মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং প্রথমবারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ‘আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিয়ানমারের অবস্থানকে সমর্থন করায়’ চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অং হ্লাইং। সি মিয়ানমারের প্রতি চীনের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

আজ শনিবার জান্তা নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার ও চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে এসব কথা বলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার বিজয় দিবস উদ্‌যাপনের এক ফাঁকে তাঁরা বৈঠক করেন।

দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে অং হ্লাইং গত মার্চ মাসে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর চীনের মানবিক সহায়তার জন্য সি চিন পিংকে ধন্যবাদ জানান। ‘আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিয়ানমারের অবস্থানকে সমর্থন করার জন্য’ তিনি চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সি আশা করেন, মিয়ানমার চীনা নাগরিক, প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং সীমান্তবর্তী অপরাধ দমনে আরও জোরালো উদ্যোগ নেবে।

২০২১ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জেনারেল মিন অং হ্লাইং মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশটির গণতন্ত্রমুখী যাত্রা অকালে বন্ধ হয়ে যায়, জড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধে।

চীন সরকার মিয়ানমারের জান্তা ও বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। চীনের পর রাশিয়াই পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা জর্জরিত মিয়ানমারের বড় মিত্র।

ক্ষমতা গ্রহণের পর অং হ্লাইং এর সঙ্গে এবারই প্রথম বৈঠক করলেন সি। এর আগে তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হংকংয়ে বহুতল ভবনে আগুনে মৃত্যু বেড়ে ৩৬, নিখোঁজ ২৭৯

হংকংয়ের একটি বহুতল ভবন কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না ২৭৯ জনের। আগুনে দগ্ধ হয়েছেন অনেকে। বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে শহরের তাই পো এলাকায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে রাতে হতাহতের খবর জানান শহরের প্রধান নির্বাহী জন লি।

বুধবার রাতেও কমপ্লেক্সের ৩২ তলা ভবনগুলোয় আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছিল। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগুনের তীব্র উত্তাপের কারণে ভবনগুলোর ওপরের দিকে যাওয়া যাচ্ছে না। রাতের অন্ধকার নেমে আসার কারণেও আগুন নেভাতে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। গতকাল রাত পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।

ওয়াং ফুক কোর্ট আবাসিক কমপ্লেক্সে মোট আটটি ভবন রয়েছে। ভবনগুলোয় মোট অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা ২ হাজার। এসব অ্যাপার্টমেন্টে ৪ হাজার ৬০০ জনের বেশি বাসিন্দা বাস করেন। আগুন লাগা ভবনের ভেতরে কতজন আটকা পড়েছেন, তা জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। তবে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে তারা।

আগুনে যখন আবাসিক কমপ্লেক্সটি জ্বলছিল, তখন অনেকেই পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন। তাঁদের অনেককে আহাজারি করতে দেখা যায়। এমনই একজন ৭১ বছর বয়সী ওং। তাঁর স্ত্রী আগুন লাগা ভবনগুলোর একটিতে আটকা পড়েছিলেন। হ্যারি চেউং নামের আরেকজন বলেন, ‘হয়তো আজ রাতে আর বাসায় ফিরতে পারব না। রাতে কোথায় থাকব আমি?’

আগুনের কারণে হংকংয়ে যান চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। শহরের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, সেখানকার প্রধান দুটি মহাসড়কের একটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। যানবাহনগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হয় অন্য দিকে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার শহরের অন্তত ছয়টি স্কুল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে শহরের শিক্ষা ব্যুরো।

আগুন লাগার পর বুধবার রাতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সরকারি দপ্তরগুলোকে আগুন নিয়ন্ত্রণের সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। হতাহতের ঘটনা যেন কম হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেন তিনি।

এর আগে ১৯৯৬ সালে হংকংয়ের কোউলুন এলাকায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুনে ৪১ জন নিহত হন। বুধবারের আগুন লাগার ঘটনার আগে এটিই ছিল শহরটির সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

সম্পর্কিত নিবন্ধ