রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে ‘ব্যবহারিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের’ ঘোষণা দিয়েছে চীন। দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সাম্প্রতিক মস্কো সফরের পর আজ বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে অংশ নিতে গত সপ্তাহে মস্কোয় গিয়েছিলেন সি। সির মস্কো সফরের পরপরই এ ঘোষণা এল।

কয়েক বছর ধরে মস্কো-বেইজিংয়ের সম্পর্ক বাড়ছিল। ইউক্রেনে ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়।

সির সাম্প্রতিক মস্কো সফর পশ্চিমারা ভালোভাবে নেয়নি। ইউক্রেনের মিত্রদেশগুলোর অভিযোগ, মস্কোকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে যুদ্ধ চালাতে সহায়তা দিচ্ছে বেইজিং।

পশ্চিমাদের এসব অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছে বেইজিং। তাদের দাবি, এই সংঘাতে তারা নিরপেক্ষ। ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সির মস্কো সফর নিয়ে আজ চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিয়াং বিন নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। চীন কীভাবে রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক জোরদার করবে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে জিয়াং বিন বলেন, ‘আমাদের সামরিক পর্যায়ের সম্পর্কটা “উচ্চপর্যায়ের”।’ চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে পোস্ট করা এক উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

চীনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে জিয়াং বিন বলেন, ‘আমরা কৌশলগত পারস্পরিক আস্থা আরও গভীর করতে, কৌশলগত যোগাযোগ জোরদার করতে এবং ব্যবহারিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ করতে কাজ করছি।’

জিয়াং বলেন, এসব উদ্যোগ ‘নতুন যুগে চীন-রাশিয়া সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারত্বের বিষয়বস্তুকে আরও সমৃদ্ধ করবে’।

এসব পদক্ষেপ ‘বিশ্বের কৌশলগত স্থিতিশীলতা রক্ষা ও জোরদারে’ সহায়তা করবে বলেও মন্তব্য করেন জিয়াং বিন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মস্কোয় দীর্ঘ বৈঠক শেষে সি চিন পিং বলেছিলেন, চলমান বৈশ্বিক অস্থিরতার এই সময়ে চীন-রাশিয়ার সম্পর্ক ‘ইতিবাচক শক্তি’ নিয়ে হাজির হয়েছে।

জিয়াং বিন আরও বলেন, বেইজিং-মস্কো ‘প্রভাবশালীদের জুলুমের’ বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। সরাসরি কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করলেও যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করেই সি এ কথা বলেছেন বলে ধারণা করা হয়।

তখন পুতিন নিজেও সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সির সঙ্গে তাঁর ‘ঐতিহ্যগতভাবে উষ্ণ, বন্ধুসুলভ’ আলোচনা হয়েছে। তিনি সিকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক শলগত

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র: আনিসুজ্জামান

‎প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র, যেখানে টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য সীমাহীন সুযোগ বিদ্যমান। বিশ্বের অনেক দেশে গণ–অভ্যুত্থান কিংবা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের পর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। তবে বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে অনেকটাই ব্যতিক্রম।”

বুধবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড আয়োজিত ‘ফরেন ইনভেস্টরস সামিট ২০২৫' এ প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

‎তিনি বলেন, “বাংলাদেশের গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তনের পরও জিডিপিতে তেমন প্রভাব পড়েনি।বরং মূল্যস্ফীতি উল্টো হ্রাস পেয়েছে।”

আরো পড়ুন:

‘‎নির্বাচনের খবরে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন’

মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব, পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতন

‎প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর শক্তিশালী ও সুশাসিত পুঁজিবাজার গড়ার জন্য কাজ করছে। ‘তিন শূন্য’: শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য অর্জন করা এই আমাদের প্রচেষ্টা।”

‎পুঁজিবাজারের বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “এটি বিনিয়োগের জন্য একটি আকর্ষণীয় ক্ষেত্র। সরকার এমন একটি টেকসই পুঁজিবাজার গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে দেশি ও বিদেশি উভয় ধরনের বিনিয়োগকারীই আস্থার সঙ্গে বিনিয়োগ করতে পারবেন।”

‎সম্মেলনে অন্য বক্তারা বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য শুধু বাজারের স্থিতিশীলতাই যথেষ্ট নয়, বরং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, স্বচ্ছতা এবং দীর্ঘমেয়াদি নীতিগত সমর্থনও জরুরি। বৈশ্বিক বিনিয়োগের মানচিত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ‘উদীয়মান সীমান্ত বাজার' যা কার্যকর নীতি ও কৌশলগত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।

‎সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসানুর রহমান।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি কমিশনার মোহাম্মদ মহসিন চৌধুরী, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মেহেরিয়ার এম হাসান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পিএলসির চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) পিএলসির চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান।

‎সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা ড. এম মাসরুর রিয়াজ। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. সাইফউদ্দিন, কনটেক্সচুয়াল ইনভেস্টমেন্ট এলএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকাও হিরোসে এবং এশিয়া ফ্রন্টিয়ার ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের ফান্ড ম্যানেজার রুচির দেশাই। 

‎অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, নীতিনির্ধারক এবং বাজার বিশেষজ্ঞরা দেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।

‎ ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অধ্যাপক ইউনূসের সফরে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার হয়েছে: মালয়েশিয়ার মন্ত্রী
  • এক হচ্ছে রাশিয়া–চীন–ভারত, কী প্রভাব পড়বে ভূ–অর্থনীতি ও রাজনীতিতে
  • পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র: আনিসুজ্জামান