সাগরের তীর থেকে... জীনাত রেহানার গানে জীবনের আলো
Published: 6th, July 2025 GMT
জন্মদিনের কেক আনা হয়েছে। কেকের ওপর জ্বলছে মোমবাতি। হাস্যোজ্জ্বল মুখে মানুষটা এগিয়ে এসে পড়বেন রবীন্দ্রনাথের কবিতা—‘তোমরা রচিলে যারে/ নানা অলংকারে/ তারে তো চিনি নে আমি,/ চেনেন না মোর অন্তর্যামী/ তোমাদের স্বাক্ষরিত সেই মোর নামের প্রতিমা।’ পরক্ষণেই গেয়ে উঠবেন নিজের জনপ্রিয় গান ‘সাগরের তীর থেকে’। গান শেষে সমুদ্রের শান্ত ঢেউয়ের মতো থেমে যাবেন। ডেকে নেবেন প্রিয় মানুষদের, কেক কাটবেন। ‘শুভ জন্মদিন’ আর করতালির শব্দে মুখর হবে চারপাশ।
এই দৃশ্য হয়তো হতোই, যদি তিনি আজ বেঁচে থাকতেন। কিন্তু সে সুযোগ আর নেই। ‘সাগরের তীর থেকে’ গানের শিল্পী জীনাত রেহানা ২ জুলাই (মঙ্গলবার) না–ফেরার দেশে চলে গেছেন। ‘জন্মিলে মরিতে হবে’—এই চিরন্তন সত্য মেনে নিয়েই সবাইকে চলে যেতে হয়। থেকে যায় কর্ম, সৃষ্টি আর মানুষের ভালোবাসা। জীনাত রেহানাও রয়ে যাবেন তাঁর গানে, সৃষ্টিতে, স্মৃতিতে।
তবে যে গান তাঁকে খ্যাতি আর পরিচিতি এনে দিয়েছিল, সেই গানের সঙ্গে তাঁর শৈশবের স্বপ্নের খুব একটা সম্পর্ক ছিল না। গান ভালো লাগত, শিখতেনও, তবে এর পেছনে নাম, যশ, খ্যাতির কোনো তাড়া ছিল না তাঁর।
গানের প্রতি ভালোবাসা তাঁর পারিবারিক উত্তরাধিকার। মা জেব-উন-ন্নেসা জামাল ছিলেন গীতিকার ও লেখক। খালা ছিলেন বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আঞ্জুমান আরা বেগম। ফরিদা ইয়াসমিনসহ সেই সময়ের খ্যাতিমান শিল্পীদের গানও মনোযোগ দিয়ে শুনতেন জীনাত রেহানা। নিজেও গান গাইতেন। তাঁর সংগীতযাত্রার মোড় ঘুরেছিল বেতারে অডিশন দিতে গিয়ে। অডিশন বোর্ডের সদস্য ছিলেন আবদুল আহাদ ও সমর দাশ। কিশোরী বয়সেই তাঁদের মন জয় করে তালিকাভুক্ত শিল্পী হন জীনাত রেহানা। ১৯৬৪ সাল থেকে শুরু হয় তাঁর বেতারযাত্রা।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সরকার যেদিকে যাবে, পরিস্থিতি সেদিকে ঘুরবে
আট মাস ধরে ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছে। সর্বশেষ জুলাই সনদ সাক্ষর হয়েছে। এর মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণের দায়িত্ব চলে গেছে সরকারের কোর্টে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে পারবে কি না, হ্যাঁ বা না—যেটাই হোক, সেটা জানিয়ে দেওয়া দরকার। গণভোটের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেটি আগে নাকি পরে হবে, সেটিও জানিয়ে দেওয়া দরকার সরকারের। তা না করে সরকার যে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে বলল, এটা বিবেচনাপ্রসূত বলে মনে হয়নি।
আরও পড়ুনসরকারের সিদ্ধান্ত না মানলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠবে৩৮ মিনিট আগেসবাই সংস্কার চায়, তবে এর পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। এটি বড় বিভাজন নয়। বরং সংস্কার না করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংস্কার নিয়ে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, সেটিতে ধাক্কা খাবে।
এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বড় দলগুলোর জোরালো অবস্থান দরকার। সংস্কার বাস্তবায়ন বিষয়ে সরকারকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সরকার চাইলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে আলোচনা করতে পারে। দেশের স্বার্থে প্রয়োজনে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুনন্যূনতম ঐক্য না হলে নির্বাচন শঙ্কায় পড়বে৩ ঘণ্টা আগেদেশের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক জায়গায় আনা ছিল সরকারের সফলতা। কিন্তু জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পর বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। জটিলতা তৈরি হয়েছে, এটা অপ্রত্যাশিত। সরকার আসলে যেদিকে যাবে, পরিস্থিতি সেদিকে ঘুরবে। সরকার নির্বাচনের তফসিলের দিকে গেলে সবাই সেদিকে যাবে। এ নিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে বলে মনে হয় না। কারণ, নির্বাচন পেছালে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এটি দলগুলোও জানে।
নুরুল হক: সভাপতি, গণ অধিকার পরিষদ
আরও পড়ুনচালকের আসনে সরকার, সিদ্ধান্তও তাদের দিতে হবে৪ ঘণ্টা আগে