সফটওয়্যারে থাকা ম্যালওয়্যার শনাক্ত করতে সক্ষম এআই তৈরি করেছে মাইক্রোসফট
Published: 7th, August 2025 GMT
মানুষের সহায়তা ছাড়াই সফটওয়্যার বিশ্লেষণ করে সেগুলোতে ম্যালওয়্যার রয়েছে কি না, তা শনাক্ত করতে সক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) তৈরি করেছে মাইক্রোসফট। ‘প্রজেক্ট আয়ার’ নামের এই এআই সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যার ফাইলের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ কি না, তা শনাক্ত করতে পারে বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, প্রচলিত নিরাপত্তা সফটওয়্যারে ম্যালওয়্যার শনাক্তের পদ্ধতির তুলনায় প্রজেক্ট আয়ারের কাজের ধরন আলাদা। এআইভিত্তিক এই সিস্টেম কোনো ফাইলের উৎস, কাঠামো বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো তথ্য না জেনেই সেটিকে সম্পূর্ণভাবে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করতে পারে। সফটওয়্যার বিশ্লেষণে এটি বর্তমানে সর্বোচ্চ মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত পদ্ধতি। বর্তমানে সাইবার হামলা ও প্রতিরোধ—উভয় ক্ষেত্রেই এআই ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। এ বাস্তবতায় স্বয়ংক্রিয় ও গভীর বিশ্লেষণে সক্ষম, এমন প্রযুক্তি নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রজেক্ট আয়ার নিয়ে চালানো এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, জটিল ম্যালওয়্যারও শনাক্ত করতে পারে মাইক্রোসফটের এআই। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ম্যালওয়্যার হামলা ঠেকানো সম্ভব। মাইক্রোসফট জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক পর্যায়ে এই প্রযুক্তি ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ক্ষতিকর সফটওয়্যার শনাক্ত করতে পেরেছে। ভুলভাবে নিরাপদ ফাইলকে হুমকির উৎস হিসেবে শনাক্ত করার হার ছিল মাত্র ২ শতাংশ।
পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া প্রজেক্ট আয়ার মাইক্রোসফটের বৃহত্তর নিরাপত্তা পরিকল্পনা ‘সিকিউর ফিউচার ইনিশিয়েটিভ’–এর অংশ। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক নিরাপত্তার ত্রুটি ও তথ্য ফাঁসের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর প্রতিষ্ঠানটি তাদের পণ্যে নিরাপত্তা জোরদারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। মাইক্রোসফট রিসার্চ, মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার ও মাইক্রোসফট ডিসকভারি অ্যান্ড কোয়ান্টামের মতো মাইক্রোসফটের একাধিক ইউনিট এই প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করেছে। প্রজেক্ট আয়ার মূলত মাইক্রোসফটের নিজস্ব নিরাপত্তা পণ্য ও সেবার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে ব্যবহার করা হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম য লওয
এছাড়াও পড়ুন:
মোবাইলে ছবি সম্পাদনার জন্য জনপ্রিয় ৫টি অ্যাপ
স্মার্টফোননির্ভর ফটোগ্রাফি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আধেয় বা কনটেন্ট তৈরির জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিনা মূল্যের ফটো এডিটিং অ্যাপের চাহিদাও বেড়েছে বহুগুণ। এখন আর পেশাদার মানের ছবি সম্পাদনার জন্য কম্পিউটার বা দামি সফটওয়্যারের প্রয়োজন হয় না। মোবাইল ফোনে করা যাচ্ছে সবকিছু, একেবারে বিনা খরচে। পাঁচটি ফটো সম্পাদনার অ্যাপের ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন। এসব অ্যাপ দিয়ে যেকোনো ছবি সম্পাদনায় চমক তৈরি করতে পারেন। এসব অ্যাপ গুগলের প্লে স্টোর ও অ্যাপলের অ্যাপস্টোর থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
স্ন্যাপসিড
গুগলের তৈরি স্ন্যাপসিড অ্যাপ পেশাদার থেকে শুরু করে নবীন—সব ধরনের ব্যবহারকারীর জন্য উপযোগী। স্ন্যাপসিডে আছে ২৯টি টুল ও ফিল্টার। এদের মধ্যে রয়েছে হিলিং সুবিধা, যা অপ্রয়োজনীয় বস্তু মুছে ফেলার জন্য ব্যবহৃত হয়। অ্যাপের ব্রাশ টুল দিয়ে নির্বাচিত অংশে আলো ও রং নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্ট্রাকচার নামের টুল দিয়ে টেক্সশ্চার বা গঠন স্পষ্ট করা যায়। সিলেক্টিভ টুল কন্ট্রোল পয়েন্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবির নির্দিষ্ট জায়গায় সূক্ষ্ম সম্পাদনা করা যায়। অ্যাপে আরও রয়েছে কার্ভস সুবিধা। যার মাধ্যমে আলো-অন্ধকারের ভারসাম্য ঠিক করা, পারসপেক্টিভ টুলের মাধ্যমে ছবির কোণ বা আকৃতি ঠিক করা ও এক্সপ্যান্ড টুলের মাধ্যমে ছবির ক্যানভাস বড় করা যায়। পাশাপাশি লেন্স ব্লার, এইডিআর স্কেপ ও নানা ধরনের ভিনটেজ বা ফিল্ম ইফেক্টও যোগ করা যায়। এটি জেপিইজে ও মূল (র) ধরনের ফাইল ফরম্যাটে কাজ করতে পারে এবং সম্পাদনার সময় ছবির মূল মান অক্ষুণ্ণ রাখে।
অ্যাডোবি লাইটরুম মোবাইল
অ্যাডোবির জনপ্রিয় পেশাদার সফটওয়্যার লাইটরুমের মোবাইল সংস্করণে রয়েছে ছবি সম্পাদনার সুবিধা। এর বেশির ভাগ টুলই বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়। ছবি সম্পাদনায় আলো, ছায়া, কনট্রাস্ট, হোয়াইট ব্যালান্সসহ নানা দিক সূক্ষ্মভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কালার মিক্সচার ও কালার গ্রেডিং টুল ব্যবহার করে রঙের গভীরতা ও ভারসাম্য নির্ধারণ করা সম্ভব। অ্যাপে আরও আছে ক্রপ, রোটেশন ও সাধারণ স্পট দূর করার টুল। পেশাদার মানের অসংখ্য প্রিসেট সহজেই ব্যবহার করা যায়, যা কয়েক সেকেন্ডেই ছবির রূপ পাল্টে দিতে পারে। সহজ ইন্টারফেসের কারণে অ্যাপটি ব্যবহারে সুবিধাজনক ও দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা যায়।
পিকসআর্ট
ছবি সম্পাদনা, কোলাজ তৈরি আর আঁকার সুবিধা সব মিলিয়ে এক অ্যাপে তিন কাজ করে দেয় পিকসআর্ট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারের উপযোগী সৃজনশীল কনটেন্ট তৈরিতে এটি বেশ জনপ্রিয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইনির্ভর টুল ব্যবহার করে সহজেই ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন বা অপসারণ করা যায়। অ্যাপে রয়েছে নানা ধরনের ফিল্টার, আর্টিস্টিক ইফেক্ট, কাস্টমাইজ করা যায় এমন স্টিকার ও আকর্ষণীয় লেখা যুক্ত করার সুবিধা। এতে কোলাজ লেআউট ও ফ্রি স্টক কনটেন্টও পাওয়া যায়। ফ্রি ব্যবহারকারীরাও একাধিক ছবি একসঙ্গে সম্পাদনা করতে পারেন।
পিক্সলার
মোবাইল ও ওয়েব—দুই সংস্করণেই পাওয়া যায় পিক্সলার। দ্রুত সম্পাদনা থেকে শুরু করে জটিল ছবি সম্পাদনা—সবকিছুই করা যায় এতে। পিক্সলার এক্স মোডে দ্রুত ও এক-ক্লিকে সম্পাদনা করা যায়। পিক্সলার ই মোডে ফটোশপের মতো ডিটেইল কাজ করা যায়। এতে লেয়ারভিত্তিক সম্পাদনার সুবিধা আছে, যা দিয়ে জটিল ডিজাইন তৈরি করা যায়। ক্রপ, রিসাইজ, রং ও আলোর সামঞ্জস্য নিয়ন্ত্রণ করা যায় অ্যাপ দিয়ে। এ ছাড়া ডিসপারশন, বোকেহ ও গ্লিচের মতো আর্টিস্টিক ইফেক্ট ব্যবহার করা যায়। অ্যাপটিতে এআইনির্ভর ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভাল ও জেনারেটিভ টুলও যুক্ত আছে। কিছু উন্নত ফিচার ফ্রি ক্রেডিট ব্যবহারের মাধ্যমেও পাওয়া যায়।
অ্যাডোবি ফটোশপ এক্সপ্রেস
ফটোশপের মোবাইলবান্ধব সংস্করণ এটি। দ্রুত ও সহজ সম্পাদনার জন্য এই অ্যাপ উপযুক্ত। সাধারণ সম্পাদনার পাশাপাশি এক ক্লিকে দাগ বা অপ্রয়োজনীয় অংশ মুছে ফেলা যায়। এ ছাড়া ব্যাকগ্রাউন্ড বদলানো, ছবি সোজা করা ও আলোর ভারসাম্য ঠিক করার সুযোগ রয়েছে। অ্যাপের লুকস নামের ফিল্টার ও ইফেক্ট দিয়ে মুহূর্তেই ছবির মুড বদলে ফেলা যায়। এতে রয়েছে কোলাজ মেকার, যেখানে নানা গ্রিড ও বর্ডার স্টাইল বেছে নেওয়া যায়।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস