজ করা কঠিন। আবার ন্যূনতম কারিগরি দক্ষতা ছাড়াই কর্মীরা টাকার বিনিময়ে দেশটিতে যেতে চুক্তিবদ্ধ হন। একজন বিদেশি শ্রমিক যে দেশে কাজের অনুমতি পান, সে দেশেই তাকে কাজ করতে হয় অন্তত ৫ বছর। এরপর আবাসিক অনুমতি পেলে অন্য দেশে গিয়ে কাজ করতে পারেন। এর আগে অন্য দেশে গেলে তিনি অবৈধ কর্মী হয়ে যান।
ইতালির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইবাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে মাইগ্রেশন ও মোবিলিটি বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে গত ৬ মে ঢাকায়। ওই অনুষ্ঠানে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, সিজনাল ও নন–সিজনাল দুই ভাবে কর্মী নেবে ইতালি। একটি যৌথ কারিগরি কমিটি করার পরিকল্পনা আছে। তারা বছরে একবার বৈঠক করবে। কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ইতালির ভাষা শেখার প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, বৈধ পথে অভিবাসন বৃদ্ধি করতেই এই উদ্যোগ। যারা ইতালি গমনেচ্ছু তারা যেন নিরাপদে যেতে পারেন, ভালো পারিশ্রমিক পান; সেটিই লক্ষ্য। এ ছাড়া ইতালির দূতাবাসে থাকা ভিসা আবেদনগুলো যাতে দ্রুত কার্যকর হয় তা নিয়েও ইতালির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
অবৈধভাবে ইউরোপ যাত্রা ঠেকাতে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাদের অর্থায়নে ৩০ লাখ ইউরোর ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় গত ডিসেম্বরে। ইউরোপের শ্রমবাজারে বৈধ পথে দক্ষ কর্মী সরবরাহ করতে এ প্রকল্পটি কাজ করছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিএমইটি তিন বছরে (২০২৪-২৭) সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করতে কাজ করবে ইইউ-বাংলাদেশ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ।
ইতালিপ্রবাসীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেন বাংলাদেশের প্রবাসী উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক শাহ মো. তাইফুর রহমান। তিনি বলেন, ইতালি এসে ৮০ শতাংশ কর্মী বৈধ হয় না। ভাষা জানে না, কাজ জানে না। এগুলো বন্ধ করতে হবে। যাঁরা ইতালির ভাষা শেখেন, তাঁরা এখনো সহজেই ভিসা পাচ্ছেন। তাই দক্ষতা ও ভাষা শেখার প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী পাঠাতে হবে। ইউরোপে গিয়ে নাগরিকেরা যাতে অবৈধ না হন, সেই দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারকে নিতে হবে। সেভাবে কর্মী তৈরি করতে হবে। না হলে নতুন করে সমঝোতা স্মারক সই করেও কোনো লাভ হবে না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন য় গপত র শ রমব জ র ইউর প র গত বছর ব ধ পথ কর ম র প রব স দ শট ত ক জ কর বছর র সরক র ত বছর প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে মাদ্রাসায় দফায় দফায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন
রাজশাহীতে একটি মাদ্রাসায় দফায় দফায় এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদ্রাসার একটি কক্ষে জুহায়ের তাজিম (১৬) নামে ওই কিশোর শিক্ষার্থীকে পর পর দুই দিন কয়েক দফায় বেধড়ক পেটানো হয়। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জুহায়ের তাজিম রাজশাহী মহানগরের কয়েরদাঁড়া খ্রিস্টানপাড়া মোড় এলাকার মাইনজ ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের হিফজ মাদ্রাসা শাখার শিক্ষার্থী। মাদ্রাসার স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমানের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত শিক্ষার্থী তাজিম জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌর সদরের মুগনি শাহের ছেলে।
আরো পড়ুন:
নবীনদের বরণ করে নিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপসহ অক্সফোর্ডে পিএইচডির সুযোগ জাবি ছাত্রীর
এ ঘটনায় তাজিমের মা জাকিয়া সুলতানা রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মাদ্রাসার পরিচালক আইরিস পারভীন এবং স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে এজাহার দায়ের করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘‘গত ১৩ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলেকে নির্মমভাবে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। তিনি আমার ছেলের দুই হাত এবং দুই পায়ের উরু ও নিতম্বে বেত, পর্দার পাইপ ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এর ফলে আমার ছেলে মারাত্মকভাবে শারীরিক এবং মানসিক ক্ষতির শিকার হয়েছে।
‘‘এই ঘটনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আইরিশ পারভীনকে জানানো হয়। তবে তিনি পদক্ষেপ নেননি। বরং তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান শুধু আমার ছেলেকেই নয়, মাদ্রাসার আরো অনেক শিক্ষার্থীকে প্রতিনিয়ত শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করে চলেছেন।’’ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইশতিয়াক, ইসমাইল এবং আবু সাঈদসহ অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্যাতিত শিক্ষার্থী তাজিমকে নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ‘‘স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমান আমার বিরুদ্ধে একটি নোংরা অভিযোগ আনেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে শ্রেণিকক্ষ থেকে তিনি আমাকে ডেকে নেন। এরপর একটি ছোট নির্জন কক্ষে নিয়ে যান। বেত, পর্দার পাইপ এবং লাঠি দিয়ে আমাকে বেধড়ক পেটান। পরের দিনও তিনি আমাকে একইভাবে মারধর করেছেন। কক্ষটি মাদ্রাসার টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত। এখানেই অন্য শিক্ষার্থীদেরও প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মসানসিকভাবে নির্যাতন করেন স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর।’’
তাজিমের মা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘১৪ সেপ্টেম্বর আমরা বার বার ফোন দিলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ফোন ধরেনি। পরের দিন সন্ধ্যায় আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে গোপনে চলে আসে। এ সময় তাকে আসতে বাধা দেন পরিচালক আইরিস পারভীন এবং স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ। পরে একরকম জোর করে আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে আসে। ছেলে শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা। খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কম কথা বলছে। তাকে নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় পড়েছি। তার ওপর যারা নির্যাতন চালিয়েছেন, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় জোর দাবি জানাচ্ছি।’’
নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ রহমানকে ফোন দেওয়া হয়। না ধরলে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা এবং থানার এজাহার দায়েরের বিষয়টি জানিয়ে মেসেজ দিলে তিনি সাড়া দেন। তিনি লেখেন, ‘‘অভিযোগ কবে, কে করেছে, একটু বিস্তারিত বলবেন প্লিজ।’’ এরপর তিনি আর কোনো উত্তর দেননি। ফোন দেওয়া হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে অভিযোগ সম্পর্কে তার পরিপূর্ণ বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কিশোর তাজিমকে নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আইরিস পারভীন বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুঃখজনক। আমার বাবা-মা অসুস্থ থাকার কারণে আমি বাসায় ছিলাম। এ সময় স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ইমতিয়াজ শিক্ষার্থী তাজিমকে মারধর করেছেন। এর আগেও তিনি শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করেছেন। তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আমার কথা না মেনে আবারও নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ইমতিয়াজকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছি। আমি অনুততপ্ত এবং লজ্জিত। যেসব শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের পরিবারের কাছে আমি ক্ষমা চেয়েছি।’’
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/কেয়া/বকুল