ভারতের ২ রাজ্যে উপনির্বাচনে মাথাচাড়া দিল আম আদমি পার্টি
Published: 23rd, June 2025 GMT
দিল্লি বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর পাঞ্জাব ও গুজরাটে ঘুরে দাঁড়াল আম আদমি পার্টি (আপ)। ভারতের চার রাজ্যের পাঁচ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তারা দুটি আসন জিতল বিজেপি ও কংগ্রেসকে হারিয়ে। গুজরাটের বিষবদার বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে তাদের জয় যতটা কৃতিত্বের, ততটাই কৃতিত্বের পাঞ্জাবের লুধিয়ানা আসনটি ধরে রাখা।
মাত্র কয়েক মাস আগে বিজেপির কাছে দিল্লির ক্ষমতা হারানো এবং একের পর এক দুর্নীতির মামলায় জেরবার আপকে হতোদ্যম মনে করা হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু গুজরাট ও পাঞ্জাবের দুটি আসন জয় সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করল। ওই দুই কেন্দ্রই অবশ্য আপের দখলে ছিল।
গুজরাটে আপের মূল প্রতিপক্ষ ছিল বিজেপি। পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় কংগ্রেস। গত লোকসভা ভোটে আম আদমি পার্টি ইন্ডিয়া জোটের শরিক থাকলেও দিল্লি, গুজরাট ও পাঞ্জাবে তারা আলাদা আলাদাভাবে লড়াই করে। গুজরাটে বিজেপি ভেবেছিল, দুর্বল আপের কাছ থেকে বিষবদার কেন্দ্রটি ছিনিয়ে নেবে। কিন্তু আপ নেতা ইটালিয়া গোপাল বিজেপিকে ভুল প্রমাণ করেন। বিজেপি অবশ্য কাডি আসনটি ধরে রাখে কংগ্রেসকে হারিয়ে।
আপ যেমন তাদের জেতা আসন ধরে রেখেছে, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসও তেমন গুজরাট ও পশ্চিমবঙ্গে তাদের জেতা আসন নতুন করে জিতেছে। সে অর্থে এই উপনির্বাচনে লাভবান একমাত্র কংগ্রেস। কেরালার নিলাম্বুর কেন্দ্রটি তারা ছিনিয়ে নিয়েছে বাম জোটের কাছ থেকে। এ কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী ১১ হাজার ভোটে হারিয়ে দেন সিপিএম প্রার্থীকে। জেতা আসন উপনির্বাচনে হারিয়ে সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন নতুন করে চাপের মুখে পড়লেন।
সিপিএমকে হারিয়ে নিলাম্বুর কেন্দ্রে কংগ্রেসের জয় অন্য এক দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। উপনির্বাচনের প্রচার চলাকালে রাজ্যের কংগ্রেস নেতা ও সংসদ সদস্য শশী থারুরের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। নির্বাচনী প্রচারে শশীর কোনো ভূমিকাই প্রদেশ নেতৃত্ব রাখেনি। শশী থারুরকে নিয়ে বিজেপি যথেষ্ট উৎফুল্ল ছিল। তারা মনে করেছিল, থারুর কোণঠাসা হলে রাজ্যে কংগ্রেস দুর্বল হবে। আবার থারুর দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলে সর্বভারতীয় পর্যায়ে তাদের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে। অথচ দেখা গেল, বিতর্ক সত্ত্বেও সিপিএমের কাছ থেকে কংগ্রেস আসনটি ছিনিয়ে নিল। এ কেন্দ্রে সাড়ে আট হাজার ভোট পেয়ে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন চতুর্থ স্থান।
বিজেপি পর্যুদস্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। তৃণমূলশাসিত এই রাজ্যের নদিয়া জেলার কালীগঞ্জ উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। তাঁর বাবা নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুতে আসনটি খালি হয়েছিল। কালীগঞ্জ দখল করতে বিজেপি চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। কিন্তু বোঝা গেল, তৃণমূলকে হারানোর মতো সাংগঠনিক শক্তি বিজেপি এখনো আয়ত্ত করতে পারেনি।
পাঁচ আসনের এ উপনির্বাচন হলো পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা ও অপারেশন সিঁদুরের পটভূমিতে। বিজেপি নেতারা সর্বত্র প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কঠিন-কঠোর ভাবমূর্তিকে হাতিয়ার করেছিলেন। প্রচারেও তুলে ধরেছিলেন সীমান্তপারের সন্ত্রাস ও কড়া হাতে তার মোকাবিলা। কিন্তু দেখা গেল, উপনির্বাচনে কোথাও তা প্রভাব ফেলতে পারেনি। এমনকি গুজরাটেও নয়।
এর সঙ্গে প্রমাণিত, বাম-কংগ্রেস জোট পশ্চিমবঙ্গে এখনো তৃতীয় শক্তি। বিজেপিকে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থান দখলের মতো শক্তিধর তারা এখনো হতে পারেনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের ২ রাজ্যে উপনির্বাচনে মাথাচাড়া দিল আম আদমি পার্টি
দিল্লি বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর পাঞ্জাব ও গুজরাটে ঘুরে দাঁড়াল আম আদমি পার্টি (আপ)। ভারতের চার রাজ্যের পাঁচ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে তারা দুটি আসন জিতল বিজেপি ও কংগ্রেসকে হারিয়ে। গুজরাটের বিষবদার বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে তাদের জয় যতটা কৃতিত্বের, ততটাই কৃতিত্বের পাঞ্জাবের লুধিয়ানা আসনটি ধরে রাখা।
মাত্র কয়েক মাস আগে বিজেপির কাছে দিল্লির ক্ষমতা হারানো এবং একের পর এক দুর্নীতির মামলায় জেরবার আপকে হতোদ্যম মনে করা হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে তারা দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু গুজরাট ও পাঞ্জাবের দুটি আসন জয় সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করল। ওই দুই কেন্দ্রই অবশ্য আপের দখলে ছিল।
গুজরাটে আপের মূল প্রতিপক্ষ ছিল বিজেপি। পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় কংগ্রেস। গত লোকসভা ভোটে আম আদমি পার্টি ইন্ডিয়া জোটের শরিক থাকলেও দিল্লি, গুজরাট ও পাঞ্জাবে তারা আলাদা আলাদাভাবে লড়াই করে। গুজরাটে বিজেপি ভেবেছিল, দুর্বল আপের কাছ থেকে বিষবদার কেন্দ্রটি ছিনিয়ে নেবে। কিন্তু আপ নেতা ইটালিয়া গোপাল বিজেপিকে ভুল প্রমাণ করেন। বিজেপি অবশ্য কাডি আসনটি ধরে রাখে কংগ্রেসকে হারিয়ে।
আপ যেমন তাদের জেতা আসন ধরে রেখেছে, বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসও তেমন গুজরাট ও পশ্চিমবঙ্গে তাদের জেতা আসন নতুন করে জিতেছে। সে অর্থে এই উপনির্বাচনে লাভবান একমাত্র কংগ্রেস। কেরালার নিলাম্বুর কেন্দ্রটি তারা ছিনিয়ে নিয়েছে বাম জোটের কাছ থেকে। এ কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী ১১ হাজার ভোটে হারিয়ে দেন সিপিএম প্রার্থীকে। জেতা আসন উপনির্বাচনে হারিয়ে সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন নতুন করে চাপের মুখে পড়লেন।
সিপিএমকে হারিয়ে নিলাম্বুর কেন্দ্রে কংগ্রেসের জয় অন্য এক দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। উপনির্বাচনের প্রচার চলাকালে রাজ্যের কংগ্রেস নেতা ও সংসদ সদস্য শশী থারুরের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। নির্বাচনী প্রচারে শশীর কোনো ভূমিকাই প্রদেশ নেতৃত্ব রাখেনি। শশী থারুরকে নিয়ে বিজেপি যথেষ্ট উৎফুল্ল ছিল। তারা মনে করেছিল, থারুর কোণঠাসা হলে রাজ্যে কংগ্রেস দুর্বল হবে। আবার থারুর দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলে সর্বভারতীয় পর্যায়ে তাদের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে। অথচ দেখা গেল, বিতর্ক সত্ত্বেও সিপিএমের কাছ থেকে কংগ্রেস আসনটি ছিনিয়ে নিল। এ কেন্দ্রে সাড়ে আট হাজার ভোট পেয়ে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন চতুর্থ স্থান।
বিজেপি পর্যুদস্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। তৃণমূলশাসিত এই রাজ্যের নদিয়া জেলার কালীগঞ্জ উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। তাঁর বাবা নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুতে আসনটি খালি হয়েছিল। কালীগঞ্জ দখল করতে বিজেপি চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি। কিন্তু বোঝা গেল, তৃণমূলকে হারানোর মতো সাংগঠনিক শক্তি বিজেপি এখনো আয়ত্ত করতে পারেনি।
পাঁচ আসনের এ উপনির্বাচন হলো পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা ও অপারেশন সিঁদুরের পটভূমিতে। বিজেপি নেতারা সর্বত্র প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কঠিন-কঠোর ভাবমূর্তিকে হাতিয়ার করেছিলেন। প্রচারেও তুলে ধরেছিলেন সীমান্তপারের সন্ত্রাস ও কড়া হাতে তার মোকাবিলা। কিন্তু দেখা গেল, উপনির্বাচনে কোথাও তা প্রভাব ফেলতে পারেনি। এমনকি গুজরাটেও নয়।
এর সঙ্গে প্রমাণিত, বাম-কংগ্রেস জোট পশ্চিমবঙ্গে এখনো তৃতীয় শক্তি। বিজেপিকে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থান দখলের মতো শক্তিধর তারা এখনো হতে পারেনি।