বিবৃতিদাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শাস্তি দাবি সাদা দলের
Published: 11th, July 2025 GMT
‘মব সন্ত্রাস’ বন্ধে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে গত বুধবার বিবৃতি দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ জন শিক্ষক। তাদের ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ ও ‘গণহত্যার হুকুমদাতার পৃষ্ঠপোষক’ আখ্যা দিয়ে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাদা দলের শিক্ষকেরা এ দাবি জানান।
বৈঠক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা এসব চিহ্নিত দোসরদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। আমরা ভিসি স্যারকে জানিয়েছি, বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে থাকা ফ্যাসিস্ট দোসরদের মধ্যে যারা এখনও বহাল আছেন, তাদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে। যারা শিক্ষার্থী ও নিরীহ মানুষের হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের উচ্চতর পদে পদোন্নতি দেওয়া উচিত নয়।’
আরও পড়ুন‘মব সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ শিক্ষকের বিবৃতি০৯ জুলাই ২০২৫সাদা দলের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার বলেন, ‘সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি রেকর্ডে আপনারা দেখেছেন, জুলাই আন্দোলনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার। এই গণহত্যার হুকুমদাতা ও তার পৃষ্ঠপোষকদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর যেসব চিহ্নিত দোসর রয়েছে, তাঁরা গতকাল (বুধবার) একটি বিবৃতি দিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং এদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
এই দাবিতে আগামী রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সাদা দলের পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচির কথা জানান আবুল কালাম সরকার।
সাদা দলের এই যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, ‘গত বছরের ৩ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষক গণভবন থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যাকাণ্ডে উৎসাহিত করেছেন ও পরামর্শ দিয়েছেন, নিজেদের ‘‘বুদ্ধিজীবী’’ পরিচয়ে তাকে সহায়তা করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ