নির্বাচন ডিসেম্বর না জুনে, এই বিতর্কের সমঝোতাভিত্তিক সমাধান চায় এবি পার্টি
Published: 26th, May 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠানে কোনো সমস্যা আছে কি না, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
একই সঙ্গে মজিবুর রহমান মঞ্জু নির্বাচন ডিসেম্বরে না হয়ে জুনে হলে কোনো অসুবিধা আছে কি না, তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন বিএনপির কাছে। নির্বাচন ডিসেম্বরে না জুনে, এই বিতর্কের সমঝোতাভিত্তিক সমাধানও চেয়েছেন তিনি।
আজ রোববার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সন্ধ্যায় সেখান থেকে বেরিয়ে যমুনার সামনে বৈঠকের খুঁটিনাটি সাংবাদিকদের জানান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
মজিবুর রহমান বলেন, বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের ব্যাপক সন্দেহ, সংশয় ও ভুল–বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। নবগঠিত দল এনসিপির সঙ্গেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে। এমনকি গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রসমাজের মধ্যে বিভাজন দেখা দিলেও সরকার সে বিষয়ে নির্বিকার থেকেছে। এটা ক্রমেই সরকারের সমর্থনের ভিত্তিকে দুর্বল করে তুলেছে।
মজিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন ডিসেম্বরে করতে কী সমস্যা? অনিবার্য কারণে জুন পর্যন্ত সময় লাগলেই বা অসুবিধা কী? অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির কাছে জনগণ এর ব্যাখ্যা জানতে চায়। আশা করি উভয় পক্ষ এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরবে।’
প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে দেশ এক অনিশ্চিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে মন্তব্য করে মজিবুর রহমান বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সঠিক উপলব্ধি, ছাড় দেওয়ার মনোভাব প্রদর্শন, ইগো পরিত্যাগ ও সমঝোতামূলক পদক্ষেপই উত্তম সমাধান। সরকারের পক্ষ থেকে যেসব ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে সেগুলো সংশোধনেও উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন, সংশোধন, পরিমার্জনসহ জাতীয় ঐক্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে কঠোর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
এ ছাড়া সরকারকে সবার ঐকমত্যে গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র ও জাতীয় সনদ তৈরি এবং নির্বাচন, সংস্কার ও ফ্যাসিবাদী-খুনিদের বিচারের একটি রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন মজিবুর রহমান।
আজ দুই দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। প্রথম দফায় বিকেলে এবি পার্টি ছাড়াও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী জনশক্তি পার্টি এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অধ্যাপক ইউনূস।
এরপর দ্বিতীয় দফায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, গণ অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি এবং ইসলামী ঐক্য জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
নানা ক্ষোভ ও হতাশা থেকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করার কথা ভাবছেন, এমন খবরে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সব মহলে আলোড়নের সৃষ্টি হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক সরক র র ন বল ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রেপ্তারকৃতদের তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তা করবে বাংলাদেশ
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ৩৫ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ তদন্তে মালয়েশিয়ার সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ। শুক্রবার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন হাজি হাসানের সঙ্গে এক বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ আশ্বাস দেন।
শুক্রবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কুয়ালালামপুরে ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে তাঁরা এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তথ্য ও তদন্তের ফলাফল বিনিময়ের মাধ্যমে অভিযোগের অভ্যন্তরীণ তদন্তে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চান। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দেন।
এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব ডেভিড ল্যামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উভয়ই বাংলাদেশে চলমান সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, এলডিসি-পরবর্তী সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিথা হেরাথ এবং কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের উপমন্ত্রী ও প্রতিনিধিদলের প্রধান পার্ক ইউনজুর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এ সময় দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বাংলাদেশ ২০০৬ সালে এআরএফের সদস্য হয়। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে ফোরামটি প্রতিষ্ঠিত হয়।