বারবার মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে? ডায়াবেটিস ছাড়াও যেসব কারণে এমন হতে পারে
Published: 21st, June 2025 GMT
ডায়াবেটিসের একটি সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে মুখ শুকিয়ে যাওয়া। এ কারণে বারবার মুখ শুকিয়ে গেলে বা পিপাসা পেলে অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস হয়েছে। এ রকম মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত। কিন্তু ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার পর যদি দেখা যায় ডায়াবেটিস নেই, তখন? তাহলে কেন বারবার মুখ-জিব শুকিয়ে যাচ্ছে? চিন্তার বিষয় বৈকি। তবে মনে রাখতে হবে, ডায়াবেটিস ছাড়াও আরও কিছু কারণে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে।
মুখ শুকিয়ে যাওয়া কীআমাদের মুখগহ্বরে স্যালিভারি গ্ল্যান্ড বা লালাগ্রন্থি থাকে, এদের কাজ হচ্ছে লালা তৈরি করা। এই লালা আমাদের মুখগহ্বরকে সতেজ রাখে, আমাদের খাদ্য গ্রহণের সময় খাবার চিবোতে সহায়তা করে। কোনো কারণে এই লালা পর্যাপ্ত তৈরি না হলে মুখ শুকিয়ে যায়। এ কারণে অনেকে বারবার পানি খেতে চান। অনেকের কথা বলতে, খাবার চিবোতে বা খাবার গিলতে কষ্ট হয়। অনেকের আবার ঠোঁট বা জিব ফেটে যায়। কারও কারও দাঁত নষ্ট হয়ে যায়। মুখের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যায়।
ডায়াবেটিস হলে এ রকম মুখ শুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা খুব বেশি। কারণ, রক্তে গ্লুকোজ বাড়লে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পানিশূন্যতা হয়, মুখ বা জিব তার মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া ডায়াবেটিসে স্নায়ুজনিত কিছু পরিবর্তনেও এটি হয়।
মুখ শুকিয়ে যাওয়ার অন্যান্য কারণশরীরে যেকোনো কারণে পানিশূন্যতা সৃষ্টি হলে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। যাঁদের পানি কম খাওয়ার অভ্যাস, তাঁদের এ রকম হতে পারে। গরম আবহাওয়ায় শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে অনেক পানি বের হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এ রকম হতে পারে। অন্য যেকোনো কারণে অতিরিক্ত ঘাম হলে একইভাবে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। অনেকের ফুড পয়জনিং হয়ে বা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ হয়ে ডায়রিয়া বা বমি হয়, সে সময় পানিশূন্যতা থেকে মুখ শুকিয়ে যায়।
কিছু বাতরোগ আছে, যেসবে সুনির্দিষ্টভাবে লালাগ্রন্থি আক্রান্ত হয়। সে ক্ষেত্রে লালাগ্রন্থি পর্যাপ্ত লালা তৈরি করতে পারে না এবং মুখ শুকিয়ে আসে।
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মুখ শুকাতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো অ্যান্টিহিস্টামিন বা অ্যালার্জির ওষুধ, যা আমরা প্রায়ই সেবন করি। কিছু ওষুধ শরীর থেকে পানি বের করে (যেমন ডাইইউরেটিকস), সেসব ব্যবহারের সময় এ রকম সমস্যা হতে পারে।
কিছু স্নায়ুরোগেও (পারকিনসন্স ডিজিজ, স্ট্রোক) এ রকম হতে পারে। লালাগ্রন্থিতে সরবরাহকারী স্নায়ুতে কোনো আঘাত বা সমস্যা হলেও মুখ শুকাতে পারে।
যাঁরা বেশি বেশি চা, কফির মতো ডাইইউরেটিকস পান করেন, তাঁদের ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। তাঁদের অনেক সময় পানিশূন্যতা সৃষ্টি হয়ে মুখ শুকাতে পারে।
যাঁরা মুখ হাঁ করে ঘুমান, যেমন নাক বন্ধ বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার রোগী, তাঁদের রাতে মুখ শুকিয়ে আসে।
মুখ শুকিয়ে যাওয়া মুখের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়, এতে মুখের ভেতর, মাড়িতে বা দাঁতে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হতে পারে। তাই মুখ শুকানোর সমস্যা বোধ করলে, দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করা উচিত।
আরও পড়ুনকোনো উপসর্গ না থাকলেও ৪০ পেরোলে কেন ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ন শ ন যত ল ল গ রন থ ব রব র সমস য এ রকম
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্য সেপ্টেম্বরে আসছে ইইউর প্রাক্–নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল
আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি বাংলাদেশে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রাক্–নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল। তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখার জন্য আসছে। গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
ইসি সচিব জানান, ইইউর প্রাক্–নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলে তিনজন বিদেশি এবং চারজন স্থানীয় মিলিয়ে সাতজন থাকবেন। এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন জেনেছে। এ বিষয়ে এখনো ইসিকে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
আগামী জাতীয় নির্বাচন কবে, সে বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। তবে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজটি চলতি মাসের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করবে ইসি। আখতার আহমেদ, জ্যেষ্ঠ সচিব, নির্বাচন কমিশনগতকাল ব্রিফিংয়ে নির্বাচন নিয়ে ইসির বিভিন্ন প্রস্তুতির কথাও তুলে ধরেন ইসি সচিব। তিনি জানান, ১০ আগস্টের মধ্যে বাদ পড়া ভোটারদের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। দাবি আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে ৩১ আগস্টের মধ্যে এই তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। সংশোধিত ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যৌক্তিক বিবেচনা করে একটি ‘কাটআউট টাইম’ দিয়ে ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। নির্বাচন কবে হবে, তার ওপর নির্ভর করে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
নির্বাচনী আইনবিধি সংস্কারের অগ্রগতি তুলে ধরে ইসি সচিব বলেন, ‘সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইনের সংশোধনী, ভোটার তালিকা আইনের সংশোধিত অধ্যাদেশ ইসি ইতিমধ্যে হাতে পেয়েছে। একটা সংশোধনী ছিল, সেটা আমরা পেয়েছি। ভোট কেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা, বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা, সাংবাদিকদের জন্য নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে ইসি। জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা আগামী বৃহস্পতিবার ইসির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজটি চলতি মাসের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করবে ইসি। এ ছাড়া একটু একটু করে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী দ্রব্যাদি কেনাকাটার কাজ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করবে ইসি।’
ইসি সচিব জানান, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আয়–ব্যয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন ইসিতে দেওয়ার বিধান আছে। নির্ধারিত সময়ে ৫১টি দলের মধ্যে ৩০টি দল হিসাব দাখিল করেছে। ১৫টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। বাকি ছয়টি দলের একটি বলেছে, তারা এ বছর নিবন্ধন পেয়েছে, তাই তাদের ক্ষেত্রে এ বছর হিসাব দেওয়ার বিধান প্রযোজ্য হবে না। বাকি পাঁচটি দল হিসাব দাখিল করেনি। এটি কমিশনকে জানানো হবে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির নেতা নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড নেই। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইসি সচিব কিছুটা হাস্যরস করে বলেন, ‘আমার মেরুদণ্ড না থাকলে আমি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি কী করে, এটা নাম্বার ওয়ান। নাম্বার টু হচ্ছে, এটা রাজনৈতিক বক্তব্য, আমার এরিয়া নয়। আমার জায়গাটা হচ্ছে প্রশাসনিক ব্যাপার। এ ব্যাপারে প্রথম উত্তরটাই যদি আপনি নেন, এখনো পর্যন্ত তো সোজা হয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আপনারা দোয়া করেন, যেন এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারি।’