মুঠোফোনে অস্ত্রধারীদের ভিডিও করছিলেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান, পরে তাঁকেই হত্যা করা হয়
Published: 8th, August 2025 GMT
গাজীপুরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তারা দেশী অস্ত্র নিয়ে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করেছিল। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও করছিলেন। তখন আসাদুজ্জামানকে ধাওয়া করে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থলের একটি দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে।
ওই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার রবিউল হাসান বলেন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে কুপিয়ে হত্যার আগমুহূর্তের কিছু দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা ধারালো দেশি অস্ত্র নিয়ে এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করে। পেছন থেকে সেই দৃশ্য ভিডিও করছিলেন আসাদুজ্জামান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই দৃশ্য ভিডিও করায় তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনাস্থল চন্দনা চৌরাস্তা মসজিদ মার্কেটের পশ্চিম পাশে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিট। কালো রঙের জামা পরা এক নারী হেঁটে যাচ্ছেন। পেছন দিক থেকে নীল রঙের জামা পরা এক ব্যক্তি ওই নারীকে পেছন দিক থেকে টেনে ধরেন। নারী জোর করে চলে যেতে চাইলে তাঁর সামনে গিয়ে গতি রোধ করেন ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি নারীকে চড়থাপ্পড় মারেন। ঠিক এমন সময় পাশ থেকে ধারালো অস্ত্র হাতে কয়েক যুবক ওই ব্যক্তিকে কোপানোর চেষ্টা করেন। নীল শার্ট পরা ওই ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যান।
আরও পড়ুনপ্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা১১ ঘণ্টা আগেঘটনার কিছু সময় আগে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় একটি দোকানে বসে ছিলেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান ও তাঁর সহকর্মী শামীম হোসেন। ওই ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিক শামীম হোসেন বলেন, ‘চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় আমরা দুজন একদিক থেকে অন্য পাশে হেঁটে যাচ্ছিলাম। ঠিক এমন সময় একজন নারী ও পুরুষ আমাদের পাশ কাটিয়ে চলে যান। এমন সময় কয়েকজন লোক দেশি ধারালো অস্ত্র নিয়ে বলতে থাকে, “এই পাইছি, তোরা আয়।” ওই ব্যক্তি দৌড়ে পালানো চেষ্টা করেন। তখন তাঁরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁকে ধাওয়া করেন। তখন তুহিন (সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন) মুঠোফোন বের করে তাঁদের পেছনে দৌড় দেন। পরে আমি তুহিনকে খুঁজতে এগিয়ে যাই। অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা হঠাৎ থেমে গিয়ে পেছনে তাকায়। তুহিন তখন দৌড়ে চায়ের দোকানে ঢুকে যায়। ঠিক ওই মুহূর্তে ওরাও চায়ের দোকানে ঢুকে ওকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। আমি চৌরাস্তা এলাকায় পুলিশের গাড়ি খুঁজতে থাকি। কোনো গাড়ি দেখতে না পেয়ে বাসন থানার ওসিকে ফোন করি। কিছু সময় পর পুলিশ আসে।’
গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তার মসজিদ মার্কেট এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে তোলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ ক আস দ জ জ ম ন ভ ড ও কর
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড় সীমান্তে বেড়াতে গিয়ে ভারতে প্রবেশ, আটক দুজনকে ফেরত পাঠাল বিএসএফ
পঞ্চগড়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক বাংলাদেশি এক কিশোর ও এক তরুণকে সাত ঘণ্টা পর ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের চান্দাপাড়া এলাকায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাঁদের ফেরত পাঠায় বিএসএফ।
ফেরত পাঠানো দুই বাংলাদেশি হলেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার জুমাইনগর এলাকার সানোয়ার হোসেনের ছেলে রিয়াদুল ইসলাম (১৮) ও পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের এক কিশোর (১৪)।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রিয়াদুল সম্প্রতি পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের ঘাটিয়ার পাড়া এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে তিনি তাঁর স্বজন ওই কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় ঘুরতে যান। ছবি তোলার একপর্যায়ে তাঁরা বুঝতে না পেরে ভারতীয় অংশে প্রবেশ করেন। এ সময় ভারতের ১৩২ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চান্দাপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। পরে আটক দুজনের নাম-ঠিকানাসহ বিষয়টি বিজিবিকে জানানো হয়। বিজিবি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ওই সীমান্তে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানায়।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘুরতে গিয়ে অজান্তে ওই দুই বাংলাদেশি সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাঁদের ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। এ ঘটনায় পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পর পুলিশের মাধ্যমে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।