রমেকে টিটেনাস সংক্রমণের কারণে আইসিইউ বন্ধ
Published: 24th, June 2025 GMT
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে এক রোগীর শরীরে টিটেনাস সংক্রমণ হওয়ায় অন্যান্য রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ রোগীকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। এসময় হাসপাতালের আইসিইউর সেবা বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে এ সময় সংকটাপূর্ণ রোগীর পরিবারের মাঝে আতঙ্ক দেখা যায়।
সোমবার (২৩ জুন) রাত ৯ টার দিকে আইসিইউয়ের ইনচার্জ ডা.
ডিউটিরত ডাক্তার আব্দুল্লাহেল বারী জানান, আইসিইউতে ৯ বেডের মধ্যে ৯ বেডেই রোগী থাকে। এরমধ্যে একজনের মধ্যে টিটেনাস সংক্রমণ আজকে (সোমবার) দুপুরে শনাক্ত হয়। এর আগে সার্জারি ওয়ার্ড থেকে রোগীটি সরাসরি আইসিইউতে ভর্তি হয়। টিটেনাস সংক্রমণ শনাক্তের পরপরই রোগীকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। অন্য রোগীদের করোনার জন্য প্রস্তুত করা আইসিইউ বেডে নেওয়া হয়েছে। সেই সাথে যাদের অবস্থা একটু ভালো তাদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। দুইজন রোগী এখনও ওয়ার্ডে আছে। তাদের কাল (মঙ্গলবার) সকালের মধ্যেই অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হবে।
এদিকে আইসিইউ ওয়ার্ডে টিটেনাস সংক্রমণ হওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পরপরই সংকটাপন্ন রোগীর পরিবারের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপরেই হাসপাতাল থেকেই রোগীদের অবস্থা অনুযায়ী তাদের স্থানান্তর করা হয়।
আইসিইউ’র ইনচার্জ ডা. এবিএম মারুফ হাসান জানান, টিটেনাস সংক্রমণের কারণে এই মুহূর্তে আইসিইউ থেকে রোগী সরানো হয়েছে। রোগী শূন্য আইসিইউ জীবানুমুক্ত করে পুনরায় রোগী ভর্তি করা হবে। ওয়ার্ড জীবানুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত নতুন ভর্তি নেওয়া সম্ভব হবে না।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান জানান, আইসিইউ ওয়ার্ড জীবানুমুক্ত আগামীকালকের (মঙ্গলবার) মধ্যে হবে আশা করছি। এরপর পুনরায় রোগী ভর্তি করা হবে। ওয়ার্ড জীবানুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত করোনার জন্য প্রস্তুতকৃত আইসিইউতে সেবা চলবে রোগীদের। এতে কোন ধরনের সেবা বিঘ্নিত হবেনা বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/আমিরুল/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ট ন স স ক রমণ আইস ইউত
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় পার্টির সম্মেলন কাল, ইসির প্রতিনিধি চেয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে
আগামীকাল শনিবার জাতীয় পার্টির যে সম্মেলন হবে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) অবহিত করে প্রতিনিধি পাঠানোর আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জি এম কাদেরবিরোধী অংশের প্রধান নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আদালতের আদেশ ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক এই কাউন্সিল আয়োজন করেছি। নির্বাচন কমিশনকে আমরা অবহিত করেছি এবং কাউন্সিলে তাদের প্রতিনিধি আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’
কাউন্সিল উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে আজ শুক্রবার সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এ কথা বলেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘এই কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে আমরা জাতীয় পার্টিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। কাউন্সিল করে আমরা গঠনতন্ত্রের বিতর্কিত ধারা বাতিল করে দেব। কোনো একক নেতৃত্বে নয়, জাতীয় পার্টি চলবে যৌথ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে।’
গত ৩০ জুলাই জি এম কাদেরের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করেছে জি এম কাদেরের বিরোধী অংশ। এরপর তিনি শনিবার দলের সম্মেলন আহ্বান করেন।
এর উল্লেখ করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আগামীকাল শনিবার জাতীয় পার্টির সম্মেলন হবে ঐতিহাসিক। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের মধ্যে দীর্ঘদিনের যে বিভেদ রয়েছে, সে বিভেদ শেষ করে দিয়ে বৃহত্তর ঐক্য করে পল্লিবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের জাতীয় পার্টির নবযাত্রা শুরু হবে। এই কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে জাতীয় পার্টির কয়েক হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির কো–চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশের মানুষ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তনের প্রত্যাশা দেখেছিল, সেই প্রত্যাশাকে বাস্তবতায় রূপ দিতে জাতীয় পার্টি নতুন অভিযাত্রায় নেমেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক। তিনি বলেন, ৩০ জুলাই ২০২৫ তারিখে ঢাকার একটি নিম্ন আদালতের আদেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। আদালতের এই আদেশের ফলে পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম এক অনিশ্চয়তা ও স্থবিরতার মুখে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনের সময়সীমার বিধিবিধান এবং জাতীয় পার্টির মতো একটি বৃহৎ ও জনগণনির্ভর রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্বশূন্য বা স্থবির থাকা কোনোভাবেই দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পক্ষে সহায়ক নয়। এই বিবেচনায় দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০(২)(খ) ধারা অনুযায়ী যথাযথ সাংগঠনিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
মুজিবুল হক বলেন, এই ধারার ক্ষমতাবলে ৫ আগস্ট জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম সভা হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় যে দলকে সাংগঠনিক স্থবিরতা থেকে মুক্ত করে গণতন্ত্র, গঠনতন্ত্র এবং নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষায় অতি দ্রুত জাতীয় কাউন্সিল আহ্বান করা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা এবং জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা জরুরি।
মুজিবুল হক আরও বলেন, উপরন্তু দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর মধ্যে যে আশাবাদ, উদ্দীপনা এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা জন্ম নিয়েছে, সেটা বাস্তবায়নে এটি (কাউন্সিল) সময়োচিত ও আবশ্যক পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি আবারও প্রমাণ করেছে, এই দল কেবল ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি, একটি আদর্শভিত্তিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন হতাশা, বিভ্রান্তি ও দিশাহারা ভাব বিরাজ করছে, তখন জাতীয় পার্টি ঐক্যের বার্তা নিয়ে দেশবাসীর সামনে নতুন করে আত্মপ্রকাশ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কো–চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান, শফিকুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাসরুর মওলা, জসিম উদ্দিন ভুইয়া, আরিফুর রহমান খান, সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম, জিয়াউল হক মৃধা, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সরদার শাহজাহান, খান মো. ইসরাফিল, ইয়াকুব হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন, শফিকুল ইসলাম, জামাল রানা প্রমুখ।