‘লালু ও কালু সরদার’-এর দাম হাঁকানো হচ্ছে ১০ লাখ টাকা
Published: 26th, May 2025 GMT
বিশাল আকৃতি, সুঠাম দেহ ও হাঁকডাকের কারণে আসন্ন কোরবানির ঈদে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ক্রেতাদের নজর কেড়েছে লালু ও কালু সরদার নামের দুটি ষাঁড়। এমনটিই দাবি করেছেন গরু দুটির মালিক ও খামারি মেহেদী হাসান ওরফে বাবু মিয়াজী।
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে লাল রঙের লালু ও কালো রঙের কালুর জন্য দাম হাঁকানো হচ্ছে ১০ লাখ টাকা। হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় দুটির দেখা মিলবে মতলব উত্তর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে। সেখানে ‘এম এইচ বিএম অ্যাগ্রো’ নামের খামারে গরু দুটিকে লালনপালন করেছেন মেহেদী হাসান।
শখ করে গরু দুটির এমন নাম রেখেছেন জানিয়ে গতকাল রোববার মেহেদী হাসান বলেন, কোনো ধরনের মোটাতাজাকরণ ওষুধের প্রয়োগ ছাড়াই সম্পূর্ণ দেশি ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালু ও কালু সরদারকে কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। ১৪ থেকে ১৫ মণ কালু সরদারের দাম চেয়েছেন ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ১৩ থেকে ১৪ মণ ওজনের লালু সরদারের সম্ভাব্য দাম হাঁকানো হচ্ছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ষাঁড় দুটি একত্রে পড়বে ১০ লাখ টাকা।
কালু ও লালুর ছবি–ভিডিও বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর গরু দুটিকে দেখতে ওই খামারে ভিড় করছেন স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকার লোকজন।
ইতিমধ্যেই কিছু ক্রেতা ষাঁড় দুটির দরদাম করেছেন। এখন পর্যন্ত আট লাখ টাকা হাঁকানো হলেও আপাতত আরও দামের প্রত্যাশা করছেন খামারি মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, গরু দুটির সম্ভাব্য দাম ১০ লাখ টাকা। তবে কিছুটা কমেও বিক্রি করবেন। ন্যায্য দাম না পেলে বিক্রি করবেন না। গরু দুটিকে এখন পর্যন্ত কোরবানির পশুর হাটে নেননি। তবে হাট জমলে এরপর সেখানে নেওয়ার পরিকল্পনা তাঁর।
লাল রঙের লালুকে বেশ পছন্দ হয়েছে জানিয়ে উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার বাসিন্দা বাবুল বলেন, ফেসবুকে ওই ষাঁড় দুটির ছবি দেখে ওই খামারে গিয়েছিলেন। কয়েকজন মিলে ষাঁড়টি কিনতে চান। তাঁরা তিন লাখ টাকা দাম বলেছেন, তবে খামারি রাজি হননি। দাম আরও কিছু বাড়িয়ে ষাঁড়টি কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।
এদিকে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পশুর স্বাস্থ্যমান যাচাইয়ের জন্য মতলব উত্তরজুড়ে ১৮টি চিকিৎসা দল গঠন করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, ওই দলের সদস্যরা প্রতিটি হাটে সার্বিক বিষয়ে তদারকি করবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১০ ল খ ট ক ক রব ন র কর ছ ন সরদ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
১০ কিলোমিটারজুড়ে সারি সারি তালগাছ, যেন ‘তালের রাজ্য’
আশির দশকে সেখানে ফসলি জমি ছিল, আবাদ হতো ধানের। বেড়িবাঁধ হওয়ার পর এসব জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মালিকানায় চলে যায়। অনেক দিন ধরে থাকে পরিত্যক্ত ও অনাবাদি। পরে ফসলের ক্ষতি পোষাতে স্থানীয় লোকজন সেখানে রোপণ করেন সারি সারি তালগাছ।
বাঁধের পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শোভা পাচ্ছে শত শত তালগাছ। এসব তালগাছে ফলন হচ্ছে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এসব গাছে শোভা পায় তাল। ‘এক পায়ে দাঁড়ানো, সব গাছ ছাড়ানো ও আকাশে উঁকি মারা’ এসব তালগাছ ও তালের ফলনে বাঁধ এলাকা যেন হয়ে উঠেছে ‘তালগাছময়’।
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার পশ্চিম বাইশপুর থেকে মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধ এলাকা ঘুরে বিপুলসংখ্যক তালগাছ দেখা গেছে। শত শত তালগাছের হাতছানি ও উঁকিঝুঁকি যেন জানান দিচ্ছে এক টুকরা দৃষ্টিনন্দন ‘তালরাজ্যের’।
গত শনিবার দুপুরে বেড়িবাঁধের পশ্চিম বাইশপুর, চরমাছুয়া, গাজীপুর, আমিরাবাদ, মোহনপুরসহ অন্যান্য এলাকায় দেখা যায়, সারি সারি ছোট-বড় তালগাছে ঝুলছে সবুজ তাল। বড় বড় তালগাছ যেন আকাশে উঁকি মেরে বজ্রপাত থেকে মানুষকে বাঁচানোর প্রার্থনা জানাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তালের আঁটি কেটে বিক্রি করছেন। কেউ গাছের মাথায় ঝুলে থাকা তালের সংখ্যা গুনছেন।
পশ্চিম বাইশপুর গ্রামের দেওয়ান মো. সেলিম বলেন, বেড়িবাঁধ হওয়ার আগে এখানে ধানের আবাদ হতো। বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে। ক্ষতি পোষাতে তিনি বাঁধের পাশে ১০টি তালগাছ লাগান। এখন ফলন হচ্ছে। পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে কিছু বিক্রি করে আয়ও হচ্ছে। আশপাশের লোকজনও তালগাছ লাগাতে উৎসাহী। ফলন থেকে অনেকেই আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
গাজীপুর এলাকার মো. ওবায়েদ উল্লাহ বলেন, পশ্চিম বাইশপুর থেকে মোহনপুর পর্যন্ত হাজারের বেশি ছোট-বড় তালগাছ আছে। নতুন করে আরও গাছ লাগানো হচ্ছে। বজ্রপাতও এই এলাকায় কম।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমজাদ হোসেন এবং মতলব উত্তরের ইউএনও মাহমুদা কুলসুম বলেন, বাঁধ এলাকায় এত তালগাছ থাকার বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও বেশি করে তালগাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করছে।