বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ২৭ জন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তাঁরা মুক্তি পান। এ সময় কারা ফটকে তাঁদের আত্মীয়স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত সোমবার ৪০ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

মুক্তিপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১২ জন, কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে ৫ জন এবং পার্ট-২ থেকে ১০ জন রয়েছেন।

কারা সূত্র জানায়, জামিনের কাগজপত্র গত মঙ্গলবার বিকেলে কারাগারে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে আজ সকালে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ২১৮ জন জামিনে মুক্তি পেলেন। এর আগে হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১৭৮ জন জামিন পেয়েছিলেন।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ আল মামুন বলেন, গত মঙ্গলবার বিকেলে বন্দী ২৭ সাবেক বিডিআর সদস্যের জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে কাগজপত্র যাচাই–বাছাই করে আজ সকালে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। এতে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিদ্রোহের ঘটনায় পরদিন ও ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি পৃথক মামলা হয়।

হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৮৫০ জনকে আসামি করা হয়, যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা হিসেবে বিবেচিত। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। খালাস পান ২৭৮ জন। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য আপিল বিভাগে শুনানি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ড আর র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে পড়াশোনার খরচ পাঠাতে ব্যাংকে ‘স্টুডেন্ট ফাইল’ খোলা বাধ্যতামূলক, কী কী লাগে

বাংলাদেশ থেকে এখন অনেক শিক্ষার্থীই বিদেশে পড়তে যেতে চান। কেউ কেউ তো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়েও বিদেশে চলে যাচ্ছেন। তবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করতে যান।

কিন্তু পড়াশোনাসহ অন্যান্য খরচ পাঠাতে শিক্ষার্থীকে দেশের ব্যাংকে ‘স্টুডেন্ট ফাইল’ খুলতে হয়। এ জন্য দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে স্টুডেন্ট ফাইল খোলা যায়। বিদেশ যাওয়ার আগে এটি খুলতে হয়।

স্টুডেন্ট ফাইল কী

স্টুডেন্ট ফাইল হলো বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের একধরনের ব্যাংক হিসাব। এই হিসাব ব্যবহার করে সহজেই টিউশন ফি ও থাকা–খাওয়ার খরচ যেকোনো বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে পারবেন। এ জন্য ওই শিক্ষার্থীকে একটি ডেবিট কার্ড দেওয়া হয়। ওই কার্ড ব্যবহার করে নিজের খরচ মেটাতে পারবেন। এ ছাড়া কিছু ব্যাংক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য ঋণও দিয়ে থাকে। ভিসা হওয়ার পর এই স্টুডেন্ট ফাইল খোলার আবেদন করতে হয়। এই স্টুডেন্ট ফাইলের মাধ্যমে শুধু ভর্তির খরচ নয়, ভবিষ্যতে সেমিস্টার ফির অর্থ পাঠানো যায়।

খরচ কত

ব্যাংকভেদে শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের স্টুডেন্ট ফাইল খোলার খরচও ভিন্ন হয়। তবে মোটাদাগে, এই খরচ ১০ হাজার টাকার মধ্যে থাকে। কিছু ব্যাংকে এই সেবা দেওয়ার জন্য রয়েছে পৃথক বুথ। কোনো কোনো ব্যাংক দিনে দিনেই এই হিসাব খোলার সুযোগ দিচ্ছে। এই সেবায় এগিয়ে আছে পূবালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলো এই সেবা দিচ্ছে।

কী কী লাগবে

এবার দেখে নিই, এ ধরনের স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে ও সচল রাখতে কী যোগ্যতা লাগে এবং কী কী নথিপত্র প্রয়োজন।

১. যোগ্যতা ও নথিপত্র

এ ধরনের হিসাব খুলতে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর জন্য কিছু কাগজপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া কিছু তথ্যও দিতে হয়, যেমন শিক্ষার্থীর নাম, শিক্ষার্থীর ছবি, কোর্সের সময় উল্লেখ করে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইস্যুকৃত অফার লেটার, টিউশন ফি ও থাকা–খাওয়ার খরচের বিবরণ, বাংলাদেশে শেষ করা শিক্ষাগত সনদ, অভিভাবকের বিবরণ, পাসপোর্টের অনুলিপি ও আবেদনকারীর ভিসার কপি।

২. অভিভাবকের হিসাব

এই স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে হলে ওই নির্দিষ্ট ব্যাংকে শিক্ষার্থীর অভিভাবকের হিসাব থাকতে হবে। হিসাব না থাকলে নতুন করে তাঁদের নামে হিসাব খুলতে হবে। কারণ, অভিভাবকদের হিসাব থেকেই স্টুডেন্ট ফাইলে অর্থ পাঠাতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।

৩. সেমিস্টারের ফলাফল

এই স্টুডেন্ট ফাইলের মাধ্যমে শুধু ভর্তির খরচ নয়, ওই শিক্ষার্থী দেশের বাইরে চলে যাওয়ার পর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরবর্তী সেমিস্টার ফির অর্থ পাঠানো যায়। এ জন্য কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়, যেমন পূর্ববর্তী সেমিস্টারের অর্থ প্রদানের রসিদ, পূর্ববর্তী সেমিস্টারের ফলাফল কিংবা ট্রান্সক্রিপ্ট, নতুন সেমিস্টারের টিউশন ফির ইনভয়েস ইত্যাদি।

কেন স্টুডেন্ট ফাইল

বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে বিদেশি ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো বেশ জটিল। নানা সংস্থা থেকে অনুমতি লাগে। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করেন। তাঁদের টিউশন ফিসহ বিভিন্ন খরচ দেশ থেকে পাঠানো হয়। শিক্ষার্থীদের খরচ পাঠাতে ব্যাংকের স্টুডেন্ট ফাইল বেশ কার্যকর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশে পড়াশোনার খরচ পাঠাতে ব্যাংকে ‘স্টুডেন্ট ফাইল’ খোলা বাধ্যতামূলক, কী কী লাগে