এস্তেভাও উইলিয়ান: ব্রাজিলকে বিদায় বললেন ৪৯১ কোটি টাকার রত্ন
Published: 6th, July 2025 GMT
ছেলেটির আদর্শ নেইমার, কিন্তু খেলার ধাঁচ লিওনেল মেসির মতো।
নাইকি তার সঙ্গে স্পনসরচুক্তি করে যখন, তার বয়স মাত্র ১০ বছর। পেলে–গারিঞ্চা থেকে রোনালদো–রোনালদিনিওদের দেশের ফুটবল ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে নাইকির সঙ্গে চুক্তি করা নিশ্চয়ই চাট্টিখানি কথা নয়! ভেতরে অবশ্যই কিছু থাকতে হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক এ প্রতিষ্ঠান যে ভুল করেনি, সেটা চার বছর পরই বুঝিয়ে দেয় ছেলেটি। যোগ দেয় ব্রাজিলের অন্যতম বড় ক্লাব পালমেইরাসে। পেশাদার ফুটবলে অভিষেক দুই বছর পরই, মাত্র ১৬ বছরে!
আরও পড়ুনব্রাজিলের ক্লাবকে হারিয়ে সেমিফাইনালে আবার ব্রাজিলের ক্লাবই পেল চেলসি ২১ ঘণ্টা আগেপ্রতিভাবান ফুটবলার–প্রসবাভূমি ব্রাজিলে তাকে প্রথম আবিষ্কার করেছিল ক্রুজেইরোর স্কাউটরা। তাদের অনূর্ধ্ব–৯ দলে প্রথম সবার নজরে পড়ে ছেলেটি। ক্রুজেইরোর স্কাউটরা পাকা জহুরির মতো রত্ন চিনতে পেরে তার পরিবারকে সাও পাওলো থেকে বেলো হরাইজন্তেতে (ক্রুজেইরো সেখানকার ক্লাব) নিয়ে গিয়েছিল। এস্তেভাও উইলিয়ানের বাকিটা এত দিনে প্রায় সবারই জানা।
ক্রুজেইরোর একাডেমিতে সকালে যেতে হতো স্কুলে। দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর অনুশীলন, কখনো আবার একটু অবসর, তখন করতে হতো স্কুলের হোমওয়ার্ক। আর সন্ধ্যায় স্কুলের ফুটসাল দলের হয়ে অনুশীলন। ১৩ বছর বয়সে এস্তেভাও ফুটবল কিংবা ফুটসালে এতটাই ভালো ছিল যে স্কুলের অনূর্ধ্ব–১৫ দলের কোচ আন্তোনিও অগাস্তো তাকে বড়দের সঙ্গে খেলাতে নিজের দলে ডেকে নেন, ‘তার বয়সে যেটা স্বাভাবিক, সে তার চেয়েও অনেক এগিয়ে। উদ্ভাবনী বুদ্ধির পাশাপাশি খুব তীক্ষ্ণ, বলের ওপর দখলও খুব ভালো—অনেকটাই মেসির খেলার মতো।’
ব্রাজিল ছেড়ে ইউরোপে এস্তেভাও কতটা ভালো করতে পারবেন তা সময়ই বলে দেবে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
উপাচার্যরা দায়িত্ব চেয়ে নেননি, হাতে-পায়ে ধরে তাদের দায়িত্ব দিয়েছি
উপাচার্য হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তারা দায়িত্ব চেয়ে নেননি, হাতে-পায়ে ধরে তাদের দায়িত্ব দিয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার।
তিনি বলেছেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের বলতে চাই, শিক্ষকদের মর্যাদাক্ষুন্ন বা মর্যাদাহানি হয় এমন কাজ তোমরা করো না। নিজেদের দাবি আদায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে করো। এই সময়ে যারা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তারা দায়িত্ব চেয়ে নেননি। আমরা হাতে-পায়ে ধরে তাদের দায়িত্ব দিয়েছি। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ধৈর্যশালী ও সহনশীল হতে হবে।”
রবিবার (৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎযাপন উপলক্ষে সিনেট ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
আশুরা উপলেক্ষে শেকৃবিতে শিবিরের গণসেহরি
৭৩ বছরে রাবি: গবেষণা-উচ্চশিক্ষাসহ চাকরি ক্ষেত্রে গৌরবময় যাত্রা
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিগত বছরগুলোতে কি হয়েছে আমরা জানি। শিক্ষক নিয়োগের বদলে ভোটার নিয়োগ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মেধার বিকাশ ও শিক্ষা অর্জনের জন্য এসেছি। সেখানে নিজেরা দলাদলি করলে নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় চরমভাবে ব্যর্থ হবে। শিক্ষকদের কার্যক্রম যেন পরিবেশকে নষ্ট না করে, সে দায়িত্ব শিক্ষকদের নিতে হবে।”
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বদলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কে কী লিখছে, তা নজরদারি করতেন। শিক্ষক হিসেবে কত নিচে আমরা নেমেছি, এটা তার বাস্তব উদাহরণ। ড. জোহা (সাবেক প্রক্টর, রাবি) পুলিশের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে ঢাবি উপাচার্যের ভবনে একটি ঘটনা ঘটে, তখন উপাচার্য পুলিশকে নির্দেশ দেন ছাত্রদের গুলি করার জন্য।”
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিচার করি। অপরাজনীতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে আছে। শিক্ষক নিয়োগেও পদে পদে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। সামনে আবারো শিক্ষক নিয়োগ না হয়ে ভোটার নিয়োগ হতে পারে। তাই আপনাদের পরিষ্কার করতে হবে যে, আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ দেখবেন নাকি ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ দেখবেন।”
তিনি বলেন, “দলীয় স্বার্থ দেখলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী আছে। এই সংখ্যা আরো বাড়াতে হবে। আমাদের ছেলেরা যে রক্ত দিয়েছে তার দায় আমাদের শোধ করতে হবে। এই জায়গায় আমরা বেইমানি করলে আমরাই সবচেয়ে বড় বেইমান।”
সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইমেরিটাস এ কে এম আজহারুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মতিয়ার রহমান।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলন করা হয়। এসময় বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা অবমুক্ত করে দিবসটির উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা। এরপর শোভাযাত্রা ও প্রধান অতিথি কর্তৃক বৃক্ষরোপণ করা হয়। এছাড়া বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী