চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন থেকে সরাসরি ট্রেন চালুর দাবি
Published: 14th, May 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে চারটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা শাখা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। দাবি আদায়ের আজ বুধবার শান্তিপূর্ণ ট্রেন অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সরাসরি সব আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া যমুনা নদীর রেল সেতুর নবনির্মিত ডাবল লাইন চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন পর্যন্ত স্থাপন, পুরোনো রেললাইন সংস্কার ও সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকীকরণসহ যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন আধুনিকায়ন করা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, আমনুরা ও রহনপুর রেলওয়ের দখল করা জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলমুক্ত করা। রহনপুর রেলস্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দর ঘোষণা করা। আমনুরা, নাচোল হয়ে রহনপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেনের সময় অনুযায়ী কানেক্টিং অথবা কমিউটার ট্রেন চালু করা। আমনুরা বাইপাস রেলস্টেশনে সব আন্তঃনগর ট্রেনের ৫ মিনিটের যাত্রাবিরতি দেওয়া। আমনুরা রেলওয়ে জংশনকে আধুনিক জংশনে পরিণত করা। ঢাকা থেকে নাটোর, রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত দুই ধারের প্রশস্ত সার্ভিস লেনসহ ছয় লেন আধুনিক মহাসড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তাসহ রহনপুর ও সোনামসজিদ স্থল ও রেল শুল্ক স্টেশনকে আধুনিকায়ন করতে হবে।
সুজনের জেলা সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন জুয়েলের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি খায়রুল ইসলাম, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শাহনেওয়াজ খান সিনহা, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসিদুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে ১ মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সংগঠনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়। একই দিন ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সমিতি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে একই দাবি জানায়। এ সংগঠনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রেল অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন বলেন, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী চারটি আন্তঃনগর ট্রেন ধূমকেতু, পদ্মা, সিল্কসিটি ও মধুমতি এক্সপ্রেস চলাচল করে। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ট্রেনগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত বর্ধিত করা হচ্ছে না। আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী একমাত্র ট্রেন হিসেবে চলাচল করে বনলতা এক্সপ্রেস। রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও আঞ্চলিক বৈষম্যমূলক মনোভাবের কারণে সে সুযোগ থেকেও বঞ্চিত চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ প ইনব বগঞ জ প ইনব বগঞ জ আমন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘বাইরের’ অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখলেন স্থানীয় চালকেরা, ধস্তাধস্তির মধ্যেই নবজাতকের মৃত্যু
শরীয়তপুরে একটি রোগী বহন করা অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা যাওয়ার পথে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন চালকের বিরুদ্ধে। এ কারণে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা এক নবজাতক মারা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি ক্লিনিকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া নবজাতক ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদার ও রুমা বেগম দম্পতির সন্তান। গতকাল দুপুরে শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পরই শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
শিশুর স্বজনেরা জানান, গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁরা ঢাকাগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রওনা হন। কিন্তু পথিমধ্যে চৌরঙ্গী মোড়ে স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্সচালক সবুজ দেওয়ান তাঁদের অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেন। স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার না করার কারণ দেখিয়ে তিনি চালককে মারধর করেন ও চাবি নিয়ে নেন। আরও কয়েকজন স্থানীয় চালক এ ঘটনায় অংশ নেন। দীর্ঘক্ষণ তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তির মধ্যে চিকিৎসা না পেয়ে নবজাতক মারা যায়।
শিশুটির নানি সেফালী বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। অল্প খরচে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করি। কিন্তু স্থানীয় আরেক চালক বাধা দেয়। তারা দাবি করে, বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে যেতে হবে। আমার নাতি চিকিৎসা পায়নি, মারা গেছে। সন্তান জন্মের পর আমার মেয়ে অচেতন হয়ে আছে। তার জ্ঞান ফিরলে কীভাবে খবরটি দেব?’
ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্সের চালক মোশারফ মিয়া বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে শরীয়তপুরে এসেছিলাম। ফেরার পথে হাসপাতালের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। শিশুর স্বজনেরা আমার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। রওনা হওয়ার পর সবুজ বাধা দেয়, আমাকে মারধর করে চাবি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়।’
ঘটনার পর সবুজ দেওয়ান ও তাঁর সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শরীয়তপুর অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও চালক সমিতির সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘চৌরঙ্গীতে অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেওয়ার কথা শুনে তাদের বলেছিলাম রোগীসহ ছেড়ে দিতে। কিন্তু তারা শোনেনি। এই কাজটি সঠিক হয়নি।’
শিশু বিশেষজ্ঞ খাজা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিকেলে যখন নবজাতককে দেখেছিলাম, তখনই বেশ কিছু সমস্যা ধরা পড়ে। ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপরাধ।’
জানতে চাইলে সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’