শেরপুরের নকলায় শ্রেণিকক্ষে সহপাঠীর সঙ্গে কথা–কাটাকাটির জেরে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীর বাঁ পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়। এ ঘটনায় মামলার পরও কেউ গ্রেপ্তার হননি। পরে ন্যায়বিচারের খোঁজে ছেলের ‘কেটে ফেলা পা’ নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছেন অসহায় বাবা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম শাকিল মিয়া (১৫)। সে নকলা উপজেলার গণপদ্দী ইউনিয়নের বারইকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে এবং বারইকান্দি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাসখানেক আগে শ্রেণিকক্ষে শাকিলের সঙ্গে তার এক সহপাঠীর কথা–কাটাকাটি হয়। তখন ওই সহপাঠীকে একটি চড় মারে শাকিল। এ ঘটনার জেরে ১৫ জুন সহপাঠীর পরিবারের সদস্যরা শাকিলের ওপর হামলা করে বাঁ পা ও হাত কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় শাকিলকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শাকিলের বাঁ পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়।

এ ঘটনার পর ১৬ জুন ওই সহপাঠী (১৫), তার ভাই মো.

অন্তিম (২২), চাচা মো. ইস্রাফিলসহ (৪৯) পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়। কিন্তু এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এরপর ন্যায়বিচারের দাবিতে গতকাল বুধবার শাকিলের ‘কাটা পা’ নিয়ে নকলা সেনা ক্যাম্প, থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও শেরপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে বিচার দাবি করেন তার বাবা আমির হোসেন। পরে পুলিশ ‘কাটা পা’টি নিয়ে আদালতের মাধ্যমে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

শাকিলের বড় বোন কোকিলা বেগম বলেন, ‘এক মাস আগে ক্লাসে শাকিলকে শালা ডাকে ওই সহপাঠী। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে শাকিল ওই সহপাঠীকে চড় মারে। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ভাইরে ওরা পঙ্গু কইরা দিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’ শাকিলের মা ভানু বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে পঙ্গু কইরা দিছে। অহন ছেলেডার জীবন কী অইবো? আমি অপরাধীর বিচার চাই।’

শাকিলের বাবা আমির হোসেন বলেন, কথা–কাটাকাটির মতো তুচ্ছ ঘটনার জেরে তাঁর ছেলেকে কুপিয়ে পঙ্গু করা হয়েছে। মামলা করার পরও গ্রেপ্তার না করায় তিনি বাধ্য হয়ে কাটা পা নিয়ে বিচারের দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় গেছেন। তিনি দোষীদের গ্রেপ্তার ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করছেন।

জানতে চাইলে নকলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের দুটি দল কাজ করছে। আশা করছেন, দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন। তিনি বলেন, গতকাল ওই ছেলের বাবা ‘কাটা পা’ নিয়ে এসেছিলেন। পরে কাটা পা–টি নিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ডাকসু নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎ 

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়ছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) চীনের রাষ্ট্রদূতে আমন্ত্রণে বাংলাদেশ অবস্থিত চীনা দূতাবাসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ডাকসু নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

আরো পড়ুন:

রাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনে ইবির জিয়া পরিষদের সংহতি

বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় রাবির ১৮ গবেষক

এতে ডাকসু সভাপতি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ এবং ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এইচএম মোশারফ হোসেনসহ সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সম্পাদকবৃন্দ।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আবাসন সুবিধা বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে নিজেদের মতামত প্রদান করেন সম্পাদকবৃন্দ। 

প্রস্তাবিত ৫০০০ ছাত্রীদের আবাসন সুবিধা সম্বলিত চায়না-বাংলাদেশ মৈত্রী হলের নির্মাণ কাজ এ বছরের মধ্যেই শুরু হবে বলে আলোচনা হয়। ডাকসুর নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আরো দুটো হল নির্মাণের প্রস্তাব দেন এবং রাষ্ট্রদূত তা বাস্তবায়নে দ্বিতীয় ধাপে যৌথভাবে কাজ করার আশ্বাস দেন। এছাড়াও তারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ক্রীড়া, স্বাস্থ্য, স্কলারশিপ, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

ডাকসুর নব নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূতকে স্মারক প্রদান করা হয় এবং ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরও শুভেচ্ছা স্মারক উপহার প্রদান করেন চীনের রাষ্ট্রদূত।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ