হাইকোর্টে সাতজনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
Published: 18th, June 2025 GMT
রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে প্রায় ৯ বছর আগে নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মামলায় সাতজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২২৯ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশ করা হয়। এ মামলায় বিচারিক আদালত ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, আলোচ্য হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনার ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়া বিবেচনায় নিয়ে আপিলকারী আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে আমরা মনে করি।
মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন), আসামিদের আপিল এবং জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাংলায় রায় লিখেছেন। এর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি সহিদুল করিম।
আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া সাতজন হলেন– রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাবশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ।
হলি আর্টিসান বেকারিতে ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে নৃশংস হামলা চালানো হয়। দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে কুপিয়ে ও গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করা হয়। জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান চালাতে গিয়ে বোমা হামলায় নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান নব্য জেএমবির এই সাত সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এ ছাড়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরও দুটি ধারায় তাদের কয়েকজনকে দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ার ব্যাখ্যায় হাইকোর্ট বলেছেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও এ সাত আপিলকারী ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় সহায়তা করেছেন, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় (জঙ্গি হামলা) সহায়তার কারণে সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ এর ধারা ৬-এর ১ উপধারার (ক) (আ) দফায় বর্ণিত অপরাধে তারা দোষী। কিন্তু সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট ধারা-উপধারার সঠিক উপলব্ধি না করে আপিলকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, যা সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নয়। যে কারণে উক্ত রায়টি হস্তক্ষেপযোগ্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব চ রপত র রহম ন আম ত য ন ওরফ
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল