ডায়াবেটিসের একটি সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে মুখ শুকিয়ে যাওয়া। এ কারণে বারবার মুখ শুকিয়ে গেলে বা পিপাসা পেলে অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস হয়েছে। এ রকম মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত। কিন্তু ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার পর যদি দেখা যায় ডায়াবেটিস নেই, তখন? তাহলে কেন বারবার মুখ-জিব শুকিয়ে যাচ্ছে? চিন্তার বিষয় বৈকি। তবে মনে রাখতে হবে, ডায়াবেটিস ছাড়াও আরও কিছু কারণে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে।

মুখ শুকিয়ে যাওয়া কী

আমাদের মুখগহ্বরে স্যালিভারি গ্ল্যান্ড বা লালাগ্রন্থি থাকে, এদের কাজ হচ্ছে লালা তৈরি করা। এই লালা আমাদের মুখগহ্বরকে সতেজ রাখে, আমাদের খাদ্য গ্রহণের সময় খাবার চিবোতে সহায়তা করে। কোনো কারণে এই লালা পর্যাপ্ত তৈরি না হলে মুখ শুকিয়ে যায়। এ কারণে অনেকে বারবার পানি খেতে চান। অনেকের কথা বলতে, খাবার চিবোতে বা খাবার গিলতে কষ্ট হয়। অনেকের আবার ঠোঁট বা জিব ফেটে যায়। কারও কারও দাঁত নষ্ট হয়ে যায়। মুখের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যায়।

ডায়াবেটিস হলে এ রকম মুখ শুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা খুব বেশি। কারণ, রক্তে গ্লুকোজ বাড়লে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পানিশূন্যতা হয়, মুখ বা জিব তার মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া ডায়াবেটিসে স্নায়ুজনিত কিছু পরিবর্তনেও এটি হয়।

মুখ শুকিয়ে যাওয়ার অন্যান্য কারণ

শরীরে যেকোনো কারণে পানিশূন্যতা সৃষ্টি হলে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। যাঁদের পানি কম খাওয়ার অভ্যাস, তাঁদের এ রকম হতে পারে। গরম আবহাওয়ায় শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে অনেক পানি বের হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এ রকম হতে পারে। অন্য যেকোনো কারণে অতিরিক্ত ঘাম হলে একইভাবে মুখ শুকিয়ে যেতে পারে। অনেকের ফুড পয়জনিং হয়ে বা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ হয়ে ডায়রিয়া বা বমি হয়, সে সময় পানিশূন্যতা থেকে মুখ শুকিয়ে যায়।

কিছু বাতরোগ আছে, যেসবে সুনির্দিষ্টভাবে লালাগ্রন্থি আক্রান্ত হয়। সে ক্ষেত্রে লালাগ্রন্থি পর্যাপ্ত লালা তৈরি করতে পারে না এবং মুখ শুকিয়ে আসে।

কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মুখ শুকাতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো অ্যান্টিহিস্টামিন বা অ্যালার্জির ওষুধ, যা আমরা প্রায়ই সেবন করি। কিছু ওষুধ শরীর থেকে পানি বের করে (যেমন ডাইইউরেটিকস), সেসব ব্যবহারের সময় এ রকম সমস্যা হতে পারে।

কিছু স্নায়ুরোগেও (পারকিনসন্স ডিজিজ, স্ট্রোক) এ রকম হতে পারে। লালাগ্রন্থিতে সরবরাহকারী স্নায়ুতে কোনো আঘাত বা সমস্যা হলেও মুখ শুকাতে পারে।

যাঁরা বেশি বেশি চা, কফির মতো ডাইইউরেটিকস পান করেন, তাঁদের ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। তাঁদের অনেক সময় পানিশূন্যতা সৃষ্টি হয়ে মুখ শুকাতে পারে।

যাঁরা মুখ হাঁ করে ঘুমান, যেমন নাক বন্ধ বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার রোগী, তাঁদের রাতে মুখ শুকিয়ে আসে।

মুখ শুকিয়ে যাওয়া মুখের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়, এতে মুখের ভেতর, মাড়িতে বা দাঁতে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হতে পারে। তাই মুখ শুকানোর সমস্যা বোধ করলে, দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করা উচিত।

আরও পড়ুনকোনো উপসর্গ না থাকলেও ৪০ পেরোলে কেন ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ন শ ন যত ল ল গ রন থ ব রব র সমস য এ রকম

এছাড়াও পড়ুন:

ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের কাছে ঢাকা ‘জাদুর শহর’

‘এক শব্দে ঢাকা হচ্ছে জাদুর শহর।’ বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার ঠিক এভাবেই ঢাকা সম্পর্কে নিজের অভিব্যক্তি বর্ণনা করেছেন।

গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ইইউর রাষ্ট্রদূত হয়ে বাংলাদেশে আসেন মিলার। বাংলাদেশে তাঁর কাজ ও জীবনযাপনের এক বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ভিডিও চিত্র। দুই মিনিটের বেশি সময়ের ওই ভিডিও ইইউর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ ও এক্সে প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রথম এক বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে মাইকেল মিলার বাংলায় বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি অসাধারণ দেশ। এখানে আমি সব সময় ব্যস্ত। এটি ছিল একটি চমৎকার বছর। বাংলাদেশ যখন সংস্কার ও নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার ২৭টি সদস্যরাষ্ট্রসহ বাণিজ্যিক উন্নয়ন ও মানবিক অংশীদার হিসেবে আপনাদের সঙ্গে আছে।’

বাংলাদেশে আপনার পছন্দের খাবার কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিরিয়ানি। এটি সত্যি অসাধারণ।’

বাংলাদেশে ইইউ রাষ্ট্রদূত হিসেবে প্রথম বছরেই অনেক জায়গা ঘুরেছেন। এ তালিকায় আছে বান্দরবান, সিলেট, কক্সবাজার, রাজশাহী, বরিশাল ও সুন্দরবন। মাইকেল মিলার বলেন, ‘কিছু জায়গায় দুই-তিনবারও গিয়েছি।’

কোন বিষয়টি সবচেয়ে ভালো লেগেছে, জানতে চাইলে মিলার বলেন, ‘সব বয়সের মানুষের সঙ্গে ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা দেখা এবং খেলা।’
মাইকেল মিলারের কাছে ঢাকায় সবচেয়ে কঠিন কাজ রাস্তা পার হওয়া।
ঢাকাকে এক শব্দে কী বলবেন? উত্তরে মিলার বলেন, ‘জাদুর শহর।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের কাছে ঢাকা ‘জাদুর শহর’