‘আব্বা, আমি আয়া পড়ছি’

ঈদের ছুটি প্রায় শেষ। কাল ভার্সিটিতে চলে যাব। সকাল থেকেই বাড়ির জন্য মন পুড়ছে। বাবার কথা মনে পড়ছে। মনটা ভীষণ ভারী। তাই জুমার নামাজ শেষে একবার বাবার কবরের পাশে দাঁড়িয়েছি। কবরের পাশে দাঁড়িয়ে ভাবছি, আমার বাবা আমার প্রতি অবিচার করেছেন। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে আমি বলতেই পারি, অন্য দুই সহোদর যতটুকু পিতৃস্নেহ পেয়েছে, তার তুলনায় আমি কম পেয়েছি। এই অদ্ভুত অনুযোগ শুনে বাবা যেন অকস্মাৎ আমার পিঠে হাত রেখে বলছেন, ‘বাবা জিমু, তোমারে তো আমি অনেক আদর করিরে ফুত। সবারত্তে বেশি আদর করি। ভালো কইরা ফইরো।’

ঘটনার আকস্মিকতায় কবরের পাশে নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকি। কেমন করে এমন দিব্যকর্ণপ্রাপ্ত হলাম! বাবার মৃত্যুর সময় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে ঢাকায় ছিলাম। শুনেছি মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত বাবা নাকি আর্তনাদ করে গেছেন, ‘আমার ফুত কই? কোনসম আইবো?’ তাঁর জীবদ্দশায় আর আমাকে দেখতেও পাননি। এখন আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি এলে রোজ একবার বাবার কাছে যাই। রোজ বলি, ‘এই তো আব্বা, আমি আয়া পড়ছি।’

মোয়াজ্জিম হুসাইন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

প্রিয় মানুষকে নিয়ে

আমার জীবনের একটি অংশ আপনি। লেখাপড়ার পাশাপাশি যেকোনো সমস্যায় আপনাকে সব সময় পাশে পেয়েছি। আপনি ছায়ার মতো আমার পাশে ছিলেন। আপনার সঙ্গে যখনই কথা বলি, মনের সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। আমার কখনো নিজেকে একা মনে হয়নি। আপনি চিরদিন আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় থাকবেন। আমি বাকি জীবন আপনার পরামর্শে এগিয়ে যেতে চাই। জীবনের বাকি সময় আপনার আদর্শে বেঁচে থাকতে চাই।

ফারহান নাজীব, গাজীপুর

সেই ছেলেটাকে খুঁজছি

কলেজে নবীনবরণের ভিড়ে প্রথম দেখা। চোখে চোখ পড়তেই বুকটা ধক করে উঠল। প্রেম মনে হয় একেই বলে। লম্বা, ছিপছিপে গড়ন, শেভ করা মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম। টানা কয়েক মিনিটে পুরো চেহারাটা স্ক্যান করলাম ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে। তারপর একপলকে কোথায় যেন হারিয়ে গেল! সেই মুখটা আর খুঁজেই পাইনি, একটা বছর কেটে গেল। সব বিভাগের ক্লাসেই ঘুরে ঘুরে খুঁজেছি, পাইনি। দেখা যদি নাইবা দেবে আর, তবে কেন এমন করে প্রেমের আগুনে পোড়ালে। গাঢ় সবুজ পাঞ্জাবির সেই নাম না–জানা ছেলেটিকে কোথায় খুঁজে পাব?

বুশরা, কুমিল্লা

আপনার প্রিয় ঋতু

আপনার প্রিয় ঋতু বর্ষা এসে গেছে! ভেবেছিলাম আপনাকে শুভেচ্ছা জানাই। কিন্তু পারলাম না। কারণ, আপনার আইডি তখন নিদ্রায়। কিছুদিন পর আবারও শীতনিদ্রা ভেঙে আপনি এলেন। মিচকে শয়তানের মতো আমিও আপনার আইডিতে ঢুঁ মারি প্রতিনিয়ত। আপনার শেয়ার করা পোস্টগুলো দেখে হাসি। কিছু একটা লিখতে গিয়েও লেখা হয়ে ওঠে না, যদি সুযোগসন্ধানী মনে করেন। একটি নাটকের জনপ্রিয় চরিত্রের কারণে আপনার ‘পারমিতা’ নামটি আমাদের বাসায় দিনে বেশ কয়েকবার উচ্চারিত হয়। তখন অন্য রকম এক অনুভূতি কাজ করে। তবে আমার মনে হয় আপনার নামটি উপন্যাসেই ভালো মানায়। দিন শেষে অনুপম রায়ের কাছ থেকে ধার নিয়ে বলি-

‘যদি কোনোদিন তুমি দু’হাত দিয়ে ঝিনুক কুড়াও

নেই আমি সেই অল্প ভাঙা গল্পগুলোয়.

.।’

বাকিটুকু আপনিই নাহয় গাইলেন।

হিমু, কক্সবাজার

আরও পড়ুনপালিয়ে না এলে জীবনটা হয়তো এত সুন্দর হতো না০৮ এপ্রিল ২০২৩আমাকে যেদিন খুঁজে পাবে না

আমি হেরে যাওয়া মানুষের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করি। আমার মনে হয়, একটা দুঃখী মানুষ, হেরে যাওয়া মানুষের পাশে থাকলে সে জিতে যাবে। দেখলাম, আমাকে পাশে পাওয়ার পর সে নতুনভাবে বেঁচে থাকার ইচ্ছাটা খুঁজে পেয়েছে। আমি তাকে যেকোনো মূল্যে জেতাতে চাই। তবে শর্ত একটাই, জেতার পর আমি আবার অপরিচিত হয়ে যাব।

মারিয়ানা, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

মনের বাক্সে পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে।

ই–মেইল ঠিকানা: [email protected] (সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘মনের বাক্স’)

ডাক ঠিকানা: প্র অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫। (খামের ওপর লিখুন ‘মনের বাক্স’)

ফেসবুক পেজ: fb.com/Adhuna.PA

আরও পড়ুনপ্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে আবার ফিরে এসেছেন স্ত্রী২৮ আগস্ট ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ বব দ য শ বব দ য ল আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার আসল কারণ জানালো তদন্তকারী সংস্থা

ভারতের আহমেদাবাদে গত মাসে ২৬০ যাত্রী নিয়ে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, উড্ডয়নের তিন সেকেন্ড পরেই বিমানটির ইঞ্জিনের জ্বালানি সুইচগুলো প্রায় একইসঙ্গে ‘চালু’ অবস্থা থেকে ‘বন্ধ’ অবস্থায় চলে যায়। ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। খবর সিএনএনের।

শনিবার (১২ জুলাই) ভারতের এভিয়েশন দুর্ঘটনা তদন্তকারীদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কারণে বোয়িং–৭৮৭ ড্রিমলাইনারটির গতি দ্রুত কমতে শুরু করে এবং নিচের দিকে নামতে থাকে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানটি ১৮০ নট গতিতে পৌঁছানোর পর মাত্র ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুইটি ইঞ্জিনের জ্বালানি কাট-অফ সুইচ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে এক পাইলটকে অপর পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায়, তিনি কেন জ্বালানি বন্ধ করেছেন। জবাবে ‘অপর পাইলট বলেন, তিনি জ্বালানি বন্ধ করেননি।’

আরো পড়ুন:

সংসার ভাঙছে নয়নতারার?

লর্ডসে ব্যতিক্রমী ধৈর্য, রুটের ৯৯ রানে ভর করে লড়াইয়ে ইংল্যান্ড

এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করা হলেও ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়। ইঞ্জিন রিস্টার্টের প্রক্রিয়ায় থাকতেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। সেসময় বিমানের র‍্যাম এয়ার টারবাইন (আরএএম) চালু হয়ে যায়, যা জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার অংশ। বিমানটি রানওয়ে পার হয়ে খুব দ্রুত উচ্চতা হারিয়ে ফেলে এবং পাশের বিজে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের হোস্টেলে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়।

তদন্তকারীরা বিমানের ব্ল্যাক বক্স থেকে উদ্ধার করা ৪৯ ঘণ্টার ফ্লাইট ডেটা ও দুই ঘণ্টার ককপিট অডিও বিশ্লেষণ করে এই তথ্য খুঁজে বের করতে সমর্থ হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা যে, সেগুলো সহজে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ডেভিড সোসি বলেন, “এই সুইচগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নাড়াচাড়া করার জন্য তৈরি। দুই ইঞ্জিনের জ্বালানি কাট-অফ সুইচ অনিচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত বিরল।”

দুর্ঘটনাগ্রস্ত ফ্লাইট ‘এআই ১৭১’-এ ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক। এছাড়াও, মাটিতে থাকা বেশ কয়েকজন লোক নিহত হন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের বাসিন্দা। সব মিলিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬০ জনে।

এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “এআই ১৭১ ফ্লাইট দুর্ঘটনায় যেসব পরিবার প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাই এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে আছি।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ