Prothomalo:
2025-11-06@21:33:25 GMT

কঠোর অবস্থানের বিকল্প নেই

Published: 8th, August 2025 GMT

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা একটি নতুন, ভালো বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। সেই স্বপ্নের অংশ ছিল মানুষের চলাচলের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকার। কিন্তু আজকের বাস্তবতায় এসে প্রশ্ন উঠছে, এই অধিকার কি রাস্তাঘাট বন্ধ করে দাবি আদায়ের?

সড়ক দখল করে কোনোভাবেই সমাবেশ করার সুযোগ থাকা উচিত নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ—এই অনিয়ন্ত্রিত সমাবেশগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। সমাবেশ কোথায় হবে, কীভাবে হবে—সেই নির্দেশিকা বা শৃঙ্খলাটা গড়ে ওঠেনি। এর পেছনে দায়ী সরকারের সহনশীলতা (সরকার সহ্য করেছে)। সড়কে দাঁড়ালেই দাবি আদায় হয়, এমন ধারণাই বিশৃঙ্খলার সূচনা করেছে।

রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই সড়ক বন্ধ করে সমাবেশ করছে। অনেক সময় হয়তো অনুমতি ছাড়াই করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিল সবার জন্য সমান নীতিমালা করা। কোনো দলকে বাড়তি সুবিধা, আর কাউকে প্রতিহত করার চেষ্টা—এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ সমাবেশের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

আরও পড়ুন৯০ দিনের ৩৬ দিনই রাস্তা আটকা ২০ মিনিট আগে

একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি। সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে পুরো রাস্তা বন্ধ ছিল। সেগুনবাগিচায় সেদিন আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এক নারী, সঙ্গে তাঁর ছোট সন্তান। তিনি অসহায়ের মতো বলছিলেন, ‘ক্ষমতার জন্য পলিটিক্যাল পার্টিগুলো আমাদের জিম্মি করছে।’ এই কথার ভেতরেই আসলে বহু মানুষের যন্ত্রণা লুকিয়ে আছে।

খুব সাধারণ দাবিতেও এখন সড়ক আটকে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সড়কে দাঁড়ালেই সরকার দাবি মেনেছে। তখন থেকেই একটা ভুল বার্তা চলে গেছে যে দাবি মানাতে হলে সড়ক বন্ধ করতে হবে। আবার সরকার বলেছিল, লিখিতভাবে জানালে দাবি বিবেচনা করা হবে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, লিখিত দাবি অনেক সময় গুরুত্বই পায়নি। এর অর্থ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি আদায়ের কোনো নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া এখনো নির্ধারিত নয়। এই অনিশ্চয়তা পরিবেশকে আরও অনিয়ন্ত্রিত করে তুলছে।

অধিকার মানে এই নয় যে যেখানে খুশি সেখানে দাঁড়িয়ে সমাবেশ করা যাবে। সমাবেশ নির্দিষ্ট স্থানে হবে, রাস্তায় মানুষের চলাচলের ওপর হস্তক্ষেপ না করে। এ জন্য বিকল্প জায়গার প্রয়োজন আছে।

ঢাকায় নির্ধারিত কিছু জায়গা থাকলেও তা খুব সীমিত। তাই এলাকাভিত্তিক কিছু নতুন স্থান চিহ্নিত করা দরকার, যেমন খোলা প্রাঙ্গণ, মাঠ এবং মাইনর (অগুরুত্বপূর্ণ) রাস্তা, যেগুলো বন্ধ করলেও বড় প্রভাব পড়ে না। এসব জায়গা নির্ধারণে অবশ্যই একটা সমন্বয় থাকতে হবে। মূল শর্ত হলো, রাষ্ট্রকে না জানিয়ে, যেখানে খুশি, যখন খুশি রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। এর জন্য সরকারের কঠোর অবস্থান ছাড়া বিকল্প নেই।

সমাবেশের অধিকার সংবিধান স্বীকৃত, কিন্তু সেটা যেন অন্যের অধিকার হরণ না করে। রাষ্ট্রের উচিত আইনের শাসনের নীতি অনুযায়ী একদিকে বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করা, অন্যদিকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

আদিল মুহাম্মদ খান: সভাপতি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ব কল প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে জকসু নির্বাচন চায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে করার দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতারা বলেন, বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহুল প্রতীক্ষিত জকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে একধরনের উত্তেজনা ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তফসিলে নির্বাচনের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অনেকাংশে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।

সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতারা অভিযোগ করেন, জকসু নির্বাচনের যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, তা প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। ডিসেম্বর বছরের শেষ মাস। এ সময় শিক্ষার্থীরা সারা বছরের একাডেমিক চাপ শেষে ছুটি কাটাতে বাড়ি যায়। অধিকাংশ শিক্ষার্থী এ সময় ক্যাম্পাসে থাকে না। নির্বাচনের জন্য এমন সময় নির্ধারণের একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে ভোটারদের অংশগ্রহণ সীমিত করা।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতারা আরও বলেন, ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করতে পারে। এমন সময়ে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ থাকতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসীভ বলেন, ‘একটি সুস্থ ও সর্বোচ্চ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়ে থাকবে। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর এটিই প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচন, যা সংকটে জর্জরিত এই ক্যাম্পাসের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা রাখে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ