সাতক্ষীরায় হিমসাগর আম পাড়ার সময় পাঁচ দিন এগিয়ে আনা হয়েছে। কাল বৃহস্পতিবার থেকে এই আম পাড়া শুরু হবে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় আমচাষি ও উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ এ ঘোষণা দেন।

সভা শেষে জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, অন্য বছরের তুলনায় আগে পাকতে শুরু করায় হিমসাগর আম পাড়ার দিন পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। হিমসাগর আম পাড়ার দিন আগে নির্ধারিত ছিল ২০ মে। পাঁচ দিন এগিয়ে কাল থেকে আম পাড়া শুরু হবে। অন্যান্য আম পাড়ার তারিখ অপরিবর্তিত থাকবে।

আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আমচাষি ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রিপন বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়েইন আহমদ, দেবহাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.

শওকাত ওসমান, কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওসিমউদ্দিন, শ্যামনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা, আশাশুনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুভ্রাংশ শেখর দাশসহ সাতক্ষীরা বড় বাজার কাঁচা-পাকা মাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রওশান আলী, সাধারণ সম্পাদক রজন আলী এবং আমচাষি আসাদুজ্জামান, সবুর বদ্দি, কবির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে কৃষি বিভাগের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলায় ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫ হাজার ২৯৯টি বাগানে ১৩ হাজার ১০০ জন চাষি আম চাষ করেছেন। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৮০০ টন। তিনি বলেন, সাতক্ষীরার আম দেশ-বিদেশে বেশ জনপ্রিয়। এ অঞ্চলের আম বিশেষ করে হিমসাগর সুস্বাদু, ঘ্রাণযুক্ত ও রসালো। মাটি ও আবহাওয়ার কারণে জেলায় আমগাছে মুকুল দেশের অন্য এলাকার চেয়ে আগে আসে এবং আমও আগে পাকে। চলতি মৌসুমে উৎপাদিত আমের মধ্যে এক–চতুর্থাংশ জমিতে হিমসাগর আম উৎপাদিত হয়েছে। এই আম বিদেশেও রপ্তানি হয়। চলতি বছর বিদেশে হিমসাগর আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ মেট্রিক টন। কিন্তু আবহাওয়ার কারণে অন্য বছরের তুলনায় চলতি বছর হিমসাগর আম আগে পাকতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আম পাড়ার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গোবিন্দভোগ, গোলামখাস, বৈশাখীসহ অন্যান্য দেশি জাতের আম ৫ মে থেকে পাড়া শুরু হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ শিক্ষক ও ১৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আরও ২০ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন শিক্ষক এবং ১৯ জন কর্মকর্তা। কর্মকর্তাদের মধ্যে উপ-রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।

শনিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের সিন্ডিকেটের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, যেসব কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রশাসনিক পদে থেকে রাজনৈতিক আনুগত্য দেখিয়েছেন কিংবা সরাসরি দলীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রভাবে নানা সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তার চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে আইনগত কোনো বাধা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যেন আর কোনো রাজনৈতিক প্রভাবের জায়গা না হয়, সে জন্য কঠোর সিদ্ধান্তের পথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সিন্ডিকেট যাদের অবসর প্রদান করেছে, তারা হলেন অধ্যাপক (ইতিহাস) ড. আবু মো. ইকবাল রুমী শাহ্; উপ-রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ, সরকার মোহাম্মদ এরশাদ, মাহাবুবা খানম, নাদিরা বেগম, মো. মামুনুর রশিদ, সুব্রত সাহা, মনজু সরকার, মো. শাহাজামাল, মো. ওয়াজিয়ার রহমান ও মো. রাফিজ আলী খান; উপপরিচালক মো. আব্দুর রাকিব, মো. সুলতান উদ্দিন, মো. আসাদুজ্জামান খান ও সাকিল আহম্মেদ; সহকারী রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রাকিব, আফরোজ আহমেদ বর্ণা ও মাহফুজা খাতুন; সহকারী পরিচালক এ কে এম সেলিম রেজা  এবং সেকশন অফিসার মানিক চক্রবর্তী।

সিন্ডিকেট সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, ড. মো. নূরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ ড. এ টি এম জাফরুল আযম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম তালুকদার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, রেজিস্ট্রারসহ সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট দুই দফায় ২৯ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। সর্বশেষ ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ৯ জন কর্মকর্তাকে ২৫ বছর চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় অবসরে পাঠানো হয়। তারও আগে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ২৬৫তম সিন্ডিকেট সভায় ২০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে একই বিধি অনুযায়ী বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ শিক্ষক ও ১৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা