আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে আর কোনো আপস করা হবে না বলে বললেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, সরকারকে অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে আসতে হবে। অন্যথায় গণ অধিকার পরিষদ যমুনা ঘেরাও করবে।

যেসব রাজনৈতিক দল ও সংগঠন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগসহ সারা দেশে কর্মসূচি পালন করছে, তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নুরুল হক এ কথা বলেন।

এ সময় গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার ব্যর্থ দাবি করে নুরুল হক অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনেরও দাবি জানান। ছাত্র প্রতিনিধিরা সরকারে থেকেও এত দিন কেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পদক্ষেপ নেননি, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

নুরুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে আবার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সংকট তৈরি হবে। বড় রাজনৈতিক দল সমঝোতার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে গেলেও বড় আঘাতটা আসবে বিপ্লবীদের ওপর।

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু আগামী নির্বাচন নয়, কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করতে পারবে না। জাতীয় সংলাপ আহ্বান করে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

এরপর প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিতে গণ অধিকার পরিষদের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল তাঁর বাসভবন যমুনায় যায়। প্রতিনিধিদলে ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম ও আবদুজ জাহের এবং যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন। প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব সাব্বির আহমেদ তাঁদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন বলে জানান আবু হানিফ।

স্মারকলিপিতে ফ্যাসিস্ট দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার, আহতদের পুনর্বাসন, শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, শহীদ ও আহতদের প্রকৃত তালিকা প্রণয়নের অগ্রগতি জানানো এবং হত্যা মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার প্রসঙ্গ আনা হয় বলে গণ অধিকার পরিষদ জানায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল হক আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সবজির দাম কমতির দিকে, আটার দাম কেজিতে বাড়ল ৫ টাকা

বাজারে বেড়েছে আটার দাম। খুচরা পর্যায়ে কেজিতে আটার দাম ৫ টাকা বেড়েছে। কমেছে খোলা চিনি ও কিছু সবজির দাম। আর খুচরা দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বিক্রেতারা জানান, খোলা ও মোড়কজাত (প্যাকেট) উভয় ধরনের আটার দামই বেড়েছে। ঢাকার বিভিন্ন খুচরা দোকান থেকে দুই সপ্তাহ আগে মোড়কজাত আটা (দুই কেজি) কেনা যেত ১০৫-১১০ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। আর খোলা আটার কেজি ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে।

এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে আটার দাম এক দফা বেড়েছিল। তখন দুই কেজির মোড়কজাত আটা ৯০-৯৫ থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছিল। খোলা আটার দাম বেড়ে হয়েছিল ৪৫-৪৮ টাকা। মাঝে আটার দামে ২-৩ টাকা ওঠানামা হয়।

চালের বাজারে দরদামে কিছুটা পরিবর্তন আছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে মঞ্জুর, সাগর, ডায়মন্ড ও আনোয়ার—এই চার ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক-দেড় টাকা বেড়েছে। তবে খুচরা বিক্রেতারা আগের দামেই অর্থাৎ ৮০-৮২ টাকা কেজি এসব চাল বিক্রি করছেন। এ ছাড়া নাজির, পাইজাম প্রভৃতি চালের দাম আগের মতো রয়েছে।

ব্রয়লার, সোনালি মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। গতকাল ঢাকার বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম ১৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর সাদা ডিমের দাম ডজনে এর চেয়ে ৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি। তবে ডিলার পর্যায়ে দাম কিছুটা বেড়েছে। এতে বিক্রেতাদের কমিশনের পরিমাণ কমেছে। সপ্তাহ দুই আগে খুচরা বিক্রেতারা ডিলারের কাছ থেকে ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল কিনতেন ৮৯০-৮৯৫ টাকায়; বিক্রি করতেন ৯১৫-৯২০ টাকায়। এখন সেটি ৯০০-৯১০ টাকায় কিনে আগের দামে বিক্রি করছেন।

বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহও কিছুটা কম রয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো অথবা ডিলাররা বাজারে কম পরিমাণে তেল সরবরাহ করছেন। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা মুদি বিক্রেতা হুমায়ুন কবীর জানালেন, গত মঙ্গলবার ডিলারের কাছে ৫ লিটারের ৫ কার্টন তেল চেয়েছিলেন। বুধবার ডিলার মাত্র ২ কার্টন তেল দিয়ে গেছে।

শীতে সাধারণত চায়ের চাহিদা বেড়ে যায়। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শীত আসার আগেই বেড়েছে চা–পাতার দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে (প্যাকেটজাত) চা–পাতার দাম কেজিতে ১০০ টাকার মতো বেড়েছে। বর্তমানে চা–পাতা বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা কেজি। অবশ্য বাজারে দাম কমেছে চিনির। ১৫ দিন আগে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গতকাল তা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে আটার দাম এক দফা বেড়েছিল। তখন দুই কেজির মোড়কজাত আটা ৯০-৯৫ থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছিল। খোলা আটার দাম বেড়ে হয়েছিল ৪৫-৪৮ টাকা। মাঝে আটার দামে ২-৩ টাকা ওঠানামা হয়।

এ ছাড়া ব্রয়লার, সোনালি মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। গতকাল ঢাকার বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম ১৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর সাদা ডিমের দাম ডজনে এর চেয়ে ৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাজারে শীতের আগাম কিছু সবজি আসতে শুরু করেছে। এতে কিছু সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এখন ১০০ টাকা কেজির নিচে বেশির ভাগ সবজি কেনা যাচ্ছে। গতকাল প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১৪০ টাকায় ও টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া করলা, কাঁকরোল, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, পটোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল প্রভৃতি সবজির দাম রাখা হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এক-দুই সপ্তাহ আগে এসব সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেশি ছিল।

বর্তমানে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লালশাকের মতো শীত মৌসুমের কিছু আগাম শাকসবজি বাজারে এসেছে। যদিও এসব সবজির দাম তুলনামূলক বেশি। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুই-তিন মাস ধরে চড়া দামে সবজি কিনছি। এখন সবজির দাম কিছুটা কমা শুরু হয়েছে। কিন্তু এর আগেই বেড়ে গেছে আটা ও মিনিকেট চালের দাম। বাড়তি খরচ থেকে আমাদের মুক্তি নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ