ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার পুতিনের সহযোগী ইউরি উশাকভ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠকের পরিকল্পনা চলছে - তবে রাশিয়ান নেতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং ইউক্রেনীয় নেতার সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন না। 

বুধবার পুতিন ক্রেমলিনে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ওয়াশিংটন থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন প্রথমে ট্রাম্পের সাথে এবং তারপরে ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় সম্মত হয়েছেন।

তবে বৃহস্পতিবার সকালে পুতিনের সহযোগী ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট এতে রাজি হননি। 

তিনি বলেছেন, “আমরা প্রথমে ট্রাম্পের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তুতির উপর মনোনিবেশ করার প্রস্তাব করছি .

.. ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের কথা বলতে গেলে, যা কোনো কারণে ওয়াশিংটন গতকাল কথা বলছিল, এটি ক্রেমলিনে বৈঠকের সময় আমেরিকান পক্ষের উল্লেখ করা কিছু ছিল।”

তিনি বলেন, “কিন্তু এই বিষয়ে আলোচনা হয়নি। রাশিয়ান পক্ষ কোনো মন্তব্য না করেই এই বিকল্পটি সম্পূর্ণভাবে ছেড়ে দিয়েছে।”

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার ঘিরে ট্রাম্পের নতুন কূটনীতি

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দক্ষিণ এশিয়ার সাধারণ সমাজে পাগলাটে এক নেতা হিসেবে ভাবা হয়। যেন তিনি মনের খেয়ালে চলা এক ভাবুক রাজা। কিন্তু সম্প্রতি শুল্কযুদ্ধে ট্রাম্প যেভাবে এই অঞ্চলের শাসকদের ঘাম ছুটিয়ে চলেছেন এবং তাতে পুরো অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক ছক যেভাবে ঝাঁকুনি খাচ্ছে, সেটা টিম-ট্রাম্পের কূটনৈতিক দক্ষতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে সবাইকে।

এত দিন এই অঞ্চলে সবাই ভেবেছে ভারতের মিত্র হতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের সঙ্গে তার সম্পর্কে টানাপোড়েন কমবে না। কিন্তু শুল্কযুদ্ধে পাওয়া যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। আবার যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ানমার নীতিও আগের মতো থাকছে না আর। সামরিক জান্তার ঘনিষ্ঠ অস্ত্র ব্যবসায়ী কয়েকটি সংস্থার ওপর থেকে এরই মধ্যে এত দিনকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। অথচ গত ফেব্রুয়ারিতেও এই জান্তা ও তার সহযোগীদের যুক্তরাষ্ট্র ‘নিরাপত্তা হুমকি’ বলেছে।

আরও পড়ুনট্রাম্প যেভাবে মিয়ানমারকে চীনের হাতে তুলে দিচ্ছেন০১ আগস্ট ২০২৫শুল্কযুদ্ধে ভারতের নাজেহাল অবস্থায় পাকিস্তানে উল্লাস

শুল্কযুদ্ধে ট্রাম্প পাকিস্তানের রপ্তানি পণ্যের জন্য শুল্ক রাখলেন ১৯ ভাগ। যা ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের প্রথম দফা শুল্কের (২৫ শতাংশ) চেয়ে অনেক কম ছিল। এমনকি ভিয়েতনামের চেয়েও কম ছিল। এখন ভারতের জন্য শুল্কহার ৫০ শতাংশ করার পর বিষয়টা ভয়ংকর ধাঁচের বোমা নিক্ষেপের মতো ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল। স্বভাবতই ভারতের এই নাজুক অবস্থায় পাকিস্তানজুড়ে সুখের অনুভূতি বইছে।

যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের টেক্সটাইলের অন্যতম গন্তব্য। নতুন শুল্কহারে তাদের রপ্তানির অতীত ধারা চালু থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানের সেনাসমর্থিত সরকার এটাকে বিরাট এক কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখাচ্ছে। সরকারের দাবি, সর্বশেষ ঘটনা আসলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের সামগ্রিক গভীরতার প্রকাশ্য।

ভারতের সঙ্গে সদ্য শেষ হওয়া যুদ্ধেও ট্রাম্প পাকিস্তানকে সহায়তা করেছেন বলে দক্ষিণ এশিয়ায় ধারণা ছিল। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে সেটা টেনে নিয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা ছিল না পাকিস্তানের। ট্রাম্প যুদ্ধ থামিয়ে তাদের উপকারই করলেন। আর এখন দুই দেশের অসম শুল্কহারের ঘটনায় সবাই ভাবছে ওয়াশিংটন দক্ষিণ এশিয়ায় প্রকৃতই পাকিস্তানকে মদদ দিচ্ছে। প্রশ্ন হলো, টিম-ট্রাম্প ভারতের ওপর এত রুষ্ট কেন?

আরও পড়ুন‘বন্ধু’ ট্রাম্পের শুল্কের ঠ্যালা সামলাতে পারবে তো মোদির ভারত!১১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে হঠাৎ শৈত্যপ্রবাহ

নয়াদিল্লির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষোভের বড় কারণ, রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনাকাটায়। এ ছাড়া ভারতের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য প্রবেশে আরও উদার অবস্থা দেখতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ভারত এসব ব্যাপারে সহজে ছাড় দেওয়ার পাত্র নয়। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পক্ষে সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিও প্রকাশ করে। তারই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তাদের রপ্তানি পণ্যে শুল্কহার ২৫+২৫=৫০ শতাংশ ঠিক করে দিলেন ট্রাম্প। এই ঘোষণা ভারতজুড়ে হতবিহ্বল অবস্থা তৈরি করেছে। এর জন্য অবশ্য বিজেপি সরকার কম দায়ী নয়।

ভারতের জনমানসে নরেন্দ্র মোদি সরকার গত দেড় দশকে এ রকম ধারণা তৈরি করে রেখেছে যে তাদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের দৃঢ় ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ রয়েছে। এমনও বলা হয়েছে, চীনকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সব সরকার ভারতকে চায় এবং সেই বন্ধুত্বের ভালো মূল্য দিতেও প্রস্তুত তারা।

নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ