দেশের শেয়ারবাজারকে কার্যকর ও বিনিয়োগকারীবান্ধব করতে বিদেশি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মাধ্যমে আগামী তিন মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ  ইউনূস। ভালো শেয়ারের জোগান বাড়াতে সরকারি কোম্পানির বাইরে সরকারের শেয়ার থাকা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
গতকাল রোববার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন প্রধান উপেদেষ্টা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.

আনিসুজ্জামান চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই ছিল প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে শেয়ারবাজার ইস্যুতে প্রথম সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠক।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারবাজারের চলমান অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এভাবে একটি দেশের শেয়ারবাজার চলতে পারে না। বিশেষ ‘সার্জারি’ ছাড়া শেয়ারবাজার ঠিক হবে না।  বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, সংস্কার কার্যক্রম ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরুর পরই বাজারের স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর পদত্যাগের বিষয়ে চাপ দিচ্ছে।
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,  লুটপাটের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে বেসামাল করে দেওয়ার পেছনে গত কয়েক দশক ধরে যারা জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় না আনতে পারলে মানুষের আস্থা ফিরবে না বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, শেয়ারবাজারের প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে এমন অবস্থায় ফেরাতে হবে যেন মানুষ আস্থা ফিরে পায়। শেয়ারবাজার যেন লুটেরাদের আড্ডাখানায় পরিণত না হয়।

গত সরকারের রেখে যাওয়া দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি গত ৯ মাসে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও শেয়ারবাজারে এর কোনো প্রতিফলন নেই। লাগাতার দর পতনে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়ছেন। এমন প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, দেশের বড় বড় বেসরকারি কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করতে হরে তারা কী ধরনের প্রণোদনা চায়, তা জেনে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। 

প্রেস সচিব বলেন, আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা পাঁচটি প্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বার্থের সংঘাত এড়াতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পুঁজিবাজার সংস্কারের কথা বলেছেন, যাতে তারা তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেন।  শেয়ারবাজারে দুর্নীতিতে ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। বড় বড় কোম্পানি ব্যাংক থেকে ঋণনির্ভরতা কমিয়ে যাতে পুঁজিবাজার এবং বন্ড বাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।

প্রেস সচিব জানান, শেয়ারবাজারে ভালো শেয়ারের জোগান বাড়ানোর জন্য অবিলম্বে সরকারি কোম্পানি এবং ইউনিলিভারসহ যেসব বহুজাতিক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার আছে, সেগুলোকে তালিকাভুক্ত করার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এর বাইরে মেঘনা গ্রুপ এবং সিটি গ্রুপের মতো দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর কোম্পানিকে প্রণোদনা দেওয়ার মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন।

প্রেস সচিব আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে গত ৯ মাসে বিএসইসি শেয়ারবাজার সংস্কারে কী কী সংস্কার করেছে এবং যে বিষয়ে উদ্যোগ চলমান আছে সে বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। 

জানা গেছে, সভার শুরুতে বিএসইসির চেয়ারম্যান তাঁর উপস্থাপনায় জানান, তাঁর নেওয়া বিভিন্ন  পদক্ষেপে শেয়ারবাজারের বড় বড় রাঘববোয়ালরা খেপেছেন। যাদের  নিয়ে কাজ করতে গেছেন, তাদের অনেকের শেয়ারবাজারে কোনো না কোনো স্বার্থ জড়িত। ফলে এখানে সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন।  সংস্কার কার্যক্রম ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরুর পরই বাজারের স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর পদত্যাগের বিষয়ে চাপ দিচ্ছে।

শেয়ারবাজারকে কার্যকর করতে ভালো কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারমুখী করতে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোম্পানির  কর হারের ব্যবধান ১০ শতাংশ উন্নীত করার প্রস্তাব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। এ ছাড়া সাধারণ মানুষকে শেয়ারবাজারে আকৃষ্ট করতে লভ্যাংশ আয়ে উৎসে কর কর্তনকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনার  প্রস্তাব করেন তিনি।
বিএসইসির চেয়ারম্যান জানান, শেয়ারবাজারে ভালো শেয়ারের সরবরাহ নাই বললেই বলে। এ ঘাটতি দূর করতে সরকারের ভালো কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সরাসরি তালিকাভুক্ত করা যেতে পারে। তবে ব্যাংক থেকে সহজে বড় অঙ্কের ঋণ ছাড় সুবিধা যতদিন বহাল থাকবে, ততদিন বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারমুখী করা যাবে না। বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পে বিনিয়োগ সহজ করতে একটি জাতীয় নীতিমালা তৈরি করা দরকার। ব্যাংকের ওপর চাপ কমিয়ে পুঁজিবাজারকে অর্থায়নের উৎস হিসেবে ব্যবহার করার জন্য এই নীতিমালা দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, আইডিআরএ ইত্যাদির মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের জন্য একটি জাতীয় সমন্বয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন তিনি। 

দেরিতে হলেও শেয়ারবাজার বিষয়ে সরকারের দায়িত্বশীল শীর্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করায় প্রধান উপদেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন। সমকালকে তিনি বলেন, গতকাল প্রধান উপদেষ্টা যে পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন, তা শেয়ারবাজারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর সবগুলোর বাস্তবায়ন দীর্ঘমেয়াদি। শেয়ারবাজারের চলমান সংকটাবস্থা নিরসনে বিনিয়োগকারী এবং শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা তাৎক্ষণিক বা স্বল্পমেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য পদক্ষেপ আশা করে। অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া শেয়ারবাজার সমস্যার সমাধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডিএসইর এই পরিচালক।



 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ত ল ক ভ ক ত কর শ য় রব জ র র সরক র র শ ব যবস থ বল ছ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

তামহার মালিকদের সম্পত্তি বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ, তদন্তের অনুরোধ

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের (ট্রেক নম্বর-০৮১) পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের নামে সম্পত্তি (গুলশানের বাড়ি) বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ এবং এ কাজে ওবায়দুর রহমান নামে এক ব্যক্তির যোগসাজস তদন্ত করে খতিয়ে দেখার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গুলশানের জমি বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ রোধ করতে বিএসইসির পক্ষ থেকে দুদককে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়ারিজ অ্যাফেয়ার্স ডিভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দুদকে পাঠানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

পুঁজিবাজার চাঙা করতে বাজেটে থাকছে একগুচ্ছ প্রণোদনা

পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার ৫ নির্দেশনা

দুদকে পাঠানো বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিনিয়োগকারীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মতিঝিল পুলিশ স্টেশনে একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করে। পরবর্তীতে, মতিঝিল পুলিশ স্টেশন ডায়েরি দুদকে প্রেরণ করে। এ প্রেক্ষিতে, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে একটি জি আর মামলা করে (মামলা নম্বর-৫৩/২০২৩)।

সম্প্রতি, তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা চলতি বছরের ২৭ মার্চ চিঠির মাধ্যমে কমিশনকে অবহিত করে, এই ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পরিচালনা পর্যদের সদস্যদের নামে সম্পত্তি (গুলশানের বাড়ি) বিক্রির অর্থ মালিকপক্ষ আত্মসাৎ করেছেন এবং এ অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে ওবায়দুর রহমান সহায়তা করেছেন।এর পরিপ্রেক্ষিতে এই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পাওনা ফেরতের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন, যা চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্যদের সদস্যরা উক্ত সম্পত্তি (গুলশানের বাড়ি) বিক্রয় করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ করবে বলে তাদের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তিপত্র কমিশনে দাখিল করা হয়েছে।এমতাবস্থায়, উপযুক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পাওনা ফেরতের নিমিত্ত এই ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পরিচালনা পর্যদের সদস্যদের নামে সম্পত্তি বিক্রির অর্থ মালিকপক্ষের আত্মসাৎ ও ওবায়দুর রহমান নামে এক ব্যক্তির সহায়তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তামহা সিকিউরিটিজের পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের নামে সম্পত্তি (লালমাটিয়ার জমি-বাড়িসহ অন্যান্য স্থাবর ও অস্থাবর) পুনরায় অবরুদ্ধ করতে দুদককে অনুরোধ করেছিল বিএসইসি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন কর্মকর্তা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছে বিএসইসি। তাই বিনিয়োগকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্তদের পাওনা ফেরত পেতে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্যদের সদস্যদের নামে সম্পত্তি বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ রোধ করা এবং এ কাজে সহযোগিতাকারীর বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে দেখার জন্য দুদককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

তামহা সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ
২০২১ সালে তামহা সিকিউরিটিজ অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে বিনিয়োগকারীর ৮৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ব্রোকারেজ হাউজটি দুইটি ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ করেছে।এর মধ্যে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মিথ্যা ও ভুয়া বিবরণী ও পোর্টফোলিও স্টেটমেন্ট প্রদান করা হতো। হাউজটিতে গ্রহকদের মোট ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকের সমন্বিত হিসাবে ঘাটতি ৯২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ও শেয়ারের বাজার মূল্যের ঘাটতি ৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকা।

ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর বিএসইসি ওই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে দেয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হারুনুর রশিদ ও তার সহযোগীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

এদিকে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের দায়ে পুঁজিবাজারে শেয়ার লেনদেন ও ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) স্থগিত হওয়া ব্রোকার হাউজ তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ব্রোকারেজ হাউজটির একটি সফটওয়্যারে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের প্রকৃত হিসাব রাখা হতো, যা সিডিবিএলের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। ব্যাক অফিস সফটওয়্যারটি সিডিবিএলের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল না। এ ব্যাক অফিস সফটওয়্যারটি বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলা
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন-তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ, পরিচালক জাহানারা পারভীন ও ড. শাহনাজ বেগম, চারজন অ্যাকাউন্টস এক্সিকিউটিভ ও অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ (আব্দুর রহমান তালাল, সাঈদ চৌধুরী, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান), অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. গোলাম রসুল, শেরাটন শাখার ইনচার্জ ও অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ এএম আলমগীর কবীর, শেরাটন শাখার ম্যানেজার ও অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. ওয়ারিছ উদ্দিন, অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. ফায়েজুর রহমান, সেটলমেন্ট অফিসার (সিডিবিএল অফিসার) ও অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. শাহরিয়ার কবীর, অ্যাকাউন্টস এক্সিকিউটিভ ও অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ জি এম আজাদ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের গাড়িচালক মো. মামুন হোসেন ও অফিস সহকারী মো. হাসান।

তামহা সিকিউরিটিজ ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) নিবন্ধিত হয়।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ: পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত
  • তামহার মালিকদের সম্পত্তি বিক্রির অর্থ আত্মসাৎ, তদন্তের অনুরোধ