আশির দশকে সেখানে ফসলি জমি ছিল, আবাদ হতো ধানের। বেড়িবাঁধ হওয়ার পর এসব জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মালিকানায় চলে যায়। অনেক দিন ধরে থাকে পরিত্যক্ত ও অনাবাদি। পরে ফসলের ক্ষতি পোষাতে স্থানীয় লোকজন সেখানে রোপণ করেন সারি সারি তালগাছ।

বাঁধের পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শোভা পাচ্ছে শত শত তালগাছ। এসব তালগাছে ফলন হচ্ছে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এসব গাছে শোভা পায় তাল। ‘এক পায়ে দাঁড়ানো, সব গাছ ছাড়ানো ও আকাশে উঁকি মারা’ এসব তালগাছ ও তালের ফলনে বাঁধ এলাকা যেন হয়ে উঠেছে ‘তালগাছময়’।

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার পশ্চিম বাইশপুর থেকে মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধ এলাকা ঘুরে বিপুলসংখ্যক তালগাছ দেখা গেছে। শত শত তালগাছের হাতছানি ও উঁকিঝুঁকি যেন জানান দিচ্ছে এক টুকরা দৃষ্টিনন্দন ‘তালরাজ্যের’।

গত শনিবার দুপুরে বেড়িবাঁধের পশ্চিম বাইশপুর, চরমাছুয়া, গাজীপুর, আমিরাবাদ, মোহনপুরসহ অন্যান্য এলাকায় দেখা যায়, সারি সারি ছোট-বড় তালগাছে ঝুলছে সবুজ তাল। বড় বড় তালগাছ যেন আকাশে উঁকি মেরে বজ্রপাত থেকে মানুষকে বাঁচানোর প্রার্থনা জানাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তালের আঁটি কেটে বিক্রি করছেন। কেউ গাছের মাথায় ঝুলে থাকা তালের সংখ্যা গুনছেন।

পশ্চিম বাইশপুর গ্রামের দেওয়ান মো.

সেলিম বলেন, বেড়িবাঁধ হওয়ার আগে এখানে ধানের আবাদ হতো। বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে। ক্ষতি পোষাতে তিনি বাঁধের পাশে ১০টি তালগাছ লাগান। এখন ফলন হচ্ছে। পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে কিছু বিক্রি করে আয়ও হচ্ছে। আশপাশের লোকজনও তালগাছ লাগাতে উৎসাহী। ফলন থেকে অনেকেই আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

গাজীপুর এলাকার মো. ওবায়েদ উল্লাহ বলেন, পশ্চিম বাইশপুর থেকে মোহনপুর পর্যন্ত হাজারের বেশি ছোট-বড় তালগাছ আছে। নতুন করে আরও গাছ লাগানো হচ্ছে। বজ্রপাতও এই এলাকায় কম।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমজাদ হোসেন এবং মতলব উত্তরের ইউএনও মাহমুদা কুলসুম বলেন, বাঁধ এলাকায় এত তালগাছ থাকার বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও বেশি করে তালগাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

টিকটকে প্রেম, বিয়ের পর লাশ মিললো সেফটিক ট্যাংকে

টিকটক পরিচয়ে প্রেমের পর বরিশালের জামাল মিয়াকে করেছিলেন চাঁচপুরের মতলবের গৃহবধূ রূপালী বেগম।

বিয়ের এক বছরের মধ্যেই চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের উপাদী দক্ষিণ এলাকায় নিজ বাড়ির সেফটিক ট্যাংকে মিললো তার মরদেহ। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন স্বামী জামাল মিয়া।

শনিবার (১২ জুলাই) দিবাগত রাতে সেফটিক ট্যাংক হতে বিবস্ত্র মরদেহটি উদ্ধার করে থানা পুলিশ। 

স্থানীয়রা জানান, একাধিক বিয়ে করা বরিশালের জামাল মিয়ার সাথে টিকটকে পরিচয় হয় মতলবের রূপালী বেগমের। প্রেম থেকে বিয়েতে গড়ায় সম্পর্ক। কিন্তু বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই পারিবারিক কলহে পাঁচ সন্তানের জননী রূপালীকে জীবন দিতে হলো।

রূপালী বেগম মতলব দক্ষিণের উপাদী দক্ষিণের কালু পাটোয়ারী ও মরিয়ম বেগমের সন্তান। 

রূপালীর মা মরিয়ম বলেন, “মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে রাতে দেখি টয়লেটের সেফটি ট্যাংকের ঢাকনা খোলা। পরে সন্দেহ হলে ওটাতে উঁকি দিয়ে দেখি মরিয়ম মরে পড়ে আছে। এরপর সবাই আমার ডাক-চিৎকারে এখানে ছুটে আসে।” 

রূপালীর ভাই আলিমুদ্দিন বলেন, “আমার বোন এখানে জমি কিনে বাড়ি করে ২ ছেলে ও ৩ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছিলো। সপ্তাহ দুয়েক আগে জামাল রূপালীর স্বর্ণের গহনা ও টাকা পয়সা নিয়ে পালায়। পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ধরে আনা হয়। এরপর এখন এই ঘটনা। রূপালীর শরীরে ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে। আমরা ধারণা করছি জামালই রূপালীকে হত্যা করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল নিয়ে পালিয়েছে। আমরা জামালের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এ বিষয়ে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালেহ আহাম্মদ বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল হতে গৃহবধূর মরদেহটি উদ্ধার করেছি। ঘটনার তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/অমরেশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টিকটকে প্রেম, বিয়ের পর লাশ মিললো সেফটিক ট্যাংকে