Prothomalo:
2025-09-22@14:36:20 GMT

কঠোর অবস্থানের বিকল্প নেই

Published: 8th, August 2025 GMT

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা একটি নতুন, ভালো বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। সেই স্বপ্নের অংশ ছিল মানুষের চলাচলের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকার। কিন্তু আজকের বাস্তবতায় এসে প্রশ্ন উঠছে, এই অধিকার কি রাস্তাঘাট বন্ধ করে দাবি আদায়ের?

সড়ক দখল করে কোনোভাবেই সমাবেশ করার সুযোগ থাকা উচিত নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ—এই অনিয়ন্ত্রিত সমাবেশগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। সমাবেশ কোথায় হবে, কীভাবে হবে—সেই নির্দেশিকা বা শৃঙ্খলাটা গড়ে ওঠেনি। এর পেছনে দায়ী সরকারের সহনশীলতা (সরকার সহ্য করেছে)। সড়কে দাঁড়ালেই দাবি আদায় হয়, এমন ধারণাই বিশৃঙ্খলার সূচনা করেছে।

রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই সড়ক বন্ধ করে সমাবেশ করছে। অনেক সময় হয়তো অনুমতি ছাড়াই করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিল সবার জন্য সমান নীতিমালা করা। কোনো দলকে বাড়তি সুবিধা, আর কাউকে প্রতিহত করার চেষ্টা—এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ সমাবেশের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

আরও পড়ুন৯০ দিনের ৩৬ দিনই রাস্তা আটকা ২০ মিনিট আগে

একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি। সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে পুরো রাস্তা বন্ধ ছিল। সেগুনবাগিচায় সেদিন আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এক নারী, সঙ্গে তাঁর ছোট সন্তান। তিনি অসহায়ের মতো বলছিলেন, ‘ক্ষমতার জন্য পলিটিক্যাল পার্টিগুলো আমাদের জিম্মি করছে।’ এই কথার ভেতরেই আসলে বহু মানুষের যন্ত্রণা লুকিয়ে আছে।

খুব সাধারণ দাবিতেও এখন সড়ক আটকে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সড়কে দাঁড়ালেই সরকার দাবি মেনেছে। তখন থেকেই একটা ভুল বার্তা চলে গেছে যে দাবি মানাতে হলে সড়ক বন্ধ করতে হবে। আবার সরকার বলেছিল, লিখিতভাবে জানালে দাবি বিবেচনা করা হবে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, লিখিত দাবি অনেক সময় গুরুত্বই পায়নি। এর অর্থ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি আদায়ের কোনো নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া এখনো নির্ধারিত নয়। এই অনিশ্চয়তা পরিবেশকে আরও অনিয়ন্ত্রিত করে তুলছে।

অধিকার মানে এই নয় যে যেখানে খুশি সেখানে দাঁড়িয়ে সমাবেশ করা যাবে। সমাবেশ নির্দিষ্ট স্থানে হবে, রাস্তায় মানুষের চলাচলের ওপর হস্তক্ষেপ না করে। এ জন্য বিকল্প জায়গার প্রয়োজন আছে।

ঢাকায় নির্ধারিত কিছু জায়গা থাকলেও তা খুব সীমিত। তাই এলাকাভিত্তিক কিছু নতুন স্থান চিহ্নিত করা দরকার, যেমন খোলা প্রাঙ্গণ, মাঠ এবং মাইনর (অগুরুত্বপূর্ণ) রাস্তা, যেগুলো বন্ধ করলেও বড় প্রভাব পড়ে না। এসব জায়গা নির্ধারণে অবশ্যই একটা সমন্বয় থাকতে হবে। মূল শর্ত হলো, রাষ্ট্রকে না জানিয়ে, যেখানে খুশি, যখন খুশি রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। এর জন্য সরকারের কঠোর অবস্থান ছাড়া বিকল্প নেই।

সমাবেশের অধিকার সংবিধান স্বীকৃত, কিন্তু সেটা যেন অন্যের অধিকার হরণ না করে। রাষ্ট্রের উচিত আইনের শাসনের নীতি অনুযায়ী একদিকে বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করা, অন্যদিকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

আদিল মুহাম্মদ খান: সভাপতি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ব কল প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুট: ৬ দপ্তর ও বেলার কাছে নথি চেয়েছে দুদক

সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ নিয়ে ছয়টি সরকারি দপ্তর ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কার্যালয়ের কাছে নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি।

সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথকভাবে এসব চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

যে দপ্তরগুলোর কাছে নথি তলব করা হয়েছে, সেগুলো হলো সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসন অফিস, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, কোম্পানীগঞ্জ থানা, খনিজ সম্পদ ব্যুরো ও খনিজ সম্পদ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় এবং বেলার সিলেট অফিস।

দুদক সূত্র জানায়, চিঠিগুলোয় যেসব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ভোলাগঞ্জ এলাকায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) যেসব তদন্ত করেছে, তার সত্যায়িত কপি ও তদন্ত কর্মকর্তাদের বিস্তারিত পরিচয়; কী পরিমাণ পাথর উত্তোলন বা আত্মসাৎ করা হয়েছে এবং কতটা অবশিষ্ট রয়েছে, তার তথ্য; পাথর উত্তোলনের কারণে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির হিসাব; পাথর লুট নিয়ে বিএমডি থেকে দায়ের করা মামলার এজাহারের কপি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নাম ও গ্রেপ্তারকৃতদের তালিকা এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ও দায়ী সরকারি–বেসরকারি ব্যক্তিদের নাম।

আরও পড়ুনপাথর তোলায় রাজনৈতিক দলের ‘ঐকমত্য’, পরে লুট, ঘটল কীভাবে ১৪ আগস্ট ২০২৫

এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর দুদক জানিয়েছিল, ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটে রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। উপপরিচালক রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, অভিযানে প্রাথমিক সত্যতা মেলায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। অপরাধের মাত্রা ও সংশ্লিষ্টতার ধরন বিবেচনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ