তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়নি, তাহলে ইরানের ইউরেনিয়াম গেল কোথায়
Published: 23rd, June 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিমান হামলা চালিয়ে ইরানের প্রধান প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করার দাবি করেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ওই হামলার পর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর চারপাশে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার কোনো স্পষ্ট প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
তাহলে তেহরানের ইউরেনিয়ামের মজুতের কী হলো? যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ক্ষতি আদতে কতটা করতে পেরেছে।
যুক্তরাষ্ট্র গত শনিবার দিবাগত রাতে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। সুপরিকল্পিত ওই অভিযানের মাধ্যমে দেশটি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযানের ফলে এমন এক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক সংঘাত আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যখন গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলা অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল রোববার ভোরে টেলিভিশনে এক ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের হুমকি ঠেকানোর লক্ষ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে।
হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল দেশটির নাতাঞ্জ, ইসফাহান ও ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনা—যেখানে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন বা মজুত রাখা হয় বলে ইসরায়েলসহ পশ্চিমা বিশ্ব দাবি করছে।
পাল্টা হামলার বিরুদ্ধে তেহরানকে সতর্ক করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আজ রাতেই আমি বিশ্বকে জানাতে পারি, এই হামলা ছিল ‘অসাধারণ এক সামরিক সাফল্য’। ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
ইসরায়েল ও ট্রাম্পের দাবি, ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে।
যদিও ইরান বারবার জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও (আইএইএ) ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা নিয়ে ইসরায়েলের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইসরায়েল অনেক দিন ধরেই বলছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র অর্জনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ইরানি কর্মকর্তারা এখনো বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। হয়তো তাঁরা হামলার প্রভাব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছেন।এ দাবির পক্ষে স্পষ্ট কোনো প্রমাণ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দা জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, কূটনীতির সময় পেরিয়ে গেছে এবং তাঁর দেশের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আরাগচি আরও বলেন, ‘এই আগ্রাসনের যে বিপজ্জনক পরিণতি ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে, তার জন্য একমাত্র এবং সম্পূর্ণ দায় ওয়াশিংটনের যুদ্ধবাজ ও আইনের তোয়াক্কা না করা প্রশাসনের।’
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ইরানি কর্মকর্তারা এখনো বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। হয়তো তাঁরা হামলার প্রভাব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছেন।
টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তৃতায় ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থার উপরাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিনি বলেন, ‘আগেই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা খালি করে ফেলা হয়েছিল। সেখানে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কারণ, উপকরণগুলো আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।’
তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ক্ষেত্রে হামলা ইরানের ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা দেখে নেওয়া যাক।
কোন কোন পারমাণবিক ক্ষেত্রে হামলা হয়েছে
গতকাল ট্রাম্প বলেছেন, পূর্ণমাত্রার বোমা বহর দিয়ে ইরানের ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, ইরানি কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন যে ওই তিনটি স্থাপনাই হামলার শিকার হয়েছে।
১.
ফর্দো পারমাণবিক ক্ষেত্রে
ফর্দো একটি ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যা ২০০৬ সাল থেকে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। রাজধানী তেহরানের উত্তরের কোম শহর থেকে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার (৩০ মাইল) দূরে পাহাড়ের গভীরে নির্মিত এই স্থাপনাটি প্রাকৃতিকভাবে আড়ালে অবস্থান করছে। গতকালের হামলার প্রধান লক্ষ্যস্থল ছিল এই ফর্দো পারমাণবিক ক্ষেত্র।
হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কাইন গতকাল এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ফর্দোতে বিস্তৃত ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাসম্পন্ন এমওপিএস বা বাংকারবিধ্বংসী বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। বোমাগুলো বি-টু স্টেলথ বোমারু বিমান থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে।
১৩ হাজার কেজি (২৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড) ওজনের জিবিইউ-৫৭ হলো সবচেয়ে শক্তিশালী বাংকারবিধ্বংসী বোমা, যা মাটির নিচে ৬০ মিটার (২০০ ফুট) পর্যন্ত প্রবেশ করতে সক্ষম এবং সেগুলোতে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪০০ কেজি (৫ হাজার ৩০০ পাউন্ড) বিস্ফোরক উপাদান থাকে। পাশাপাশি, এই বোমারু বিমানগুলো রাডারে ধরা পড়া খুবই কঠিন।
কাইন আরও বলেন, কমপক্ষে দুটি পারমাণবিক স্থাপনায় মোট ১৪টি এমওপি বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এর আগে ১৩ জুন ইসরায়েল ফর্দোতে হামলা চালিয়ে পারমাণবিক ক্ষেত্রটির ওপরের অংশের ক্ষতি করেছে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা মনে করেন, শুধু মার্কিন বাংকারবিধ্বংসী বোমাগুলোই ওই স্থাপনাটির ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম।
যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমানউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ইউর ন য় ম ইসর য় ল গতক ল আরও ব পরম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষাঙ্গনে করোনা মোকাবিলায় অব্যবস্থাপনার পুনরাবৃত্তি নয়
সরকারের অন্যান্য বিভাগ কতটা তৎপর; জানি না। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট আলোচনায় আসার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা প্রশাসনের তৎপরতা স্পষ্ট। ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। শিশুদের নাজুকতা বিবেচনায় শিক্ষা প্রশাসনের এ উদ্যোগ স্বাভাবিক। ২৬ জুন থেকে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষায়ও করোনা বিবেচনায় আসন বিন্যাসে দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা হয়েছে। সতর্কতা জরুরি; কিন্তু ২০২০ ও ’২১ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনা মোকাবিলায় যে অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে, সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী করোনার প্রকোপ বাড়লে প্রায় সব দেশই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছিল। বাংলাদেশে একই বছরের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে এসেছে, করোনার কারণে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বাধিক সময় ছুটি ছিল। বাস্তবসম্মত কারণেই সে সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়েছিল। তখন বিকল্প হিসেবে অনলাইন শিক্ষায় অব্যবস্থাপনা ও সময়ের আলোকে সিদ্ধান্তহীনতা দেখেছি আমরা। শিক্ষা প্রশাসন বাস্তবতার আলোকে অনেক ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে না পারায় ভুক্তভোগী হয়েছে শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের শীর্ষ প্রতিবেদনে উঠে আসে– ‘শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ক্ষত তৈরি করেছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও অটোপাস’ (বণিক বার্তা, ১৬ জুন ২০২৫)। তার মানে, চার বছর পর এসেও আমরা সেই শূন্যতা টের পাচ্ছি। করোনার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেড় বছর বন্ধ থাকার ক্ষতি হয়তো আরও কমানো যেত, যদি এর প্রভাব ও শিখনশূন্যতা নিরূপণ করা যেত।
দীর্ঘ বন্ধের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রাক্কালে সমকালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছিলেন, শিক্ষার্থীর ‘শিখনশূন্যতা’ পূরণই বড় চ্যালেঞ্জ (সমকাল, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১)। তখনই তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, শিখনশূন্যতার প্রভাব হবে দীর্ঘমেয়াদি। সে জন্য তিনি কিছু পরামর্শও দিয়েছিলেন। অথচ তখনও পুরোদমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলেনি। সপ্তাহে এক-দুই দিন শ্রেণি কার্যক্রম চালু ছিল। পুরোপুরি শ্রেণি কার্যক্রম চালু হয় তারও কয়েক মাস পর। অর্থাৎ বলা যায়, দুই বছর বন্ধ থাকার পর ১৫ মার্চ ২০২২ থেকে পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়। তখন আমি শিখনশূন্যতা পরিমাপের ওপর জোর দিয়ে লিখেছিলাম ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাই শেষ কথা নয়’ (২৭ মার্চ ২০২২)। কিন্তু শিখনশূন্যতা পরিমাপে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি শিক্ষা প্রশাসন। এই সময়ে কত শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে, সেই চিত্রও এসেছে যেনতেনভাবে। এ লক্ষ্যে শিক্ষাশুমারির দাবি থাকলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। এসব অব্যবস্থাপনার পুনরাবৃত্তি করা যাবে না।
এখন অবশ্য করোনার সেই ভয়ংকর রূপ নেই। ইতোমধ্যে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কভিডের নতুন ধরনে আতঙ্ক নয়; প্রয়োজন সতর্কতা। শিক্ষা প্রশাসন ইতোমধ্যে যে সতর্কতার কথা বলেছে, এটাই আপাতত যথেষ্ট। ঈদের ছুটি শেষে ২২ জুন সব প্রতিষ্ঠান খুলে গেছে। কিছুদিন পরই অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। এই সময়ে পুরোদমে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয়।
রাজধানীর একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কন্যার পড়াসূত্রে দেখেছি, অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার বিশাল সিলেবাস স্কুল দিয়ে রেখেছে। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তাদের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে এত বড় সিলেবাস শেষ করা কঠিন হবে। কারণ এ বছরের উল্লেখযোগ্য সময়জুড়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বছরের শুরুতে বই সময়মতো না পাওয়ায় যেমন শ্রেণি কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটেছে, তেমনি রমজান মাস, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা মিলে তিন সপ্তাহের গ্রীষ্মকালীন ছুটির কারণে সিলেবাসের অনেক পড়াই বাকি।
২০২০-২১ সালের করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার ক্ষতি থেকে অনেক শিক্ষণীয় রয়েছে। মনে আছে, ২০২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অটো পাস পেয়েছিল। সেই অটো পাসের কারণেই শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে জুলাই অভ্যুত্থানের সময়ে স্থগিত হওয়া ২০২৪ সালের এইচএসসির পরীক্ষায়ও অন্তর্বর্তী সরকার অটো পাস দিতে বাধ্য হয়। করোনার সময়ে এমন সিদ্ধান্ত না নিলে শিক্ষার্থীরা অটো পাসের দাবি করতে পারত না। করোনায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে এখনও অনেক শিক্ষার্থীর মানসিকতায় ঢুকে গেছে– এর কথা বললেই বোধ হয় পরীক্ষা, প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। সে কারণে করোনার দোহাই দিয়েই সম্প্রতি এক দল শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুলেছে। তাদের অযৌক্তিক দাবিতে কর্ণপাত না করায় শিক্ষা প্রশাসনকে ধন্যবাদ।
করোনা মহামারির প্রথম প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অব্যবস্থাপনা হতেই পারে। কিন্তু ২০২১ সালেও তার পুনরাবৃত্তি দেখা যায়। ২০২৫ সালে এসেও তা আমরা প্রত্যাশা করি না। করোনা পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক। তবে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে কী করতে হবে, সেই প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা থাকা উচিত। কেবল করোনাই নয়; অন্য কোনো মহামারি, বন্যা বা এ ধরনের দুর্যোগেও যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার প্রয়োজন হয়, তখন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়ার বিষয়ও ভাবা দরকার। এ ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম কার্যকরভাবে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে সে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া চাই। করোনা এ ক্ষেত্রে ডিভাইস সংকটসহ গ্রাম-শহরের ইন্টারনেট গতির যে পার্থক্য দেখিয়েছে, সে পরিস্থিতিরও তেমন উন্নয়ন ঘটেনি। করোনার সময়ে অটো পাস দেওয়া ও অযৌক্তিকভাবে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা প্রভৃতি সিদ্ধান্তও পর্যালোচনায় আসা উচিত, যাতে ভবিষ্যতের যে কোনো সংকটে শিক্ষা প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারে।
মাহফুজুর রহমান মানিক: জ্যেষ্ঠ
সহসম্পাদক, সমকাল
mahfuz.manik@gmail.com