তিন দফা দাবি আদায়ে গণ–অনশনসহ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচিও চালিয়ে যাবেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন এ ঘোষণা দেন।

ঘোষণা অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ১০টায় রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক–শিক্ষার্থী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সমাবেশ হবে। জুমার নামাজের পর থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিলে গণ–অনশনে বসবে।

কর্মসূচি ঘোষণা করে অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন বলেন, ‘আজকে দুই দিন অতিবাহিত হতে চলছে। সরকারের কর্ণকুহরে আমাদের আওয়াজ পৌঁছাচ্ছে না। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো গ্রিন সিগন্যাল পাইনি। ওনারা (সরকার) আমাদের কথা শুনছেন না, আমাদের কথা শোনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন না।’

দাবি আদায়ে অনড় অবস্থানের কথা জানিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, ‘হয় দাবি আদায় হবে, না হয় আমরা স্থান ত্যাগ করব না, যতক্ষণ না আমাদের মৃত্যু হয়। যখন আমরা গ্রিন সিগন্যাল পাব, আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে; তাৎক্ষণিক আমরা আমাদের এই কর্মসূচি সমাপ্ত করব।’

দাবির ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেও কাকরাইল মোড়ে রাত্রিযাপনের ঘোষণা দেন অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন পুলিশের নির্মম হামলার প্রতিবাদে ১৪ মে–কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কালো দিন’ হিসেবে ঘোষণা করেন।

তিন দফা দাবিতে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার অভিমুখে লংমার্চ নিয়ে যাওয়ার সময় কাকরাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। এ সময় ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে অর্ধশত শিক্ষক–শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর বেলা দুইটা থেকে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তখন থেকে সেখানে তাঁদের লাগাতার অবস্থান চলছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসনবৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করার তিন দফা দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে যমুনা অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় সংবাদ সম্মেলনে তারা এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১–এর নিচে তারা আমরণ অনশন শুরু করে।

এর আগে গতকাল বেলা দুইটায় উপাচার্য শুচিতা শরমিনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করা না হলে দক্ষিণবঙ্গকে অচল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিংকার্স’– এ রাত ১০টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ঘোষণা দেন উপাচার্য শুচিতা শরমিন। তাঁর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে গত রাতে আকস্মিক সংবাদ সম্মেলন করে আমরণ অনশন শুরুর ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করার সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে। টানা ২৮ দিন আন্দোলন চালিয়েও যাঁকে পাওয়া যায়নি, তাঁর সঙ্গে আর কোনো আলোচনার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুনবরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অপসারণে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম১৮ ঘণ্টা আগে

শিক্ষার্থীদের পক্ষে আন্দোলনরত নেতা সুজয় শুভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘যতক্ষণ না আমাদের প্রাণের দাবি উপাচার্য শুচিতা শরমিনের পদত্যাগ পূরণ হচ্ছে, ততক্ষণ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আমরণ অনশনে বসে থাকবে। প্রয়োজনে প্রাণের বিনিময়েও আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কমুক্ত করব।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষকে এই ন্যায্য আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

আরও পড়ুনউপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এবার একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা, একাংশের শিক্ষকদের সংহতি০৮ মে ২০২৫

অনশনরত শিক্ষার্থী ইমন হাওলাদার বলেন, ‘উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিকে কেন্দ্র করে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। এরপরও যদি উপাচার্য গদিতে বসতে চান, তবে আমাদের রক্তের ওপর দিয়েই বসতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের এক দফা বাস্তবায়িত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আমরণ অনশন চলমান থাকবে।’

উপাচার্যের পদত্যাগে দেওয়া ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা আজ মঙ্গলবার দুইটায় শেষ হবে। এরপর পরবর্তী ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুক্রবার জুম্মার পর জবি শিক্ষার্থীদের গণ অনশন
  • ববির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অপসারণ
  • বরির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অপসারণ
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন