চাঁদাবাজদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে: ফয়জুল করীম
Published: 21st, June 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, “দেশে বৈষম্য চলছে। ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টে বৈষম্য দূর করতে জানের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলন করেছিলাম। তবে, ৫ আগস্টের পরে আবারো জুলুম, অত্যাচার, খুন, অবিচার, দখলদারি এবং চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। এর জন্য আমরা আন্দোলন করিনি। চাঁদাবাজদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “আন্দোলন শেষ হয়নি, আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। এবার সব ইসলামী দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন হবে চাঁদাবাজি, দখলদারি এবং খুনিদের বিরুদ্ধে। আন্দোলন হবে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।”
শনিবার (২১ জুন) বিকেলে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে দলীয় গণসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম শাখা।
সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, “এ দেশ থেকে মাত্র ১৬ বছরে পাচার হয়েছে ২৮ লাখ কোটি টাকা। দেশের প্রত্যেকের মাথার ওপরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ। তারা এ দেশকে বিক্রি করার চক্রান্ত করেছে। ভারতের সঙ্গে গোলামি চুক্তি করছে। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীন, তারা রক্ত দিতে পারে, জীবন দিতে পারে; কিন্তু গোলামি করতে পারে না। ভারতের সামনে বাংলাদেশের মানুষ কখনো মাথা নত করবে না, গোলামি করবে না।”
তিনি বলেন, “ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষদের নিয়ে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। ধনী ও গরিবের বৈষম্য দূর করা হবে। এ কারণে সব ইসলামী দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর এই নেতা বলেন, “রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছি, কেউ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। এজন্য হাতপাখা মার্কায় ভোট চাই।”
ইসলামী আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি শাহাজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ।
সমাবেশে শেষে জেলার চারটি সংদীয় আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। প্রার্থীরা হলেন- কুড়িগ্রাম-১ আসনে রাইসুল বারী রনি, কুড়িগ্রাম-২ আসনে আলহাজ্ব নুর বখত, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ডা.
ঢাকা/বাদশাহ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে রিটা রহমান বললেন, ‘চাঁদাবাজের পক্ষে কীভাবে কাজ করব’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ (সদর-মহানগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রিটা রহমান। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গত সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে রংপুর–৩ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর নাম ঘোষণা করা হয়। ওই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য রিটা রহমান। এ নিয়ে আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নগরের রাধাবল্লভে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
রিটা রহমানের অভিযোগ, তাঁর চেয়ে যোগ্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তিনি মেনে নিতেন। কিন্তু শহরের মানুষ যাঁকে ‘চাঁদাবাজ’ হিসেবে চেনেন, তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মনোনয়ন পাওয়া নেতার নাম উল্লেখ করেননি।
সংবাদ সম্মেলনে রিটা রহমান বলেন, ‘আমি যদি দেখি কোনো চাঁদাবাজ, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এবং যাঁকে শহরের লোকেরা চাঁদাবাজ, দখলদার ও জমির দখলদার কী সব বলে। আমার কাছে বহুত ডকুমেন্টস আছে। এ রকম কাউকে যদি মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে আমি তাঁর পক্ষে কীভাবে কাজ করব?’ তিনি বলেন, ‘আমি হতভম্ব হয়েছি। আমার চেয়ে শিক্ষিত ও যোগ্য প্রার্থী দিলে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু এমন একজন দলের প্রার্থী হলেন, যিনি নির্বাচনে একবার অংশগ্রহণ করেছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়; কিন্তু জামানত ছিল না।’
বিএনপি প্রতিষ্ঠায় বাবার অবদানের কথা উল্লেখ করে রিটা রহমান বলেন, তাঁর বাবা মশিউর রহমান যাদু মিয়া বিএনপির সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বিএনপির একজন প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর বাবার যে অবদান রয়েছে, এ ক্ষেত্রে তাঁর চেয়ে যোগ্য কাউকে মনোনয়ন না দিলে এটা অন্যায় হবে। রংপুর-৩ আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করেন তিনি।
এর আগে দুপুরে রিটা রহমানকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মীরা। নগরের টাউন হল চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে পুলিশ লাইনস, সুরভী উদ্যান মোড় প্রদক্ষিণ শেষে টাউন হল চত্বরে এসে শেষ হয়।