ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর দেশটির সরবরাহকারীদের দেওয়া তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত করতে শুরু করেছে ওয়ালমার্ট, অ্যামাজন, টার্গেট ও গ্যাপসহ যুক্তরাষ্ট্রের বড় খুচরা বিক্রেতা ব্র্যান্ড।

এনডিটিভির এক সংবাদে এমনটাই জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের পর মার্কিন প্রশাসন ‘রাশিয়ার জ্বালানি তেল কেনার অপরাধে’ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতের পণ্য রপ্তানিতে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসায়। তারপরও ভারতের তৈরি পোশাকের রপ্তানিকারকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্রয়াদেশ স্থগিত রাখার ই–মেইল পেতে শুরু করেন। ই–মেইলে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্রয়াদেশ স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।

সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, মার্কিন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ শুল্কের বোঝা ভাগ করতে রাজি নয়। তারা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের এই ব্যয় বহন করতে বলছে।

উচ্চ শুল্কের কারণে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৩০-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ কারণে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রয়াদেশ ৪০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। তাতে কয়েক বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ক্ষতির শঙ্কা করছেন ভারতের রপ্তানিকারকেরা।

ভারতের ওয়েলস্পান লিভিং, গোকলদাস এক্সপোর্টস, ইন্দো কাউন্ট ও ট্রাইডেন্টের মতো বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান তাদের মোট রপ্তানির ৪০-৭০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে করে থাকে। ভারতের তৈরি পোশাক ও বস্ত্রের সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারত চতুর্থ শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। গত বছর ভারত ৪৬৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। এই বাজারে ভারতের মূল প্রতিযোগী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম। ফলে উচ্চ শুল্কের কারণে ভারত থেকে স্থানান্তরিত ক্রয়াদেশ এই দেশ দুটিতে যেতে পারে। তার কারণ, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ করে পাল্টা শুল্ক বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়েছে ২৫ শতাংশ। বাকি ২৫ শতাংশ ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

ভারতীয় বস্ত্র খাতের শীর্ষ সংগঠন দ্য কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি (সিআইটিআই) এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারতের জন্য কার্যত ৫০ শতাংশ শুল্কহার গভীর উদ্বেগের বিষয়। সংগঠনটি বলেছে, ‘৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত শুল্ক ভারতের বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানিকারকদের জন্য বিশাল ধাক্কা। আগেই আমরা প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে ছিলাম। এই নতুন শুল্কের কারণে তা আরও জটিল হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের প্রতিযোগিতার শক্তি কমে যাবে।’ সরকারের প্রতি তারা আহ্বান জানিয়েছে, এই কঠিন সময়ে খাতটিকে দ্রুত সহায়তা দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

শুধু তৈরি পোশাক ও বস্ত্র নয়, বাড়তি ৫০ শতাংশ শুল্কে ভারতের চামড়া, রাসায়নিক, জুতা, রত্ন ও গয়না ও চিংড়ি রপ্তানি খাত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন দেশটির শিল্পবিশেষজ্ঞরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ব বস ত র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীতে ডিবির অভিযানে আওয়ামী লীগের ৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের আরো ৬ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আরো পড়ুন:

যশোরে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি: হ্যান্ডকাফ-ওয়াকিটকিসহ গ্রেপ্তার ৪

বৈষম্যবিরোধী মামলায় কুবি কর্মচারী গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহচর উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. কামাল হোসেন (৪৮), কদমতলী ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ কর্মী মো. মনির হোসেন (৪৬), আওয়ামী লীগ কর্মী মো. জামাল হোসেন (৪০), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মো. রনি (৩৫), নোয়াখালী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং নোয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু (৬৪) এবং গাজীপুর ১ নম্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও হাইমচর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান গাজী (৬২)।

ডিবি সূত্র জানায়, রবিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোড থেকে কামাল হোসেনকে, রাত সাড়ে ১০টায় জুরাইন থেকে মনির হোসেনকে, রাত সাড়ে ১১টায় ধানমন্ডি থেকে আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টুকে, রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে চকবাজার থেকে মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান গাজীকে, রাত ১টা ২৫ মিনিটের দিকে বনশ্রী ডি ব্লক থেকে জামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে, সন্ধ্যা ৬টার দিকে রনিকে চকবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যানারে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল আয়োজন, অর্থায়ন ও লোক সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ