আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রে মানদণ্ড থাকতে হবে: টবি ক্যাডম্যান
Published: 24th, June 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রে মানদণ্ড থাকতে হবে, যাতে তিনি যথাযথ ও স্বাধীনভাবে ট্রাইব্যুনালের সামনে আসামির প্রতিনিধিত্ব করেন। শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান এ কথা বলেন।
সম্প্রতি আদালত অবমাননার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ‘স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল’ (রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী) হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল গনিকে (টিটু) নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ উঠেছে, আমিনুল গনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়েছিলেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টবি ক্যাডম্যান বলেন, কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে—এটি আদালতের বিষয়, প্রসিকিউশনের নয়। অবশ্যই এ ক্ষেত্রে মানদণ্ড থাকতে হবে। বিচারকদের মানদণ্ডের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে, এটা তাঁদের দায়িত্ব। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যাতে তিনি ট্রাইব্যুনালের সামনে যথাযথ ও স্বাধীনভাবে যেকোনো আসামির প্রতিনিধিত্ব করেন।
আপনি কি মনে করেন, তিনি (আমিনুল গনি) এই পদের জন্য যথার্থ, এ প্রশ্নের জবাবে টবি ক্যাডম্যান বলেন, এটি প্রসিকিউশনের বিষয় নয়। তিনি কী মনে করছেন, সে বিষয় নয় এটি। এটি বিচারকদের বিষয়। যদি কোনো আসামি রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়ে সন্তুষ্ট না থাকেন, তাহলে ট্রাইব্যুনালের কাছে বিষয়টি তাঁকে উত্থাপন করতে হবে।
যদি কোনো আসামি পলাতক থাকেন, তাহলে তিনি কীভাবে নিজের অসন্তুষ্টির কথা ট্রাইব্যুনালকে জানাবেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে টবি ক্যাডম্যান বলেন, এখানে দুটি বিষয়। প্রথমত, কোনো আসামি ট্রাইব্যুনালে আসতে চান না, কিন্তু তাঁর অধিকার রক্ষায় আইনজীবী নিয়োগ দিতে চান, সেটি একটি বিষয়। আবার যদি কোনো আসামি বিচার প্রক্রিয়া বর্জন করেন, তখন বিচারকদের দায়িত্ব থাকে সেই আসামির অধিকার রক্ষায়, যাতে তিনি ন্যায়বিচার পান। তখন আসামির অধিকার রক্ষায় যোগ্য আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি বিচারকদের বিবেচ্য হয়ে দাঁড়ায়। তিনি এর বেশি বলতে পারবেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব চ রকদ র আস ম র প ম নদণ ড
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চাইল বিবিসি, ক্ষতিপূরণ দিতে নারাজ
প্যানোরামা পর্বের একটি তথ্যচিত্রের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। ওই তথ্যচিত্রটিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ভাষণের অংশগুলো কেটে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমটি ট্রাম্পের ক্ষতিপূরণের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। খবর বিবিসির।
বিবিসি করপোরেশন বলেছে, তথ্যচিত্রটি সম্পাদনের ফলে ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি সহিংস পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন–এমন ভুল ধারণা’ তৈরি হয়েছিল। তারা বলেছে, ২০২৪ সালের সেই অনুষ্ঠানটি আর দেখাবে না।
আরো পড়ুন:
বিটিভিকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা
এফএম রেডিও নীতিমালা লঙ্ঘন করছে কি না দেখতে রেগুলেটরি কমিটি
অন্যদিকে, ট্রাম্পের আইনজীবীরা বিবিসিকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, গণমাধ্যমটি যদি ক্ষমা না চায়, বক্তব্য প্রত্যাহার না করে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষতিপূরণ না দেয়, তবে তারা এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করবেন।
এই বিতর্কের জের ধরে গত রবিবার বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বার্তা বিভাগের প্রধান ডেবোরা টার্নেস পদত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিবিসির সংশোধন স্পষ্টীকরণ বিভাগ তথ্যচিত্রটি কীভাবে সম্পাদনা করা হয়েছিল তা জানায়।
এক বিবৃতিতে তারা বলে, আমরা স্বীকার করি, আমাদের সম্পাদনা অনিচ্ছাকৃতভাবে এই ধারণা তৈরি করেছে–আমরা ভাষণের একটি একক, একটানা অংশ দেখাচ্ছি, বরং ভাষণের বিভিন্ন অংশ থেকে নেওয়া নির্বাচিত অংশ নয় এবং এর ফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি সহিংস পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন, এমন ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে।
এদিকে বিবিসির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিবিসির আইনজীবীরা রবিবার পাওয়া এক চিঠির জবাব দিয়েছেন ট্রাম্পের লিগ্যাল টিমের কাছে। তারা বলেছে, বিবিসি চেয়ারম্যান সমীর শাহ আলাদাভাবে হোয়াইট হাউসে একটি ব্যক্তিগত চিঠি পাঠিয়েছেন, যেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি এবং করপোরেশনটি ৬ জানুয়ারি ২০২১ এর প্রেসিডেন্টের ভাষণের সম্পাদনার জন্য দুঃখিত।
তারা আরো বলেছেন, ভিডিও ক্লিপটি যেভাবে সম্পাদনা করা হয়েছিল, তার জন্য বিবিসি আন্তরিকভাবে দুঃখিত হলেও এখানে মানহানির কোনো ভিত্তি আছে, এমন ধারণার বিষয়ে সম্মত নয়।
ট্রাম্পের ভাষণে তিনি বলেছিলেন, “আমরা ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাব এবং আমরা আমাদের সাহসী সিনেটর, কংগ্রেসম্যান ও নারীদের জন্য উল্লাস করব।” ভাষণের প্রায় ৫০ মিনিটেরও বেশি সময় পরে তিনি বলেছিলেন, “এবং আমরা লড়াই করি। আমরা জান দিয়ে লড়াই করি।”
প্যানোরামা অনুষ্ঠানটির ক্লিপে দেখানো হয়েছে ট্রাম্প বলছেন, “আমরা ক্যাপিটলের দিকে হেঁটে যাব... এবং আমি তোমাদের সাথে সেখানে থাকব। এবং আমরা লড়াই করি। আমরা জান দিয়ে লড়াই করি।”
বিবিসির ওই তথ্যচিত্রটি প্রচারের পর ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, তার ভাষণকে ‘খুন’ করা হয়েছে এবং এটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা দর্শকদের ‘প্রতারিত’ করেছে।
ট্রাম্পের আইনি দলের কাছে লেখা চিঠিতে বিবিসি পাঁচটি প্রধান যুক্তি তুলে ধরে বলেছে, কেন তারা মনে করে তাদের কোনো মামলায় জবাবদিহি করার প্রয়োজন নেই।
প্রথমত, তারা বলেছে, বিবিসির কাছে প্যানোরামা পর্বটি তাদের মার্কিন চ্যানেলগুলোতে বিতরণ করার অধিকার ছিল না এবং তারা তা করেওনি। তথ্যচিত্রটি বিবিসি আইপ্লেয়ারে ‘রেস্ট্রিকটেড’ ছিল যুক্তরাজ্যের দর্শকদের জন্য।
দ্বিতীয়ত, তারা বলেছে যে তথ্যচিত্রটি ট্রাম্পের কোনো ক্ষতি করেনি, কারণ তিনি এর পরপরই পুনরায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তৃতীয়ত, তারা বলেছে যে ক্লিপটি ভুল বোঝানোর জন্য ডিজাইন করা হয়নি, বরং একটি দীর্ঘ বক্তৃতা সংক্ষিপ্ত করার জন্য করা হয়েছিল এবং সম্পাদনাটি বিদ্বেষবশত করা হয়নি।
চতুর্থত, তারা বলেছে যে ক্লিপটি কখনোই বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা করার জন্য ছিল না। বরং, এটি এক ঘণ্টার একটি অনুষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১২ সেকেন্ডের অংশ ছিল, যেখানে ট্রাম্পের সমর্থনে প্রচুর কণ্ঠস্বরের শব্দ ছিল।
পরিশেষে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানহানির আইন অনুসারে জনস্বার্থ এবং রাজনৈতিক বক্তব্যের বিষয়ে একটি মতামতকে ব্যাপকভাবে সুরক্ষা দেওয়া হয়।
ঢাকা/এসবি