সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী সাবিলা নূর। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে নাচের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন সাবিলা। বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে নাচ শিখেন। প্রথম শ্রেণিতে পড়াকালীন পদ্ম কুঁড়ি চ্যাম্পিয়ন হন।
সাবিলা নূর কখনো অভিনেত্রী হবেন কিংবা শোবিজ অঙ্গনের মানুষ হবেন সেই পরিকল্পনা তার কখনো ছিল না। সাবিলা নূর বলেন, “ছোটবেলায় আম্মু আমাকে নাচ শেখার ব্যবস্থা করেন। আম্মু চাইতেন পড়ালেখার পাশাপাশি আমি যেন অন্য কিছুর সঙ্গে জড়িত থাকি। কিন্তু বড় হয়ে শোবিজে আসব তা ভাবনায় ছিল না।”
শোবিজ অঙ্গনে পা রাখার স্মৃতিচারণ করে সাবিলা নূর বলেন, “অনেক পরে মডেলিং শুরু করি। সেটা ২০১০ সালের ঘটনা। টানা কয়েকবছর শুধু মডেলিং করেছি। আদনান আল রাজীবের পরিচালনায় প্রথম মডেলিং করি। এরপর তার মাধ্যমে পরিচালক রেদোয়ান রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। তার পরিচালিত ‘ইউটার্ন’ নাটকে প্রথম অভিনয় করি। এটি ২০১৪ সালের ঘটনা। এভাবেই শুরু। সেই থেকে ধারাবাহিকভাবে অভিনয় করে যাচ্ছি।”
স্কলাস্টিকা থেকে ও লেভেল এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে প্রাইভেট শিক্ষার্থী হিসেবে এ লেভেল শেষ করেন সাবিলা নূর। পরে ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি একটা ভালো লাগা কাজ করে তার। যার জন্য ‘বিএ ইন ইংলিশ লিটারেচার’ বেছে নেন। ২০২৩ সালে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এই অভিনেত্রী। শুধু সম্পন্ন নয়, তার সিজিপিএ ৩ দশমিক ৯৭।
কম বয়সে শোবিজ অঙ্গনে পা রাখেন সাবিলা। তারপর শুরু করেন অভিনয়। অভিনয় ও পড়াশোনা সমান্তরালভাবে চালিয়ে এমন দারুণ ফলাফল করা কঠিন বিষয়। বলা যায়, সব্যসাচীর মতো অভিনয়ে যেমন দ্যুতি ছড়িয়েছেন, তেমনি পড়াশোনাতেও ঘাটতি রাখেননি এই অভিনেত্রী।
এ বিষয়ে সাবিলা নূর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন নাটকে তো বটেই, বিজ্ঞাপনেও কাজ করতে হয়েছে। কাজ ও পড়ালেখা—দুটোর ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেছি। যেদিন সকালে ক্লাস থাকত, সেদিন দুপুরে বা বিকেলে কাজ রাখার চেষ্টা করতাম। দেখা যেত, শুটিংয়ের ফাঁকফোকরে কোনো নিরিবিলি জায়গায় বসে ক্লাসের প্রেজেন্টেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, অ্যাসাইনমেন্ট করছি। এ ক্ষেত্রে আমার সহকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-সহপাঠী, সবাই খুব সহযোগিতা করেছেন।”
অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক জনপ্রিয় নাটক-টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন সাবিলা নূর। উপহার দিয়েছেন ওয়েব সিরিজও। চলতি বছরে বড় পর্দায় পা রেখে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন এই অভিনেত্রী।
ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’ সিনেমা। এতে ‘লিচুর বাগানে’ গানে নেচে ঝড় তুলেন সাবিলা নূর। গানটিতে তার আবেদনময়ী লুক ও সাবলীল পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছে ভক্তদের।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মিয়ানমার সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন জার্মানির সংসদ সদস্য
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছেন জার্মানির গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য বরিস মিজাতোভিচ। চার দিনের এই সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
বুধবার ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জার্মানির পার্লামেন্ট বুন্দেসট্যাগের গ্রিন পার্টির সদস্য বরিস মিজাতোভিচ ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জ্বালানি প্রকল্প, বিশেষ করে এই অঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। বরিস মিজাতোভিচ মিয়ানমারের সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল এই বিষয়গুলোকে আন্তর্জাতিক আলোচনার সূচিতে ফিরিয়ে আনা। এই লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ সফর শেষে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ভ্রমণ করেন।
বাংলাদেশ সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থা, পরিবেশজনিত উদ্বেগ, কর্মপরিবেশ এবং শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতির মতো বিষয়গুলো নিয়ে বরিস মিজাতোভিচ আলোচনা করেন।
বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সফরকালে মিজাতোভিচ শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সরবরাহ শৃঙ্খল সম্পর্কিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি উপসাগরীয় অঞ্চলে শ্রম অভিবাসন এবং কর্মপরিবেশ নিয়েও আলোচনা করেন তাঁরা। এ ছাড়া বৈঠকে জাহাজভাঙার চ্যালেঞ্জ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়া বরিস মিজাতোভিচ বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে জিআইজেড আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত সম্পর্কে অবগত হন এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মপরিবেশ উন্নত করার সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরের সময় বরিস মিজাতোভিচ কক্সবাজারে যান।
সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করেন এবং এ অঞ্চলে মানবিক চ্যালেঞ্জ এবং চলমান ত্রাণ কার্যক্রম আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সফর মানবাধিকার, কর্মপরিবেশ এবং মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে সংলাপ, বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।