ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারের নাম ইতালি; কিন্তু ভাষা ও কারিগরি জ্ঞান ছাড়া দেশটিতে গিয়ে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারছে না অনেকে। ভুয়া নিয়োগপত্রের অভিযোগও আছে। তাই ভিসা প্রদানে কড়াকড়ি আরোপ করে ইতালি সরকার। এর ফলে দেশটিতে বড় সুযোগ থাকলেও কর্মী যাচ্ছেন কম।

টানা সাত বছর বন্ধ থাকার পর কর্মী নিয়োগ নিয়ে ২০২০ সালে দুই দেশের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর ২০২১ সাল থেকে দেশটিতে আবার কর্মী পাঠানো শুরু হয়। বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২১ সালে ইতালি যান ৬৫৩ জন। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৭ হাজার ৫৯৪ জন, পরের বছর যান ১৬ হাজার ৮৭৯ জন। আর ২০২৪ সালে যান মাত্র ১ হাজার ১৬৪ জন। এ বছরের প্রথম চার মাসে গেছেন ১ হাজার ২৪৬ জন।

ইতালিতে এসে ৮০ শতাংশ কর্মী বৈধ হন না। ভাষা জানেন না, কাজ জানেন না। যাঁরা ইতালির ভাষা শেখেন, তাঁরা সহজেই ভিসা পাচ্ছেন। তাই দক্ষতা ও ভাষা শেখার প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী পাঠাতে হবে। শাহ মো.

তাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক, প্রবাসী উন্নয়ন সমিতি

সংশ্লিষ্টরা বলেন, কাজের নিয়োগপত্র এলেও ভিসা দিতে যাচাই–বাছাইয়ে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে ঢাকায় ইতালি দূতাবাস। এতে এক বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে কোনো কোনো কর্মীকে। আবার দীর্ঘদিন পাসপোর্ট আটকে থাকায় কর্মীরা গত বছর ক্ষোভ প্রকাশ করার পর অনেকের পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপত্র যাচাই–বাছাই শেষে আবার পাসপোর্ট জমা নেওয়া হবে। বৈধ পথে ইতালি যাওয়ার সুযোগ ব্যাহত হলে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধ পথে ইতালি প্রবেশের প্রবণতা বাড়তে পারে।

বরিশালের শাহজাদা (ছদ্মনাম) প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ইতালিতে অবকাঠামো নির্মাণশ্রমিক হিসেবে নিয়োগপত্র পান। এরপর জুলাইয়ে তিনি ভিসার জন্য ইতালি দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দেন। ছয় মাস পর ডিসেম্বরে ভিসা ছাড়া পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি দূতাবাসের মেইল পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তাঁর মতোই গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি নিয়োগপত্র পেয়ে ভিসার অপেক্ষায় আছেন আরেকজন।

ইতালিতে কর্মী পাঠানোর সঙ্গে যুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বলছে, বিদেশের শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক। এর বাইরে এশিয়ার তিনটি দেশে কর্মী যায়। নানা জটিলতায় এসব দেশে কর্মী পাঠানো ব্যাহত হচ্ছে। অথচ ইউরোপে কয়েক লাখ কর্মী পাঠানোর সুযোগ আছে। মজুরি বেশি থাকায় ইউরোপের দেশগুলো থেকে প্রবাসী আয়ও আসবে বেশি। কিন্তু এ সুযোগের অবহেলা করছে বাংলাদেশের প্রতিটি সরকার। দুই দেশের সরকারের মধ্যে ইতালির ভিসার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিত। যাতে দ্রুততম সময়ে ভিসার আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়।

রিক্রুটিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ফর ইউরোপ অ্যান্ড ডেভেলপড কান্ট্রিজের সভাপতি আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ইতালির ভিসা জটিলতা নিয়ে আলোচনা করতে পারে সরকার। ইউরোপের সব দেশে কর্মী পাঠানো নিয়ে একটি পথনকশা তৈরি করা উচিত। এর ভিত্তিতে ভাষা ও কারিগরি জ্ঞানের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী তৈরি করা হবে। তারপর দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের মাধ্যমে ভালো নিয়োগকর্তা খুঁজে কর্মী পাঠানো যেতে পারে।

দক্ষতা ও ভাষা শিক্ষা জরুরি

ইতালিপ্রবাসীদের সেবায় ১৯৯২ সালে গঠিত হয় ইতালবাংলা সমন্বয় ও উন্নয়ন সমিতি। তারা বলছে, বিভিন্ন উপায়ে ইতালিতে বাংলাদেশিদের যাওয়া শুরু হয় আশির দশকে। ১৯৮৭ সালে প্রথম বৈধতা পান অবৈধ কর্মীরা। এরপর ইতালি সরকারের ঘোষণায় কয়েক দফায় কর্মীরা বৈধ হতে শুরু করেন। ২০০৩ সালে প্রথম বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করে ইতালি। এতে দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মী বাড়তে শুরু করে। ২০১৫ সালে মোট বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর আগে ২০১১ সালে কিছু অবৈধ কর্মীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায় ইতালি; কিন্তু দুই দেশের মধ্যে কোনো চুক্তি না থাকায় এটি সম্ভব হয়নি। ২০১২ সালে বাংলাদেশের কোটা–সুবিধা বাতিল করে ইতালি সরকার। পরের বছর থেকে কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। এতে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

ইতালবাংলা সমিতি সূত্র বলছে, ২০২০ সালে ইতালির সঙ্গে অভিবাসনসংক্রান্ত একটি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ সরকার। ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বৈধ কাজের ভিসায় ইতালি গিয়েও পরে ৮০ শতাংশ কর্মী অবৈধ হয়ে যান। গত বছর থেকে ভিসায় কড়াকড়ি আরোপ করায় গত বছর এক লাখ কর্মী ইতালি যেতে ভিসা জটিলতায় পড়েন। ভিসা ছাড়াই পাসপোর্ট ফেরতও পাচ্ছেন কোনো কোনো কর্মী। সম্প্রতি তারা সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাকরাইল এলাকায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতালিতে অন্য কোনো ভাষা ব্যবহার হয় না। তাই ইতালির ভাষা না শিখে দেশটিতে গেলে কাজ করা কঠিন। আবার ন্যূনতম কারিগরি দক্ষতা ছাড়াই কর্মীরা টাকার বিনিময়ে দেশটিতে যেতে চুক্তিবদ্ধ হন। একজন বিদেশি শ্রমিক যে দেশে কাজের অনুমতি পান, সে দেশেই তাকে কাজ করতে হয় অন্তত ৫ বছর। এরপর আবাসিক অনুমতি পেলে অন্য দেশে গিয়ে কাজ করতে পারেন। এর আগে অন্য দেশে গেলে তিনি অবৈধ কর্মী হয়ে যান।

ইতালির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই

বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে মাইগ্রেশন ও মোবিলিটি বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে গত ৬ মে ঢাকায়। ওই অনুষ্ঠানে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, সিজনাল ও নন–সিজনাল দুই ভাবে কর্মী নেবে ইতালি। একটি যৌথ কারিগরি কমিটি করার পরিকল্পনা আছে। তারা বছরে একবার বৈঠক করবে। কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ইতালির ভাষা শেখার প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, বৈধ পথে অভিবাসন বৃদ্ধি করতেই এই উদ্যোগ। যারা ইতালি গমনেচ্ছু তারা যেন নিরাপদে যেতে পারেন, ভালো পারিশ্রমিক পান; সেটিই লক্ষ্য। এ ছাড়া ইতালির দূতাবাসে থাকা ভিসা আবেদনগুলো যাতে দ্রুত কার্যকর হয় তা নিয়েও ইতালির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

অবৈধভাবে ইউরোপ যাত্রা ঠেকাতে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাদের অর্থায়নে ৩০ লাখ ইউরোর ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় গত ডিসেম্বরে। ইউরোপের শ্রমবাজারে বৈধ পথে দক্ষ কর্মী সরবরাহ করতে এ প্রকল্পটি কাজ করছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিএমইটি তিন বছরে (২০২৪-২৭) সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করতে কাজ করবে ইইউ-বাংলাদেশ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ।

ইতালিপ্রবাসীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেন বাংলাদেশের প্রবাসী উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক শাহ মো. তাইফুর রহমান। তিনি বলেন, ইতালি এসে ৮০ শতাংশ কর্মী বৈধ হয় না। ভাষা জানে না, কাজ জানে না। এগুলো বন্ধ করতে হবে। যাঁরা ইতালির ভাষা শেখেন, তাঁরা এখনো সহজেই ভিসা পাচ্ছেন। তাই দক্ষতা ও ভাষা শেখার প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী পাঠাতে হবে। ইউরোপে গিয়ে নাগরিকেরা যাতে অবৈধ না হন, সেই দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারকে নিতে হবে। সেভাবে কর্মী তৈরি করতে হবে। না হলে নতুন করে সমঝোতা স্মারক সই করেও কোনো লাভ হবে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন য় গপত র শ রমব জ র ইউর প র গত বছর ব ধ পথ কর ম র প রব স দ শট ত ক জ কর বছর র সরক র ত বছর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েটে ‘ভালো কিছু হতে যাচ্ছে’, তবে আজও ক্লাসে যাননি শিক্ষকেরা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) অচলাবস্থা কাটেনি। শিক্ষক লাঞ্ছনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতিতে অনড় শিক্ষকেরা। আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো তাঁরা কর্মবিরতিতে থাকায় কোনো ক্লাস হয়নি।

অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করছে, শিগগিরই অচলাবস্থার নিরসন হবে। শিক্ষক সমিতির নেতাদের কণ্ঠেও একই রকম আশার সুর শোনা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ৬ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক সমিতির দাবির সঙ্গে সংগতি রেখে প্রশাসন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর শিক্ষক সমিতি প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে শুরু করেছে। মূলত এখন থেকে অচলাবস্থা নিরসনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত, তবে ক্লাস হচ্ছে না। শিক্ষার্থী বা শিক্ষকদের কোনো মুভমেন্ট নেই। উভয় পক্ষ চুপচাপ। মনে হয়, ভালো কোনো কিছু হতে যাচ্ছে।

১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা দেখা দেয়। একপর্যায়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ১ মে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) অধ্যাপক হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সিন্ডিকেট সভায় গত রোববার থেকে আবার শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও শিক্ষকদের অনীহার কারণে তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এসব কারণে আড়াই মাসের বেশি সময় কুয়েটে ক্লাস বন্ধ রয়েছে।

গত ৫ মে সাধারণ সভা শেষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং শিক্ষকদের লাঞ্ছনাকারীদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে চিহ্নিত করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান। এ ছাড়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সাইবার বুলিং, সামাজিক অবমাননা ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া; সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুয়েট নিয়ে অপপ্রচারে যুক্ত পেজ, গ্রুপ ও ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বন্ধসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।

ওই সাধারণ সভার পর শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পর কিছু শিক্ষার্থী ১০–১৫ জন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ক্লাস ও পরীক্ষা নেবেন না।

১৫ মে শিক্ষকদের দেওয়া সেই সাত কর্মদিবসের সময়সীমা শেষ হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অধ্যাপক ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা সাত কর্মদিবসের কথা বলেছিলাম। তবে আশা করছি, এর আগেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি নবনিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় সিন্ডিকেট সভা করেছেন। আশা করি, খুব দ্রুতই আমরা সমাধানের দিকে যাব।’

ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক হযরত আলী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। তিনি শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয় পক্ষকে নমনীয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে শুরুতে ফল আসেনি। ৬ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভার পর থেকে শিক্ষক সমিতি প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে শুরু করেছে। জানা গেছে, ওই সভায় শিক্ষক সমিতির দাবির সঙ্গে সংগতি রেখে প্রশাসন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অবশ্য সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিন্ডিকেট সদস্য আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, সভায় সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই সহিংসতার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শৃঙ্খলা কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা আবারও শাস্তি পেতে যাচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে সিন্ডিকেটের ওই সদস্য বলেন, আগে সিন্ডিকেটের এক সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সিন্ডিকেটের আরেক সভায় ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারও করা হয়। শাস্তি পাওয়া না পাওয়ার বিষয়টি এখন শৃঙ্খলা কমিটি দেখবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বারবার ডিন স্যার, বিভাগীয় প্রধান স্যারসহ অন্য স্যারদের কাছে যাচ্ছি। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশে অনিচ্ছাকৃত যেকোনো ভুলের জন্য আমরা ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা চাচ্ছি, বিচারপ্রক্রিয়া চলতে থাকুক, পাশাপাশি ক্লাসটাও চলুক।’

ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ভিসি মহোদয় সিন্ডিকেট সভা করেছেন। সিন্ডিকেটে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সেই সিদ্ধান্ত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাতে খাবার তুলে দিতে না পেরে মাকে কত দিন কাঁদতে দেখেছি, তাঁর কারণেই আজ আমি চিকিৎসক
  • ভারতে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও জয় পেল না বাংলাদেশ
  • ভারতে ইউটিউবে ৪ বাংলাদেশি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ
  • বাবাকে হত্যায় আদালতে মেয়ের দায় স্বীকার
  • দেশে ফেরার পথে ভারতে গ্রেপ্তার ১৬ বাংলাদেশি
  • আন্দোলনে অংশ না নিয়েও জুলাইযোদ্ধা তালিকায় নাম, প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম
  • চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে পুরোনো সাদাকালো ছবি রঙিন করবেন যেভাবে
  • উড়ল সাদা ধোঁয়া, ১৪০ কোটি খ্রিস্টান পেল নতুন পোপ
  • কুয়েটে ‘ভালো কিছু হতে যাচ্ছে’, তবে আজও ক্লাসে যাননি শিক্ষকেরা