যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নির্মিত সব চলচ্চিত্রের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্কারোপের নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সপ্তাহেই ট্রাম্প নতুন এই শুল্কারোপের নির্দেশ দেওয়ার কথা জানান। ট্রাম্পের দাবি, মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্টুডিওগুলোর বিদেশে চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রবণতায় হলিউড ‘ধ্বংস’ হয়ে যাচ্ছে। তাই তিনি বিদেশে নির্মিত সব চলচ্চিত্রের ওপর শতভাগ শুল্কারোপের নির্দেশ দিচ্ছেন। এর পর থেকেই সিদ্ধান্তটি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। নতুন সিনেমার প্রচারে গিয়ে ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন হলিউড তারকা টম ক্রুজ। তবে উত্তর না দিয়ে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গেলেন ৬২ বছর বয়সী তারকা। খবর ভ্যারাইটির
‘মিশন: ইমপসিবল-দ্য ফাইনাল রেকনিং’ সিনেমার প্রচারে গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে গিয়েছিলেন টম ক্রুজ। সঙ্গে ছিলেন সিনেমার অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা। সিওলে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বিদেশি নির্মিত চলচ্চিত্রে শুল্ক আরোপ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে দেন হলিউড তারকা টম ক্রুজ।
সিওলে সংবাদ সম্মেলনে সিনেমার টিম। এএফপি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কিন জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রশ্নে মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার সীমিত করে দেওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা, এ বিষয়ে শুনানি হবে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্ট এখনো শুনানির দিন ঠিক করেনি। রায় পেতে কয়েক মাস সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মামলার রায় ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি এবং কে মার্কিন নাগরিক, এই মৌলিক প্রশ্নে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। খবর বিবিসির।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই অবৈধ অভিবাসী বা অস্থায়ী ভিসাধারী অভিভাবকদের সন্তানদের জন্মগত নাগরিকত্ব বন্ধে নির্বাহী আদেশে সই করেছিলেন। তবে নিম্ন আদালত আদেশটি আটকে দিলে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর প্রথম বাক্যেই 'জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের' নীতির বিষয়টি বলা হয়েছে।
অভিবাসন কট্টরপন্থিরা অনেক সময় বলে থাকেন, এই নীতিই অবৈধ অভিবাসনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং এটিই গর্ভবতী নারীদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করে।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যারা স্থায়ী বা বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে নেই, তাদের সন্তান নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য নন। এটি তাদের বৃহত্তর অভিবাসন সংস্কার ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের অংশ বলেও জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) বলেছে, কোনো প্রেসিডেন্টই ১৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে দেওয়া জন্মগত নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি বদলাতে পারেন না।
প্রতিষ্ঠানের জাতীয় আইনি পরিচালক সিসিলিয়া ওয়াং বলেন, “১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্ম নিলেই জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়, এটাই আইন ও জাতীয় ঐতিহ্য।”
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ চ্যালেঞ্জ করা হলে কয়েকজন ফেডারেল বিচারক রায় দেন যে এটি সংবিধানবিরোধী। পাশাপাশি দুটি ফেডারেল সার্কিট কোর্ট আদেশটি কার্যকর হওয়া আটকে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে। পরে সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিল করে।
ট্রাম্প যখন এ বিষয়ে নির্বাহী আদেশে সই করেন তখনও বেশিরভাগ আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাহী আদেশে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব সুবিধার সমাপ্তি টানতে পারেন না।
সংবিধানের একটি সংশোধনীর মাধ্যমে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুবিধা বাতিল করা যায়, কিন্তু তার জন্যও দরকার হবে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোট এবং তিন চতুর্থাংশ রাজ্যকে সেটি অনুমোদন করতে হবে।
পিউ রিসার্চ অনুযায়ী ২০১৬ সালে অবৈধ অভিবাসী বাবা মায়ের মোট সন্তান জন্ম নিয়েছিলো আড়াই লাখ, যা ২০০৭ সালের চেয়ে ৩৬ শতাংশ কম ছিলো।
কিন্তু ২০২২ সালে এমন ১২ লাখ মার্কিন নাগরিকের জন্ম হয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের ঘরে।
এসব সন্তানদের সন্তানও হবে মার্কিন নাগরিক। ২০৫০ সাল নাগাদ অবৈধ অভিবাসীদের সন্তান সংখ্যা ৪৭ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে দ্যা মাইগ্রেশন পলিসি ইন্সটিটিউট নামের একটি সংস্থা।
ঢাকা/ইভা