প্রকৃতির ছোঁয়ায় প্রাণ পেল ক্যানভাস
Published: 22nd, September 2025 GMT
শিশুর মুখ আঁকেন শিল্পী মোহাম্মদ ইকবাল। নানা দেশের নানা জাতি-সম্প্রদায়ের শিশুর মুখ। সেই শিশুদের অভিব্যক্তি করুণ, বিষণ্ন, ভীত ও বেদনার্ত। এই অভিব্যক্তি যেন জানিয়ে দেয়, আমাদের পৃথিবীটা ভালো নেই। এর শুশ্রূষা দরকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক শিল্পী মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, ‘আনন্দিত শিশুর মুখ আমি আঁকতে চাই, কিন্তু যখনই সংবাদমাধ্যমে গাজা, সিরিয়া বা মিয়ানমারের শিশুদের ছবিগুলো দেখি, তখন আমার ক্যানভাসের শিশুটির মুখে আর হাসি ফোটে না।’
১৮ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর দেশের খ্যাতিমান ৯ জন নবীন-প্রবীণ শিল্পী রংতুলি নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন চট্টগ্রামের ফিনলে পাহাড়ে। বাদশা মিয়া সড়কের পাশ ঘেঁষে উঠে যাওয়া বর্ষাস্নাত পাহাড়ি প্রকৃতি যেন চারটি দিন মুখর হয়ে উঠেছিল শিল্পীদের সৃজন-আনন্দে। ১৮ সেপ্টেম্বর উদ্বোধনী পর্বের পর সন্ধ্যাটা কেটে গিয়েছিল গল্প–আড্ডা–গান আর পানাহারে। নগরের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন সেই আসরে। পরদিন সকালে শুরু হয়েছিল মূল পর্ব। রংতুলি–ক্যানভাসে নিমগ্ন হয়ে পড়েছিলেন শিল্পীরা।
আনন্দিত শিশুর মুখ আমি আঁকতে চাই, কিন্তু যখনই সংবাদমাধ্যমে গাজা, সিরিয়া বা মিয়ানমারের শিশুদের ছবিগুলো দেখি, তখন আমার ক্যানভাসের শিশুটির মুখে আর হাসি ফোটে না।—অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকবাল, চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মোহাম্মদ ইকবাল যেমন আঁকেন শিশুদের মুখ, তেমনি শিল্পী জামাল আহমদের ক্যানভাসে শুধু কবুতর। কখনো এই পাখিদের স্থির অলস দুপুর, কখনোবা উড়ে যাওয়ার অপূর্ব গতির ভঙ্গিমা। আবার শিল্পী কনকচাঁপা চাকমার ছবিতে উঠে আসে পাহাড়ি ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জীবনের নানা অনুষঙ্গ।
শিল্পী কনকচাঁপা চাকমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাঙামাটিতে। শৈশব থেকে পাহাড়ি মানুষ ও সমাজের সঙ্গে তাঁর নিবিড় পরিচয়। সেই জীবনটাকেই রংতুলিতে তুলে ধরেন তিনি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পরপারে ভালো থেকো জুবিন: সোহম চক্রবর্তী
ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ। একাধারে গায়ক, সংগীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, সংগীত প্রযোজক, অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সিঙ্গাপুরে স্কুবা ড্রাইভিং করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। তার আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শোবিজ অঙ্গন। ভারতীয় বাংলা সিনেমার বেশ কিছু শ্রোতাপ্রিয় গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন জুবিন। তার গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন সোহম চক্রবর্তী। প্রিয় গায়ক, বন্ধুকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন এই নায়ক—
জুবিন গার্গ নেই! খবরটা শুনে বিশ্বাস করতে পারছি না। সামনে পূজা। উৎসবের আগে এমন অন্ধকার নেমে আসবে, কল্পনাও করতে পারেনি। সকাল থেকেই মনটা বেশ খারাপ। ভাবিনি এমন দুঃসংবাদ শুনতে হবে। জুবিনের সঙ্গে আমার তো কম স্মৃতি নেই। খুব মজার মানুষ ছিলেন। ভীষণ খোলামেলা। যখনই দেখা হতো, কোথা দিয়ে যে সময় কেটে যেত, বুঝতেই পারতাম না।
আরো পড়ুন:
সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ মারা গেছেন
ফের মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ বিজয়ী মিথিলা
‘প্রেম আমার’ আমার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা। সেই সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘বোঝে না সে বোঝে না’। জুবিনের গলায় সেই গান আজও সমান জনপ্রিয়। জুবিনের ‘ইয়া আলি’ আমার ভীষণ পছন্দের একটি গান। যখনই এই গানটা শুনতাম, মনে হতো কবে জুবিনের গাওয়া গানে লিপ দেব। ম্যানিফেস্ট করতাম, আমার জন্য অন্তত একটি গান জুবিন গায়। ঈশ্বর আমার কথা শুনেছেন।
যখন জানতে পারলাম ‘প্রেম আমার’ সিনেমায় জুবিনের গাওয়া গানে লিপ দেব, ভীষণ আনন্দ হয়েছিল। খুব খুশি হয়েছিলাম। তারপর তো জুবিনের সঙ্গে আলাপ হলো, বন্ধুত্ব হলো। তারপর আমার বেশ কয়েকটি সিনেমায় জুবিন গান গাইলেন। ধীরে ধীরে সম্পর্ক গাঢ় হলো।
একসঙ্গে প্রচুর স্টেজ শো করেছি। যখনই আমরা একসঙ্গে স্টেজে উঠতাম, দর্শক ‘বোঝে না সে বোঝে না’ শুনতে চেয়েছেন। আর জুবিন আমাকে মাইকটা এগিয়ে দিতেন। আমার তো তখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। জুবিনের সামনে গান গাইতে গিয়ে তো আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যেত।
আসামে যখনই বেড়াতে গিয়েছি, জুবিন বাড়িতে থাকলে আমার সঙ্গে দেখা করেছে। আসামে শো করতে গেলে, যেকোনো সমস্যায় জুবিনকে একটা ফোন করলেই ও সবরকমভাবে সাহায্য করেছে। তবে সম্পর্কের গায়েও তো ধুলো পড়ে। মাঝের বেশ কিছু বছর ওর সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল না। তবে ওর কাজ সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতাম।
আমার সবচেয়ে বড় আফসোস কি জানেন? আমার আগামী একটি বাংলা সিনেমায় জুবিন গান গেয়েছেন। সেই সিনেমাটা মুক্তির অপেক্ষায়। ভেবেছিলাম হয়তো দেখা হবে। সেটা আর হলো না। আমি ওর বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করি। তুমি পরপারে ভালো থেকো জুবিন।
ঢাকা/শান্ত