Prothomalo:
2025-08-08@13:46:12 GMT

নারীদের স্ট্রোক কেন বেশি হয়

Published: 24th, June 2025 GMT

মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হলে অথবা রক্তনালি ফেটে মস্তিষ্কের ভেতরে রক্তপাত হলে স্ট্রোক হয়। রক্ত চলাচল বিঘ্নিত হলে মস্তিষ্কের কিছু কোষ পুষ্টির অভাবে মরে যায়। সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে ক্ষতি হয় বেশি। তাই স্ট্রোকের লক্ষণ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে।

কেন বেশি ঝুঁকিতে নারীরা

বিশ্বজুড়ে নারীদের স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি পুরুষের তুলনায় বেশি। জীবনযাপনে অনিয়ম ও অসচেতনতার কারণে নারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এ ছাড়া নারীদের কিছু আলাদা ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষ করে ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী নারীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি একই বয়সী পুরুষদের তুলনায় দ্বিগুণ। অথচ এই বয়সের অধিকাংশ নারী স্ট্রোক সম্পর্কে সচেতন নন।

বিষণ্নতায় স্ট্রোকের ঝুঁকি ২৯ শতাংশ বাড়তে পারে। বিষণ্নতায় ভোগা নারীদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা, স্থূলতা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, শরীরচর্চার অভাব থাকে। ফলে ঝুঁকি আরও বাড়ে। তাই ধূমপান ও তামাক, জর্দা, সাদা পাতা ছাড়তে হবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। জীবনযাপনে শৃঙ্খলা আনতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে।

বেশি ঘুমালে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে, আবার কম ঘুমালেও বাড়ে। প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। আবার কম ঘুমও ভালো নয়। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমের সময় যাঁরা নাক ডাকেন, তাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি আরও বেশি।

যাঁদের মাইগ্রেনের প্রবণতা আছে, তাঁদেরও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারীরাই মাইগ্রেনের সমস্যায় বেশি ভোগেন। মাইগ্রেন থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে মাইগ্রেন–প্রতিরোধী ওষুধ সেবন করতে হবে।

বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরানো ও বুকব্যথা—এগুলো হলো অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের লক্ষণ। এ সমস্যায় অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন হয়। এটা রক্ত জমাটবাঁধা, স্ট্রোক, হার্ট ফেইলিউর ও অন্যান্য জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়। যাঁদের এ সমস্যা রয়েছে, তাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি পাঁচ গুণ বেশি।

যাঁরা সহজে রেগে যান ও অপরের প্রতি আগ্রাসী হন, তাঁদের ঘাড়ের ধমনির পুরুত্ব সহনশীল মানুষের তুলনায় বেশি। ধমনির অধিক পুরুত্ব স্ট্রোকের ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ হিসেবে বিবেচিত।

নারীদের মধ্যে লুপাসজাতীয় রোগের প্রবণতা এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির ব্যবহার স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের অন্যতম ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত। নারীদের অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার প্রবণতা রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত করতে পারে।

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে দিনে অন্তত ৪০ মিনিট সময় বের করতে হবে হাঁটা বা ব্যায়ামের জন্য। গবেষণা বলছে, সপ্তাহে স্বাভাবিক গতিতে দুই ঘণ্টা হাঁটলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে। আর দ্রুত হাঁটলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।

ডা.

হারাধন দেবনাথ, অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প রবণত সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্ববাজারে কিছুটা কমেছে সোনার দাম, মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রভাব

গতকাল সোমবার বিশ্ববাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহের লেনদেনে সোনার দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গিয়েছিল। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল স্পট মার্কেটে সোনার দাম কিছুটা কমেছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেজারি বন্ডের সুদহার বৃদ্ধিও মূল্যবান এই ধাতুর দাম কমার পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে। স্পট মার্কেটে গতকাল সোনার দাম কমেছে দশমিক ১ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩৫৯ ডলার ৯৯ সেন্টে। তবে এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে মূল্যবান ধাতুটির দাম দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি মূল্য পৌঁছেছে ৩ হাজার ৪১৩ ডলার ৪০ সেন্ট।

স্যাক্সো ব্যাংকের হেড অব কমোডিটি স্ট্র্যাটেজিস্ট ওলে হ্যানসেন বলেন, ‘বাজারে গত শুক্রবার সোনার দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ার পর এই দরপতন স্বাভাবিক। এদিকে সুদহার কিছুটা বেড়েছে এবং শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাজারে সোনার দাম সীমিত পরিসরে ওঠানামা করছে। তবে মূল্যবান ধাতুটির দাম যদি আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৪৩০ ডলার ছাড়িয়ে যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্রয়ের প্রবণতা বাড়বে। এতে সোনার দাম নতুন করে বাড়তে পারে।

অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর মধ্যে স্পট মার্কেটে গতকাল রুপার দাম বেড়েছে দশমিক ৯ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য পৌঁছেছে ৩৭ ডলার ৩৪ সেন্টে। প্লাটিনামের দাম দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২০ ডলার ১৯ সেন্টে। গতকাল প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। আউন্সপ্রতি দাম হয়েছে ১ হাজার ২০৫ ডলার ৯৩ সেন্ট।

এদিকে সোনার দাম নিয়ে দেওয়া পূর্বাভাস সংশোধন করেছে সিটি গ্রুপ। গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাংকটি জানায়, আগামী তিন মাসে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ ডলারে উঠতে পারে। এর আগে দেওয়া প্রাক্কলনে যা ছিল আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩০০ ডলার।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিসংক্রান্ত দুর্বল পূর্বাভাসের কারণে সোনার দাম নিয়ে দেওয়া প্রাক্কলন সংশোধন করা হয়েছে। সিটি গ্রুপ বলছে, ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ও শুল্ক–সম্পর্কিত মূল্যস্ফীতি ওপরের দিকে থাকবে। এ ছাড়া ডলারের বিনিময় হার কমে যাওয়ায় সোনার দাম নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে।

চলতি বছর বিশ্ববাজারে সোনার দাম ২৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলছে, চলতি বছর সোনার দাম বাড়তি থাকবে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডব্লিউজিসি জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সোনার মূল্যবৃদ্ধির পেছনে যেসব কারণ আছে, সেগুলো হলো ডলারের বিনিময় হার কমে যাওয়া, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, বিনিয়োগকারীদের চাহিদা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনা বেড়ে যাওয়া। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিশেষ করে স্থবিরতা বা মন্দার ঝুঁকি বাড়লে ভবিষ্যতে এই ধাতুর চাহিদা আরও বাড়তে পারে।

বিশ্বে সোনাকেই সবচেয়ে স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য পণ্য হিসেবে ধরা হয়। বলা হয়, একমাত্র সোনার দামেই সাধারণত বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা দেখা যায় না। সোনা কিনে রাখলে লোকসানের ভয় নেই বলা যায়। এ কারণেই সোনার প্রতি সবার এত আকর্ষণ। ৫০ বছর আগে কেউ সোনা কিনে রাখলেও, তা ভালো বিনিয়োগ হিসেবেই বিবেচিত। শেয়ারবাজার, ডলার বা অন্য কিছু এই নিশ্চয়তা দেয় না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বনে মুক্ত করে দিলেও উড়ে যায়নি দুই রাজধনেশ, নেওয়া হলো সাফারি পার্কে
  • বিশ্ববাজারে কিছুটা কমেছে সোনার দাম, মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রভাব