ফিচের রেটিংয়ে বাংলাদেশের ঋণমান অপরিবর্তিত
Published: 23rd, May 2025 GMT
বাংলাদেশের ঋণমান গত বছরের মতো ‘বি প্লাস’ অপরিবর্তিত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ফিচ। বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগের ফলে ভবিষ্যতের জন্য ‘আউটলুক’ বা ‘আভাস’ স্থিতিশীল রাখা হয়েছে। এবার দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
ঋণমান অপরিবর্তিত রাখার পেছনে কম কর-জিডিপি অনুপাত, প্রয়োজনের তুলনায় রিজার্ভ কম থাকা ও দুর্বল আর্থিক খাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের মে মাসে বাংলাদেশের ঋণমান ‘বিবি মাইনাস’ থেকে কমিয়ে ‘বি প্লাস’ দেয় ফিচ। গত বছর ভবিষ্যতের জন্য আভাস তথা ‘আউটলুক’ স্থিতিশীল রাখা হয়।
বাংলাদেশ ফিচ ছাড়াও এসঅ্যান্ডপি এবং মুডিস এই তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে সভরেন ক্রেডিট রেটিং নিয়ে থাকে। একটি দেশের ক্রেডিট রেটিং বিনিয়োগকারীদের সে দেশের সম্ভাবনা ও ঝুঁকি সম্পর্কে একটি ধারণা দেয়। ঋণমান হলো, কোনো দেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতার মানদণ্ড। সাধারণভাবে কোনো দেশের ঋণমান কমলে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয়। অবশ্য বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত বিদেশে কখনও খেলাপি হয়নি।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফিচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির ফলে সংস্কারের অগ্রগতি বিবেচনায় বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে না পারার ঝুঁকি কমানো হয়। তবে উচ্চতর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বিশ্ব বাণিজ্যে অনিশ্চয়তার কারণে ঝুঁকি অব্যাহত আছে। অন্যদিকে, ইতিবাচক দিক হচ্ছে বাংলাদেশের আমদানির ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করার পরও রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধি, পোশাক রপ্তানিতে বাড়া এবং বিনিময় হারে বড় পরিবর্তন না হওয়ায় বৈদেশিক খাতে চাপ কমেছে। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি কমেছে। বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপও কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে আরও বলা হয়, গত বছরের আগস্ট থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ থেকে ২১ বিলিয়ন ডলারে স্থিতিশীল রয়েছে। ফিচ মনে করে, রিজার্ভ সামান্য বাড়বে। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের ৮ শতাংশে নামবে গড় মূল্যস্ফীতি। গত এপ্রিলে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি হয় ১০ দশমিক ২১ শতাংশ।
আগামী বছরের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে এমন ধারণা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা, রাজস্ব কাঠামো এবং শাসন ব্যবস্থা উন্নত করতে ও ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা দূর করতে ব্যাপক সংস্কার শুরু করেছে। সম্ভবত আগামী বছরের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নীতি ও সংস্কারের ধারাবাহিকতা অনিশ্চিত এবং আইএমএফ কর্মসূচির অগ্রগতিকে প্রভাবিত করতে পারে। পূর্ববর্তী ইতিহাস বিবেচনায় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ার আশঙ্কার কথাও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশের সুশাসন ঘাটতি, দুর্বল ব্যাংক খাত, রাজস্ব আয়ের ধীরগতি ও দুর্বল অবকাঠামোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, সুশাসনের দুর্বলতা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ বাধাগ্রস্ত করে। ব্যাংক খাতের দুর্বলতার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পদের মান, মূলধন পর্যাপ্ততা ও সুশাসন অত্যন্ত দুর্বল। অবশ্য ব্যাংক খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম চলমান আছে। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ৪২ দশমিক ৮০ শতাংশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ শ র ঋণম ন দ শ র ঋণ গত বছর দ র বল বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
ফিচের রেটিংয়ে বাংলাদেশের ঋণমান অপরিবর্তিত
বাংলাদেশের ঋণমান গত বছরের মতো ‘বি প্লাস’ অপরিবর্তিত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ফিচ। বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগের ফলে ভবিষ্যতের জন্য ‘আউটলুক’ বা ‘আভাস’ স্থিতিশীল রাখা হয়েছে। এবার দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
ঋণমান অপরিবর্তিত রাখার পেছনে কম কর-জিডিপি অনুপাত, প্রয়োজনের তুলনায় রিজার্ভ কম থাকা ও দুর্বল আর্থিক খাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের মে মাসে বাংলাদেশের ঋণমান ‘বিবি মাইনাস’ থেকে কমিয়ে ‘বি প্লাস’ দেয় ফিচ। গত বছর ভবিষ্যতের জন্য আভাস তথা ‘আউটলুক’ স্থিতিশীল রাখা হয়।
বাংলাদেশ ফিচ ছাড়াও এসঅ্যান্ডপি এবং মুডিস এই তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে সভরেন ক্রেডিট রেটিং নিয়ে থাকে। একটি দেশের ক্রেডিট রেটিং বিনিয়োগকারীদের সে দেশের সম্ভাবনা ও ঝুঁকি সম্পর্কে একটি ধারণা দেয়। ঋণমান হলো, কোনো দেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতার মানদণ্ড। সাধারণভাবে কোনো দেশের ঋণমান কমলে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয়। অবশ্য বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত বিদেশে কখনও খেলাপি হয়নি।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ফিচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির ফলে সংস্কারের অগ্রগতি বিবেচনায় বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে না পারার ঝুঁকি কমানো হয়। তবে উচ্চতর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বিশ্ব বাণিজ্যে অনিশ্চয়তার কারণে ঝুঁকি অব্যাহত আছে। অন্যদিকে, ইতিবাচক দিক হচ্ছে বাংলাদেশের আমদানির ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করার পরও রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধি, পোশাক রপ্তানিতে বাড়া এবং বিনিময় হারে বড় পরিবর্তন না হওয়ায় বৈদেশিক খাতে চাপ কমেছে। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি কমেছে। বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপও কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে আরও বলা হয়, গত বছরের আগস্ট থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ থেকে ২১ বিলিয়ন ডলারে স্থিতিশীল রয়েছে। ফিচ মনে করে, রিজার্ভ সামান্য বাড়বে। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের ৮ শতাংশে নামবে গড় মূল্যস্ফীতি। গত এপ্রিলে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি হয় ১০ দশমিক ২১ শতাংশ।
আগামী বছরের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে এমন ধারণা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা, রাজস্ব কাঠামো এবং শাসন ব্যবস্থা উন্নত করতে ও ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা দূর করতে ব্যাপক সংস্কার শুরু করেছে। সম্ভবত আগামী বছরের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নীতি ও সংস্কারের ধারাবাহিকতা অনিশ্চিত এবং আইএমএফ কর্মসূচির অগ্রগতিকে প্রভাবিত করতে পারে। পূর্ববর্তী ইতিহাস বিবেচনায় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ার আশঙ্কার কথাও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশের সুশাসন ঘাটতি, দুর্বল ব্যাংক খাত, রাজস্ব আয়ের ধীরগতি ও দুর্বল অবকাঠামোর বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, সুশাসনের দুর্বলতা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ বাধাগ্রস্ত করে। ব্যাংক খাতের দুর্বলতার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পদের মান, মূলধন পর্যাপ্ততা ও সুশাসন অত্যন্ত দুর্বল। অবশ্য ব্যাংক খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম চলমান আছে। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ৪২ দশমিক ৮০ শতাংশ।