চট্টগ্রামে ৫ পশুহাটের চারটিই পেলেন যুবদল-কৃষক দল নেতা
Published: 23rd, May 2025 GMT
কাঙ্ক্ষিত দর না পেলেও ঈদুল আজহা উপলক্ষে অস্থায়ী পাঁচটি পশুহাট ইজারা দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এর মধ্যে চারটিই পেয়েছেন যুবদল, কৃষক দল ও মৎস্যজীবী দলের নেতাকর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশনের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া ইজারা দিতে না পারা তিনটি হাট থেকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হাসিল আদায় করা হবে।
হাটগুলো ইজারায় উপযুক্ত দর না পাওয়ায় এবার চসিকের রাজস্ব আয় কমেছে দেড় কোটি টাকার ওপরে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবার পাঁচটি হাট থেকে রাজস্ব আসবে ৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। গত বছর নগরীর সাতটি হাট থেকে আয় হয়েছিল ৫ কোটি ৬ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এবার ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা রাজস্ব কমেছে। তবে তিনটি হাট থেকে চসিক হাসিল আদায় করায় সেখান থেকে কিছু আয় হবে।
সিটি করপোরেশনের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, হাট ইজারার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় প্রাধান্য পায়নি। সর্বোচ্চ দরদাতাকেই ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এবার প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায় হয়নি। হাটের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কম থাকায় নতুন করে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে যে দর পাওয়া গেছে, তাতেই ইজারা দেওয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশন থেকে জানা গেছে, নগরের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে সিডিএ বালুর মাঠ হাটের ইজারা পেয়েছেন বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন। তিনি হাটটির দর দেন সর্বোচ্চ ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তবে গতবার এই হাট ইজারা হয়েছিল ২ কোটি ২২ লাখ টাকায়। এ ছাড়া ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে টিএসপি মাঠের হাটটি ইজারা পেয়েছেন পতেঙ্গা থানা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক মো.
সিডিএ বালুর মাঠ হাটের দর প্রায় কোটি টাকা কম নিয়ে যুবদল নেতা নিজাম উদ্দিন বলেন, হাটটি সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন ও যুবলীগ নেতা দেবাশীষ পাল নিয়ন্ত্রণ করতেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে কালো টাকা থাকায় গতবার অস্বাভাবিক দাম দিয়ে তারা ইজারা নিয়েছিলেন। আমাদের হাতে তো এত টাকা নেই। তার পরও নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দিয়ে নিয়েছি।
এদিকে নগরের সবচেয়ে বড় কর্ণফুলী পশুর হাটের ইজারা পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। গত ১৮ বছর ধরে এই হাট তিনি ও তাঁর ছোট ভাই ইজারা নিচ্ছেন। এবার হাটটির নির্ধারিত দর ছিল ২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। কিন্তু তারা দর দেন ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এ নিয়ে ইজারাদার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, আগের তুলনায় হাটের জায়গা কমে গেছে। আবার নগরজুড়ে অবৈধ হাট বসে। এতে প্রত্যাশিত আয় হয় না। তাই এবার কম দর দিয়েছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ধ র ত দর ট র ইজ র য বদল নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।”
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ