আমরা ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া শুরু করেছিলাম বাংলা ভাষার লেখকদের মূল্যায়ন করে সম্মান জানানোর প্রয়াসে শামিল হওয়ার জন্য। আমরা বিশ্বাস করি লেখক কখনও পুরস্কারের আশায় লেখেন না। তারা লেখেন অন্তর্গত তাগিদে, দেশ ও সমাজ সংস্কারে জাতির মানস গঠনে কিছু ভূমিকা রাখার জন্য। এর পরও একটি পুরস্কার ও স্বীকৃতি উৎসাহ দিয়ে একজন লেখককে নিয়ে যেতে পারে অনন্য উচ্চতায়, উদ্বুদ্ধ করে বারবার নিজেকে অতিক্রম করতে। এই প্রক্রিয়ায় সমৃদ্ধ হয় সাহিত্য। ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার প্রদানে সম্পৃক্ত হওয়া দেশ ও সমাজ গঠনে এবং বাংলা সাহিত্যকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার পূরণে আমাদের একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ইতোমধ্যে দেশের সাহিত্য অঙ্গনে একটা অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ স্থান দখলের পাশাপাশি সেরা সাহিত্য পুরস্কারে সম্মান ও স্বীকৃতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
এ পুরস্কারের মাধ্যমে আমরা মানুষের মেধা, মননশীলতা, স্থিতিশীলতা বিকাশে কিছুটা হলেও অবদান রেখে যেতে চাই। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের কর্মকর্তারা চারটি বুক ক্লাব তৈরি করেছেন। এই ক্লাবের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে পাঠচক্র করেন। নিয়মিত বই নিয়ে আলোচনা করেন। ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মীদের সৃজনশীলতা বিকাশে তারা তৈরি করেছেন আবৃত্তি ও সংগীত ক্লাব। নিজেদের লেখা দিয়ে তারা একটি সংকলনও প্রকাশ করেছেন।
আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন, আমরা এ বছর যে পুরস্কার প্রদান করছি এটি ২০২৩ সালের প্রায় চারশটি বই থেকে বিজয়ী নির্বাচিত করেছি। এই গুরুদায়িত্ব পালনের জন্য আমি, বিচারকমণ্ডলীর সদস্য লেখক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস, সাহিত্যিক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী ও কবি আবিদ আনোয়ারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা ২০২৩ সালে প্রকাশিত বইয়ের পুরস্কার ২০২৫ সালে এসে দিচ্ছি। কারণ, করোনাকালীন এক বছর পুরস্কার প্রদানে বিরতি ঘটেছিল। সেই ব্যাকলক এখনও রয়ে গেছে। এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য আমরা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে প্রকাশিত দুই বছরের পুরস্কার ২০২৬ সালে একসঙ্গে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি। আমি আশা করছি, সমকাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আমার ব্যক্তিগত একটা অনুভূতি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। আপনারা শুনেছেন বা জানেন আমি লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত এবং আমার লেখা কয়েকটি বইও আছে। পুরস্কারও পেয়েছি কয়েকটি। বাংলা একাডেমি ছাড়াও আইএফআইসি সাহিত্য পুরস্কার এবং সিটি ব্যাংক-আনন্দ আলো পুরস্কার পেয়েছি। তবে ব্র্যাক ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হওয়ার যোগ্যতা রাখি না। আমি শুনেছিলাম ২০২১ সালে সম্ভবত আমার একটি বই আমার পক্ষ থেকে পুরস্কারের জন্য জমা দেওয়া হয়েছিল এবং নির্বাচিত হয়েছিল কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংকের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততার টেকনিক্যাল কারণে বইটি পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। যাই হোক, এতে আমার কোনো দুঃখ নাই। এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হওয়ার চেয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের মতো একটি শক্তিশালী ও সত্যিকার কমপ্ল্যানড প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থাকতে পারাকে আমি আরও বড় পুরস্কার বলে মনে করি। আমি ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ সালের বিজয়ীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আশা করছি আমাদের এই সম্মাননা আপনাদের অনুপ্রাণিত করবে। আমরা চাই আপনাদের লেখার জাদু আরও বিকশিত হোক। পাঠক আপনাদের লেখা পড়ে আরও উৎসাহিত হোক এবং আরও সমৃদ্ধ হোক আমাদের বাংলা সাহিত্য। আজ যেই বইগুলো পুরস্কৃত হয়েছে আশা করি অনেকেই সেই বইগুলো পড়েছেন। যাদের পড়া হয়নি তারা পড়লে আমরা এই পুরস্কার প্রদানকে সার্থক মনে করব। আমরা আশা করব আমাদের সন্তানরাও যেন বই পড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। শিশুদের ভবিষ্যৎ গঠনে বই পড়ার যে কোনো বিকল্প নেই, এই বোধ ওদের মধ্য জাগ্রহ করে তুলতে হবে আমাদের। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ক র প রস ক র র র র জন য আপন দ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে খতিবকে কুপিয়ে জখম

চাঁদপুর শহরের প্রফেসরপাড়া মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নুরুর রহমানকে (৭৫) কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেনকে (৪০) ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।

আহত মাওলানা নুরুর রহমানকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ মিয়া বলেন, শুক্রবার মাওলানা নুরুর রহমান জুমা শেষে মসজিদে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মসজিদের পাশের সবজি দোকানি বিল্লালও সেখানে ছিলেন। হঠাৎ বিল্লাল একটি চাপাতি নিয়ে মাওলানা নুরুর রহমানের শরীরে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন বিল্লালকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

এ ব্যাপারে মাওলানা নুরুর রহমানের ভায়রা অলিউর রহমান বলেন, জুমার নামাজের আগে আলোচনার সময় বিল্লাল হোসেন বাধার সৃষ্টি করেন। এরপর নামাজ শেষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. বাহার মিয়া বলেন, ‘আমরা অভিযুক্তকে আটক করেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ