2025-08-01@17:42:56 GMT
إجمالي نتائج البحث: 40

«ঝ লইয় ল»:

    বুধবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সম্মুখে যেই বর্বর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হইয়াছে, হয়তো উহা নজিরবিহীন নহে; তবে উহা যে বিশেষত রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি নির্দেশ করিতেছে– এই বিষয়ে কাহারও সংশয় থাকিবার অবকাশ নাই। তৎসহিত ইহাও প্রমাণিত হইল, সমাজে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য এখন এতটাই; এহেন বীভৎসতা প্রত্যক্ষ করিয়াও মানুষকে ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’ জপ করিতে হয়। শুক্রবার সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, যিনি ঐ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হইয়াছেন, তিনি উক্ত এলাকার ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ। ব্যবসায়ের ভাগবাটোয়ারা লইয়া তাঁহারই পূর্বপরিচিত এক দল যুবক সোহাগকে বুধবার মধ্যাহ্নে ডাকিয়া লইয়া সন্ধ্যায় মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে প্রহার ও ইষ্টক-প্রস্তরের আঘাতে মস্তক পিষ্ট করিয়া মৃত্যু নিশ্চিত করে। শুধু উহাই নহে; মৃত্যুর পরও সোহাগকে নিষ্কৃতি দেয় নাই সন্ত্রাসীরা। তাহারা...
    বাংলাদেশে ধর্ষণ যেন অপ্রতিরোধ্য অপরাধে পরিণত। গত মার্চে মাগুরায় শিশু আছিয়া ধর্ষণের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশব্যাপী সংঘটিত প্রবল প্রতিবাদের রেশ না কাটিতেই গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার মুরাদনগরে একজন হিন্দু নারী ধর্ষণের শিকার হইলেন। শুধু উহাই নহে; রবিবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এক বিবৃতিতে জানাইয়াছে, চলতি বৎসরের জানুয়ারি হইতে মে মাস পর্যন্ত দেশে ৩৮৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়াছে; যাহার অর্ধেকেরও বেশি ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর বয়স ১৮ বৎসরের কম। বলা যায়, অত্যন্ত কঠোর আইন, নারী অধিকার সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ, সংবাদমাধ্যমের আধেয়– কোনো কিছুই ধর্ষণকারীর দৌরাত্ম্য বন্ধে যথেষ্ট নহে বলিয়া প্রমাণিত। দেশের সর্বত্র বিভিন্ন বয়সী নারী ধর্ষণের শিকার হইতেছেন। কখনও কখনও অবিশ্বাস্য রকমের পাশবিক কায়দায় এই জঘন্য অপরাধটি ঘটিতেছে। ইহার পরিপ্রেক্ষিতে যখন সমগ্র দেশে ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ জাগিয়া উঠে তখন কর্তৃপক্ষেরও চৈতন্যোদয়...
    সংস্কার লইয়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) যেই অচলাবস্থা বিদ্যমান, তাহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান, সমস্যাটি নিরসনে সরকার অদ্যাবধি যথেষ্ট সক্রিয় নহে, যাহা অধিকতর উদ্বেগের কারণ। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে আমরা জানি, সরকার এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্তিপূর্বক রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুইটি বিভাগ সৃষ্টি করিয়া গত ১২ মে একটা অধ্যাদেশ জারি করে। উদ্দেশ্য হিসাবে বলা হইয়াছিল, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে করহার নির্ধারণের ন্যায় নীতিগত কাজ এবং কর আদায়ের কাজ পৃথক রাখা সম্ভবপর হইবে এবং ফলস্বরূপ রাজস্ব ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরাজমান দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ হইবে। কিন্তু অভিযোগ উঠিয়াছে, অধ্যাদেশটি জারির পূর্বে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহিত উহা লইয়া যথেষ্ট পরিমাণ আলোচনা করা হয় নাই। অনেকটা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের একটি শর্ত পূরণের তাগিদ হইতে...
    সিলেটের ভোলাগঞ্জে রেলওয়ের জন্য সংরক্ষিত প্রস্তর কোয়ারি তথা ‘রেলের বাঙ্কার’ হইতে যেইভাবে প্রকাশ্যে প্রস্তর উত্তোলন এবং শত শত নৌকা পূর্ণ করিয়া লইয়া যাইতেছে, উহা লুণ্ঠনেরই নামান্তর। বুধবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংরক্ষিত এলাকাটির নজরদারির জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী-আরএনবি রহিয়াছে। ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা হইবার কারণে তথায় বিজিবি সদস্যরাও সক্রিয়। তথাপি এইরূপে সংঘবদ্ধ লুণ্ঠন কীভাবে চলিতে পারে, উহা মস্তিষ্কে ধারণ করিতে বিশেষজ্ঞ হইবার প্রয়োজন নাই। কেবল রেলওয়ের বাঙ্কারই নহে; খোদ ভোলাগঞ্জ কোয়ারি হইতেই লুট হইয়াছে প্রস্তর। বিগত ১০ মাসে ইহা এমন অধিক হারে ঘটিয়াছে, এই সাম্রাজ্যে এখন প্রস্তরের পরিবর্তে ছোট-বড় অসংখ্য গহ্বর দৃশ্যমান। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক মদদেই এই অবিমৃষ্যকারিতা চলিতেছে। তবে রেলের বাঙ্কার এলাকা নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে থাকিলেও তথাকার লুটপাটের চিত্র সমস্ত এলাকার সংকটাপন্ন পরিস্থিতিরই সাক্ষ্যবহ। সমকালের সচিত্র প্রতিবেদনে রেলওয়ের প্রস্তরক্ষেত্রের চতুর্দিকে...
    নাগরিকদের প্রতি আইন স্বীয় হস্তে না তুলিয়া লইতে সরকারের পুনঃপুন আহ্বান সত্ত্বেও দেশে মবতন্ত্রের প্রতাপ যে হ্রাস পায় নাই, তাহারই প্রদর্শনী হইয়া গেল রাজধানীর উত্তরায়। এইবার বর্বরতার শিকার হইলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। সোমবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, উত্তরার যেই গৃহে পরিবার লইয়া বসবাস করেন নূরুল হুদা, রবিবার সন্ধ্যায় এক দল লোক ঐখানে সমবেত হইয়া হইচই শুরু করে। এক পর্যায়ে তাহারা নূরুল হুদার গৃহে প্রবেশপূর্বক তাঁহাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করে। সামাজিক মাধ্যমে বিস্তৃত ভিডিওতেও বিষয়টি স্পষ্ট হইয়াছে। এমনকি নূরুল হুদার প্রতি ডিম্ব নিক্ষেপ এবং তাহার কণ্ঠে ‘জুতার মালা’ পরাইবার চরম অবমাননাকর ঘটনাও ঘটে। অধিকতর ক্ষোভের বিষয় হইল, নূরুল হুদার উপর উক্ত মব সন্ত্রাস চলিয়াছে পুলিশের উপস্থিতিতে; যদিও এক পর্যায়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তাহাদের হেফাজতে লইয়া যায়।  ইহা...
    আগামী রমজানের পূর্বেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সংস্কারকার্য আগাইয়া লইতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে যেই নির্দেশ দিয়াছেন, তাহাকে আমরা স্বাগত জানাই। মঙ্গলবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সরকারপ্রধান এই নির্দেশ প্রদান করেন। গত শুক্রবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকে আগামী নির্বাচনের দিনক্ষণ লইয়া উভয়ের মধ্যে ঐকমত্য হইয়াছে বলিয়া উক্ত বৈঠক-পরবর্তী যৌথ বিবৃতিতে যাহা বলা হইয়াছিল, প্রধান উপদেষ্টার সোমবারের নির্দেশনা উহাকেই জোরালো ভিত্তি দিল। নির্বাচনের সময় লইয়া ইতোপূর্বে বিএনপিসহ দেশের অধিকাংশ দল এবং জনপরিসরে যেই সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি হইয়াছিল, এই ঘটনার পর তাহার বিলক্ষণ অবসান ঘটিবে।  আমরা জানি, বিএনপিসহ দেশের সিংহভাগ দল গত কয়েক মাস ধরিয়া আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে...
    সম্প্রতি জামালপুরে রীতিমতো ঢক্কানিনাদের মাধ্যমে সাত পরিবারকে সমাজচ্যুতকরণের যেই ঘটনা ঘটিয়াছে, উহা যদ্রূপ উদ্বেগজনক, তদ্রূপ বিস্ময়কর। সোমবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর তুচ্ছ বিষয় লইয়া দুইজনের মধ্যে সংঘটিত হাতাহাতির ঘটনায় শহরের দাপুনিয়া এলাকায় কতিপয় ‘মাতব্বর’ একপক্ষের সহিত সংশ্লিষ্ট সাতটি পরিবারকে ‘একঘরে’ ঘোষণা করিয়াছেন। শুক্রবার রাত্রিকালেই মাইকিং করিয়া এলাকাবাসীকে জানাইয়া দেওয়া হয়– ‘সমাজচ্যুত’ পরিবারগুলির সহিত কেহ সামাজিকতা, অর্থ বিনিময়যোগ্য ক্রিয়াকলাপ করিতে পারিবে না। এই ‘নিয়ম’ ভঙ্গকারীও অনুরূপ শাস্তি প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হইবে। যদিও জনৈক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে এবং স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীর উদ্যোগে প্রশাসন সোমবার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করিয়াছে; এহেন মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর যথাযথ শাস্তি প্রদান ব্যতীত সৃষ্ট উদ্বেগ দূর হইবে না। উপরন্তু একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে যখন মানবাধিকারের ধারণাটি নিছক সংবিধানের পৃষ্ঠাতেই সীমাবদ্ধ নহে শুধু; রাষ্ট্র ও সমাজের প্রায় সর্বস্তরে...
    বর্ষা মৌসুম যতই নিকটবর্তী হইতেছে ততই প্রাণঘাতী ডেঙ্গু বিস্তারের শঙ্কা বৃদ্ধি পাইতেছে। রবিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, মে মাসে এই বৎসরের সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেড় সহস্রাধিক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হইয়াছেন। ঋতুচক্রের নিয়ম অনুসারে বর্ষা আসিবার পূর্বে গ্রীষ্মেও বৃষ্টিপাত বিরল নহে। এইবার নিম্নচাপের কারণে ঢাকাসহ সমগ্র দেশেই বর্ষণ চলিতেছে। রহিয়াছে ভ্যাপসা গরমও। বিশেষজ্ঞগণের অভিমত, এইরূপ আবহাওয়া এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য খুবই অনুকূল। উপরন্তু ঈদুল আজহার দীর্ঘ বন্ধে বাসাবাড়ি তালাবদ্ধ করিয়া অনেকেই অন্যত্র অবস্থানকারী প্রিয়জনের সান্নিধ্যে যাইবেন বলিয়া নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অভাবে সেইগুলিও ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার বংশবিস্তারের নিরাপদ ক্ষেত্র হইয়া উঠিতে পারে। ফলে ঈদের পর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করিবার আশঙ্কা প্রবল। কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশারের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা জরিপ করিয়া দেখিয়াছে, গত বৎসরের...
    অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ তাহারই ঘোষিত ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য’ সংস্কার প্রস্তাবসমূহ গত আড়াই মাসেও বাস্তবায়ন করিতে সক্ষম হয় নাই বলিয়া শুক্রবার এক হতাশাজনক সংবাদ দিয়াছে সমকাল। প্রতিবেদনমতে, গত মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ হইতে উপদেষ্টা পরিষদ ১২১টি সুপারিশ নিজেরা সরাসরি বাস্তবায়নের জন্য বাছাই করিয়াছিল। বলা হইয়াছিল, এইগুলি লইয়া রাজনৈতিক দলসমূহের সহিত আলোচনার কোনো প্রয়োজন নাই। জানা গিয়াছে, গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদ এই বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে সুপারিশসমূহ আদৌ বাস্তবায়নযোগ্য কিনা; বাস্তবায়নযোগ্য হইলে উহার সম্ভাব্য সময়সীমা; বাস্তবায়নের প্রভাব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত লইয়া উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করিতে নির্দেশনা দিয়াছে। অথচ গত ২২ মার্চ গণমাধ্যম কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টার নিকট হইতে এতৎসংক্রান্ত নির্দেশনা পাইয়া মন্ত্রিপরিষদ সংশ্লিষ্ট সচিবদের আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবসমূহ বাছাই করিবার নির্দেশনা দিলে শেষোক্তরা ৩০ এপ্রিলের...
    আমার প্রিয় তরুণ ভ্রাতৃগণ! আপনারা কি ভাবিয়া আমার ন্যায় ক্ষুদ্র ব্যক্তিকে আপনাদের সভাপতি নির্বাচন করিয়াছেন, জানি না। দেশের জাতির ঘনঘোর-ঘেরা দুর্দিনে দেশের জাতির শক্তি-মজ্জা-প্রাণস্বরূপ তরুণদের যাত্রাপথের দিশারি হইবার স্পর্ধা বা যোগ্যতা আমার কোনো দিন ছিল না, আজও নাই। আমি দেশকর্মী-দেশনেতা নই, যদিও দেশের প্রতি আমার মমত্ববোধ কোনো স্বদেশপ্রেমিকের অপেক্ষা কম নয়। রাজ-লাঞ্ছনা ও ত্যাগ-স্বীকারের মাপকাঠি দিয়া মাপিলে হয়তো আমি তাঁহাদের কাছে খর্ব pigmy বলিয়া অনুমিত হইব। তবু দেশের জন্য অন্তত এইটুকু ত্যাগ স্বীকার করিয়াছি যে, দেশের মঙ্গল করিতে না পারিলেও অমঙ্গলচিন্তা কোনদিন করি নাই, যাঁহারা দেশের কাজ করেন তাঁহাদের পথে প্রতিবন্ধক হইয়া দাঁড়াই নাই। রাজ-লাঞ্ছনার চন্দন-তিলক কোনো দিন আমারও ললাটে ধারণ করিবার সৌভাগ্য হইয়াছিল, কিন্তু তাহা আজ মুছিয়া গিয়াছে। আজ তাহা লইয়া গৌরব করিবার অধিকার আমার নাই। আমার বলিতে দ্বিধা...
    পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ খননে বিপুল অর্থ ব্যয় হইলেও উহা অনর্থের কারণ হইয়াছে; নাব্য সংকটে ধুঁকিতে থাকা নদটিকে উদ্ধার করা যায় নাই, উপরন্তু উহার গতিপথ পরিবর্তন হইয়াছে। ইহার জের ধরিয়া নদীভাঙনে বাড়িঘর ও ফসলি জমি হারাইয়া বিপদে পড়িয়াছে অনেক পরিবার। শনিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ তথা বিআইডব্লিউটিএ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ খননে যেই প্রকল্পের সূচনা করিয়াছে, তাহা চলতি বৎসর শেষ হইবার কথা থাকিলেও প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বৎসর বাড়ানো হইয়াছে। ইতোমধ্যে সহস্রাধিক কোটি টাকা ব্যয় হইলেও নদটির পরিস্থিতির উন্নতি হয় নাই, বরং নূতন সংকট তৈয়ার করিয়াছে। বিষম পরিস্থিতিতে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বহুল উদ্ধৃত উক্তি– ‘এই জীবন লইয়া কী করিব?’ পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের অবস্থাদৃষ্টে আমাদেরও বলিতে হয়– এই খনন লইয়া কী করিব? আমরা জানি, দেশের নদীগুলি সুস্থ নাই এবং...
    আগের পর্বআরও পড়ুনকোনো কথা জিজ্ঞেস করলেই আমতা আমতা করো কেন২১ মে ২০২৫
    ‘এইসব “ডক্টর” লইয়া আমরা কী করিব’ শিরোনামে ২০২৪ সালের ২৮ জুন প্রথম আলোয় একটি লেখা লিখেছিলাম তৎকালীন কুখ্যাত তিন ব্যক্তিত্বের—সেনাপ্রধান আজিজ, পুলিশপ্রধান বেনজীর আর ছাগল-কাণ্ডের মতিউর—তথাকথিত ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়ে। সে লেখার একটি অংশ ‘দোর্দণ্ড প্রতাপ, ক্ষমতা, রাষ্ট্রীয় পদক ও অর্থবিত্তের বিপুল সম্ভারের পরও যেন তাঁদের বুকে একটা শূন্যতা রয়ে যায়। আর তা হচ্ছে একটা ডক্টরেট ডিগ্রি! নামের আগে ড. যোগ। এত প্রাপ্তিযোগের পর এ খায়েশটি তাহলে কেন অপূর্ণ থাকবে? এটাও খেতে হবে। লুৎফর রহমান রিটনের সেই বিখ্যাত “খিদে” কবিতার মতো।’ সংগত কারণেই তাঁরা সবাই সাবেক স্বৈরাচারী শাসকের খুব কাছের লোক ছিলেন।আরও পড়ুনএইসব ‘ডক্টর’ লইয়া আমরা কী করিব২৮ জুন ২০২৪সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ পেল তাঁদের আরেক ঘনিষ্ঠজন তুরিন আফরোজের পিএইচডি তথা ডক্টরেট ডিগ্রি জালিয়াতি। পিএইচডি শেষই করেননি, তবু নামের আগে ড....
    চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বিভিন্ন খাল পুনর্খনন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করিতে গিয়া বৃক্ষনিধনের যজ্ঞ চলিতেছে, উহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। শনিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন বলিতেছে, উপজেলার চারটি খালের ৪০ কিলোমিটার পুনর্খনন করিতে গিয়া ইতোমধ্যে খালসমূহের দুই পার্শ্বের বিভিন্ন প্রজাতির পাঁচ সহস্রাধিক বৃক্ষ কাটিয়া ফেলা হইয়াছে। শুধু উহা নহে, খাল পুনর্খনন সম্পূর্ণ শেষ করিতে হইলে সেখানে আরও পাঁচ সহস্র বৃক্ষ কাটিতে হইতে পারে বলিয়া আশঙ্কা স্থানীয়দের। পরিহাসের বিষয় হইল, বিএডিসি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে উক্ত খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছে; অথচ উহার জন্য যে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত প্রয়োজন তাহা সম্ভব হয় কেবল প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকিলে, যেখানে বৃক্ষের অবদান অপরিসীম। এহেন আয়োজনকে নাকের বদলে নরুন পাইবার আয়োজন বলিলে কি ভুল হইবে? বিস্ময়কর হইলেও...
    কিছুদিন যাবৎ একাদিকক্রমে আন্দোলনের কারণে কতিপয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম যেইভাবে অচল হইয়া পড়িতেছে, উহা শিক্ষানুরাগী প্রত্যেক মানুষকেই ভাবাইয়া তুলিবার কথা। এই অচলাবস্থা প্রথমে সূচিত হয় খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটে, গত ফেব্রুয়ারিতে যখন শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্র ধরিয়া কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। ক্যাম্পাস বন্ধের মধ্যেই ঘটনাপরম্পরায় গত এপ্রিলে শুরু হয় কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। তাহার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সরকার কুয়েট উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণ করে। অন্যদিকে সরকারের এহেন সিদ্ধান্তকে বেআইনি ঘোষণা করিয়া কুয়েটের শিক্ষক সমিতি পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করিয়া দেয়, যাহা অদ্যাবধি চলমান। এইদিকে কুয়েটের দুর্ভাগ্যজনক অচলাবস্থার মধ্যেই গত সোমবার হইতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হইয়া গিয়াছে। তথায় উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলিয়া তাঁহার পদত্যাগের এক দফা আন্দোলন চালাইতেছেন শিক্ষার্থীরা।...
    রবিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত দুইটি পৃথক আলোচনা সভায় বক্তাগণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য শর্তস্বরূপ দেশে মুক্ত সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠার যেই তাগিদ দিয়াছেন, উহা যথার্থ বলিয়া আমরা মনে করি। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা দুইটির একটি সম্পাদক পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে; অপরটি ধানমন্ডিতে ইউনেস্কোর ঢাকা অফিস, টিআইবি ও সুইডিশ দূতাবাসের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। আমরা জানি, বিগত সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ত্যাগে বাধ্য হইয়াছিল। সেই জনরোষের উল্লেখযোগ্য কারণ ছিল দেশে বাকস্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অনুপস্থিতি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অদ্যাবধি সেই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটে নাই। যদিও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসলস্বরূপ টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়া রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করিয়াছে। এই বৎসরের বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশ ১৬ ধাপ অগ্রসর হইয়াছে সত্য। কিন্তু বাংলাদেশ যে এখনও সেই সূচকের তলানিতেই অবস্থান করিতেছে– উহা লইয়া...
    বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস-বিসিএস পরীক্ষা লইয়া সরকারি কর্ম কমিশন- পিএসসিতে যাহা চলিতেছে তাহা দুর্ভাগ্যজনক। শুক্রবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পুনর্গঠিত পিএসসি ৪৬তম বিসিএসের লিখিত ও ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির তারিখ পিছাইয়াছে। ইহার পূর্বে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ দুই দফা পিছাইয়াছেন তাহারা। দফায় দফায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত হইবার কারণে রীতিমতো বিসিএসে জট সৃষ্টি হইয়াছে, যাহার সমাধান দ্রুত না হইলে পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ ধারণ করিতে পারে। কারণ বারংবার বিসিএস পরীক্ষা পিছাইলে শুধু চাকুরিপ্রার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হইবেন না; রাষ্ট্রও উহার নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় দক্ষ ও মেধাবী কর্মকর্তা নিয়োগে ব্যর্থ হইবে। এহেন পরিস্থিতিতে শেষাবধি ক্ষতিগ্রস্ত হইবেন বিভিন্ন সরকারি সেবাপ্রত্যাশী মানুষ। প্রতিবেদনমতে, চার বৎসর যাবৎ কোনো বিসিএসের চূড়ান্ত ফল না হইবার কারণে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী ৪৪ হইতে ৪৭তম–...
    আজ মহান মে দিবস। ১৮৮৬ সালের পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমিকের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী মেহনতি মানুষদের স্মরণ করিবার দিন। তৎসহিত সকল শ্রমজীবী মানুষের জন্য মর্যাদাকর জীবন নিশ্চিতকরণের সংগ্রামে নূতন শপথ গ্রহণের দিন। মে দিবস বিশ্বের শ্রমিকদের সংহতি যদ্রূপ বৃদ্ধি করিয়াছে, তদ্রূপ তাহাদিগকে অধিকার সচেতনও করিয়াছে; প্রেরণা জোগাইয়া চলিয়াছে শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাইয়া যাইতে। মে দিবস বাংলাদেশসহ বিশ্বের উপনিবেশবিরোধী সংগ্রামের মধ্য দিয়া স্বাধীনতা অর্জনকারী দেশসমূহের জন্য বিপুল প্রেরণার উৎসরূপে কাজ করিয়াছে। তাহারই প্রতিফলনস্বরূপ এই সকল দেশে ছুটিসহকারে জাতীয়ভাবে দিবসটি পালিত হয়। উন্নত দেশসমূহ এই দিবসে পৃথক ছুটির ব্যবস্থা না করিলেও উহার প্রভাব উপেক্ষা করিতে পারে নাই। তাই ভিন্ন প্রকারে সেই সকল দেশেও দিবসটি পালিত হয়। আন্তর্জাতিকভাবে আজিকে শ্রমমান লইয়া যে আলোচনা হয়, জাতীয় ন্যূনতম...
    গণঅভ্যুত্থানের প্রায় ৯ মাস পর করা একটি হত্যা মামলা লইয়া জনপরিসরে যেই আলোচনা-সমালোচনা চলিতেছে, উহা সংগত। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে গুলিতে প্রাণ হারান মাহফুজ আলম শ্রাবণ। ঐ ঘটনায় তাঁহার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী গত ২০ এপ্রিল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুজ্জামানের আদালতে ৪০৮ জনের নামে মামলার আবেদন করেন, যথায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহিত সাংবাদিক, অভিনেতা ও ব্যবসায়ীকেও আসামি করা হইয়াছে। তবে মঙ্গলবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যায় বাপ্পী সমকালকে জানাইয়াছেন, উক্ত মামলার অধিকাংশ আসামিকে তিনি চিনেন না। মামলাটির বাদী সমকালকে আরও বলিয়াছেন, তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তাই মামলায় কে কীভাবে যুক্ত হইল, তাহা নির্দিষ্ট করিয়া বলা তাঁহার পক্ষে কঠিন। তিনি মনে করেন, পুলিশ কিছু নাম যুক্ত করিয়াছে; আইনজীবীরাও কিছু...
    বাংলাদেশ যখন ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা লইয়া হিমশিম খাইতেছে, তখনই নূতন করিয়া আরও অনুপ্রবেশ আমাদের উদ্বেগকে বৃদ্ধি করিয়াছে। সোমবার সমকালে প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য হইতে গত শনিবার পর্যন্ত নূতন করিয়া ১ লক্ষ ১৩ সহস্র রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করিয়াছে। শুধু উহাই নহে; বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন যৌথভাবে নবাগত রোহিঙ্গাদের আঙ্গুলের ছাপও গ্রহণ করিয়াছে। সরকার অবশ্য তাহাদের আইরিশের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের অনুমতি এখনও দেয় নাই। নবাগত রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলের ব্যবস্থা করিতে হাইকমিশন প্রেরিত পত্রেরও উত্তর দেয় নাই। উপরন্তু, মৌখিকভাবে সংস্থাটিকে জানাইয়া দিয়াছে, বিদ্যমান বাস্তবতায় লক্ষাধিক নূতন রোহিঙ্গার জন্য আবাসস্থলের ব্যবস্থা সুকঠিন। তবে ২০১৭ সালে যেই মানবিক কারণে বাংলাদেশ মিয়ানমার জান্তার ভয়ংকর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের প্রেক্ষাপটে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গাদের সীমান্ত অতিক্রম করিতে অনুমতি দিয়াছিল, সেই মানবিকতা এইবারও বৃহৎ দোহাই হইয়া উঠিতে পারে।...
    তুচ্ছতর অভিযোগে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগার হইতে পাঁচ শতাধিক গ্রন্থ লুণ্ঠনের অঘটন যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সমকালে শনিবার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত্রিতে ১৫-২০ জন পাঠাগারে প্রবেশ করিয়া গ্রন্থসমূহ লইয়া যায়। পরবর্তী সময়ে পাঁচটি বস্তায় পূর্ণ করিয়া গ্রন্থসমূহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিকট জমা দেওয়া হয়। উহাদের দাবি, ঐ সকল গ্রন্থ পাঠ করিয়া নাকি যুবসমাজ ‘ধর্মবিরোধী’ হইয়া উঠিতেছে। আমরা জানি, কাহারও কোনো কর্মকাণ্ডকে রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর মনে হইলে বিদ্যমান আইনে তাহা বন্ধ করিবার সুর্নিদিষ্ট প্রক্রিয়া রহিয়াছে। আলোচ্য ঘটনা উক্ত প্রক্রিয়ার সহিত সংগতিপূর্ণ তো নয়ই; ফৌজদারি অপরাধও বটে। পাঠাগার কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, উক্ত নৈতিক পুলিশগিরিতে লিপ্ত যুবকেরা প্রায় দুই লক্ষ টাকার গ্রন্থ ও নথিপত্র লুণ্ঠন এবং ৫০ সহস্র টাকার আসবাব ভাঙচুর করিয়াছে। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলিয়াছেন, ‘তৌহিদি জনতা’র নাম করিয়া...
    দীর্ঘদিন ধরিয়া অচল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) যন্ত্রটি বারংবার তাগাদার পরেও মেরামত না করিবার নেপথ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যেই মনস্তত্ত্ব কাজ করিতেছে, উহাকে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংক্রামক ব্যাধি বলিলে ভুল হইবে না। উহার কারণ হইতে পারে এমআরআই সেবাপ্রত্যাশীদের বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে পাঠাইয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কিঞ্চিৎ বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা করা। অবশ্য অপেক্ষাকৃত ভদ্র ভাষায় স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলাও বলা যায়। যেই নামেই ডাকা হউক, ইহাকে ব্যাধি বলিবার কারণ হইল, শনিবার সমকালের এক প্রতিবেদনে যদ্রূপ বলা হইয়াছে, যন্ত্রটির রোগ সারাইতে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গত চার বৎসরে ৪২ দফায় পত্র লিখিবার পরও সদুত্তর মিলে নাই। চিকিৎসকদের মতে, মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের সূক্ষ্ম রোগ নির্ণয়ের জন্য এমআরআই পরীক্ষা জরুরি। এই...
    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নূতন অভিবাসন নীতির খড়্গ অবশেষে বাংলাদেশের উপরেও পড়িল। পুলিশের বিশেষ শাখা ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়া সোমবার সমকাল জানাইয়াছে, অনথিভুক্ত অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাইবার মার্কিন কর্মসূচির অধীনে রবিবার পর্যন্ত ৩১ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠাইয়াছে যুক্তরাষ্ট্র। তাহাদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ, একজন নারী। ঘটনাটি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। যদিও বলা হইয়াছে, অভিবাসন-সংক্রান্ত মামলায় পরাজয়ের পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করিতেছিলেন এবং বিভিন্ন মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হইয়াছেন, মূলত এমন ব্যক্তিদেরই দেশে ফেরত আসিতে বাধ্য করা হইয়াছে; বিষয়টি তথায় থামিয়া থাকিবে না।  সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি অনুসারে, পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গমনেচ্ছু বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখি হইবেন। এমনকি ইতোমধ্যে যেই সকল শিক্ষার্থী উক্ত দেশে অবস্থান করিতেছেন, তাহাদের কেহ সাম্প্রতিক ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে শামিল হইয়া থাকিলে দেশে ফিরিয়া আসিতে বাধ্য...
    প্রতি বৎসরের ন্যায় এইবারও রাজধানীতে বাংলা বর্ষবরণের অন্যতম অনুষঙ্গ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হইতে যাইতেছে। উপরন্তু, অন্তর্বর্তী সরকার রাজধানীতে এইবারের শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করিয়া এক ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ আয়োজনের প্রস্তুতি লইতেছে। বিশেষত ইহাতে বাঙালির পাশাপাশি পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের বিশেষ উপস্থিতি ঘটাইবার চেষ্টা চলিতেছে। স্বাভাবিকভাবেই সর্বমহল উক্ত সরকারি প্রয়াসের প্রশংসা করিতেছে। তবে দুঃখজনকভাবে, এইবারের বাংলা বর্ষবরণও যেন বিতর্ক এড়াইতে পারিতেছে না। বিতর্কের সূত্রপাত ঘটিয়াছে পহেলা বৈশাখের সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আয়োজিত শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন ঘিরিয়া। শনিবার প্রকাশিত সমকালের সংবাদ অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত অনুষদের ডিনের ঘোষণা অনুসারে মঙ্গল শোভাযাত্রার নূতন নাম হইতেছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হইতে পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান– সর্বত্র ইহা লইয়া চলিতেছে আলোচনা-সমালোচনা। শুধু উহা নহে, প্রতিবেদন অনুসারে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি হিসাবে নানা আকারের মুখোশ, মাটির সরায় রঙের আঁচড়...
    মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করিয়া সমগ্র দেশে যখন সম্প্রীতির সুর বাজিয়াছে তখন হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফরিদপুরসহ কতিপয় এলাকায় সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনাবলি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আমরা জানি, রমজানের রোজার শেষে ‘খুশির ঈদ’ উৎসব উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁহার বহুল শ্রুত সংগীতে ‘দোস্ত’ ও ‘দুশমন’ ভুলিয়া গিয়া সকলের সহিত করমর্দনের তাগিদ দিয়াছেন। কিন্তু তৎপরিবর্তে একের হস্ত অপরের উপর সক্রোধে ক্ষুব্ধ ক্রিয়া করিতেছে কেন? যেই সকল তুচ্ছ ঘটনায় এই সকল সংঘাত ঘটিয়াছে, উহাও কম উদ্বেগজনক নহে। সমকাল অনলাইনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কতিপয় ব্যক্তি বাণিজ্য উপলক্ষে ঢাকার মিরপুরে বসবাস করেন। কয়েক দিন পূর্বে তুচ্ছ বিষয় লইয়া তথায় তাঁহাদের মধ্যে হস্তযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঈদের ছুটিতে সকলে এলাকায় প্রত্যাবর্তন করিলে মঙ্গলবার উক্ত অঘটন লইয়া সালিশ বৈঠক চলাকালে উভয় পক্ষ লাঠিসোটা...
    দলা পাকানো চালের গুঁড়া চ্যাপটা করে ছোট ছোট বড়া বানানোর পর সেগুলো কড়াইয়ে দিচ্ছিলেন লাভলী বেগম (২৫)। চুলায় খড়ের আগুন কমে আসছিল বারবার। মাথা নিচু করে চুলার নিচ দিকে ফুঁ দিতে দিতে ধোঁয়ায় নাস্তানাবুদ অবস্থা। কুলায় যে পরিমাণ চালের গুঁড়া, তাতে ২০ থেকে ৩০টা বড়া হবে।ঈদের আয়োজন বলতে কি শুধু এই কয়টি বড়া? লাভলী বলেন, ‘মাইয়ে (মা) কিছু গুড় আনছিলা। গুড়ের হান্দেশ (সন্দেশ) করছি। আর কিতা করমু। সকালে বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু। ইলাই আমরার ঈদ।’ কথা শেষের সঙ্গে সঙ্গে লাভলী বেগমের একটা দীর্ঘশ্বাস যেন হাওরের বাতাসে মিশে গেল। তাঁর পাশে তখন পাখির ছানার মতো বসা দুই সন্তান সাহানা (৫) ও আবির (৩)। তাদের চোখ কড়াইয়ে, তেলের ওপর ভাসতে থাকা বড়ার দিকে।লাভলী বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরপারের...
    রক্ত হিম করা ঠান্ডার মধ্যে ২০২৩ সালের নভেম্বরে যখন সাইবেরিয়ার কারাগারে পাঠানো হয়, তখন রুটি ও জাউ ছাড়া নরিমান ঝেলইয়ালের খাওয়ার মতো কিছু ছিল না। চশমা পরা, শ্মশ্রুমণ্ডিত ক্রিমীয় তাতার সম্প্রদায়ের এই নেতা একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম। তিনি বলেন, কারাগারে তাঁকে যেসব খাবার দেওয়া হতো, সেসবের বেশির ভাগ ছিল শূকরের মাংসের তৈরি। কিন্তু ইসলামি আইনে এটি নিষিদ্ধ। ঝেলইয়াল আল–জাজিরাকে বলেন, ‘আমি শুধু রুটি খেতাম, তা ভালো মানের ছিল না। এ রুটি চায়ে ভিজিয়ে খেতাম।’ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের লাইন উড়িয়ে দেওয়া ও বিস্ফোরক চোরাচালানের অভিযোগে তাঁকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন বলেছে, এটা মস্কোর পরিকল্পিত ঘটনা। ঝেলইয়াল তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।কয়েক দিন পর ঝেলইয়ালকে সাইবেরিয়ার কারাগার থেকে মিনুসিনস্ক শহরে স্থানান্তর করা হয়। এখানে এসে তুলনামূলক কিছুটা ভালো খাবার...
    জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। বুধবার দুপুরে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।   জামায়াতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সমসাময়িক বিষয়ে তাদের আলোচনা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে: জামায়াত আমির  রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াত আমির। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন শফিকুর রহমান।  জামায়াত আমির বলেন, কোরআন প্রকৃত ‘মাদার ল’। বিদ্যমান অনেক আইন কোরানের সঙ্গে খুব বেশি সাংঘর্ষিক নয়।  অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে সভায়...
    জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে ন্যায়বিচার নির্বাসনে। এখানে সাধারণত রাজনৈতিকভাবে মোটিভেটেড (উদ্দেশ্যপ্রণোদিত) হয়ে বিচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভাঙাচোরা। যার বৈশ্বিক কোনো মান নেই।বুধবার হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনে বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন শফিকুর রহমান।জামায়াতের আমির বলেন, ‘যে সমাজে দুটি জিনিস নিশ্চিত হয়, সে সমাজ দুনিয়ার বুকে মর্যাদার সঙ্গে বুক ফুলিয়ে দাঁড়াতে পারে। একটা উন্নত শিক্ষা, আরেকটা হচ্ছে সামাজিক ন্যায়বিচার। কিন্তু দুঃখের বিষয় যে আমাদের দেশে দুটি বিষয়ই চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ন্যায়বিচার নির্বাসনে। আর শিক্ষাব্যবস্থা ভাঙাচোরা। না আছে এর নৈতিক ভিত্তি, না আছে তার কোনো বৈশ্বিক মান। কিছুই নেই।’শফিকুর রহমান আরও বলেন, সমাজের অনেক জায়গায় সমস্যা আছে। কিন্তু এই বিচারব্যবস্থা সংস্কার করতে পারলে সমাজের অর্ধেক যন্ত্রণা কমে যাবে। আর বাকি অর্ধেক...
    সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’ শীর্ষক প্রকল্পের ঘোষিত উদ্দেশ্য যাহাই হউক, বাস্তবে উহা ছিল সরকারি অর্থ নয়ছয়ের ন্যক্কারজনক আয়োজন। রবিবার প্রকাশিত সমকালের এতৎসংক্রান্ত প্রতিবেদনে এহেন চিত্রই পরিস্ফুট। প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, ২০১০ সালের আগস্টে সূচিত কর্মসূচির অধীনে পরবর্তী ১৪ বৎসরে দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬টিসহ ৫৮ জেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ৮৭ কোটির অধিক টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দের প্রায় ২৮ কোটি টাকা ছিল উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায়। তন্মধ্যে কতিপয় জেলা ঘুরিয়া প্রতিবেদকের অভিজ্ঞতা হইল, প্রকল্পের সুবিধা লইয়াও অধিকাংশ ভিক্ষুক ভিন্ন কর্মক্ষেত্রে স্থায়ী হইতে পারেন নাই। অঞ্চলগুলিতে ভিক্ষাবৃত্তি হ্রাসের বিপরীতে বরং নূতন ভিক্ষুকের আবির্ভাব দেখা গিয়াছে। তদুপরি, সরকারি নথির তথ্য উদ্ধৃত করিয়া তিনি জানাইয়াছেন, ভিক্ষুক পুনর্বাসনে ক্ষুদ্র ব্যবসা, গরু-ছাগল-ভেড়া, হাঁস-মুরগি ও সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। তবে বরাদ্দের...
    দেশের মেডিকেল কলেজসমূহে শিক্ষক সংকট অনাকাঙ্ক্ষিত হইলেও অপ্রত্যাশিত নহে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) তথ্য উদ্ধৃত করিয়া মঙ্গলবারের সমকাল জানাইয়াছে, সমগ্র দেশে সরকারি মেডিকেল কলেজ রহিয়াছে ৩৭টি, যেগুলিতে শিক্ষকের পদসংখ্যা ৬ সহস্র ৪৪৬টি। অথচ বর্তমানে ৩ সহস্র ৭০০ শিক্ষক দিয়া চলিতেছে মেডিকেল শিক্ষা কার্যক্রম। অর্থাৎ সরকারি মেডিকেল কলেজসমূহে প্রায় ৪৩ শতাংশ শিক্ষকের পদ শূন্য। বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। কারণ চাহিদার প্রায় অর্ধেক সংখ্যক শিক্ষকশূন্যতার কারণে একদিকে মেডিকেল শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হইতেছে, অন্যদিকে দেশীয় এমবিবিএস ডিগ্রির বহির্বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা হারাইবার শঙ্কা দেখা দিয়াছে। বিগত সরকার মেডিকেল শিক্ষার প্রসারের নামে জেলায় জেলায় অপরিকল্পিতভাবে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার কারণে এই সংকট প্রত্যাশিতই ছিল। মুখ্যত দলীয় নেতাদের অযৌক্তিক আব্দার পূরণকল্পে প্রতিষ্ঠিত এই সকল মেডিকেল কলেজে উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগের বিষয় বিবেচনায় লওয়া হয় নাই। এমনকি অনেক মেডিকেল কলেজে...
    বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় সুশাসন ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, প্রতিষ্ঠানটির স্বীয় সুশাসন লইয়াই প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছে, যাহা সম্পূর্ণ উচ্চশিক্ষা খাতের জন্যই উদ্বেগজনক। মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে ঋণের মহোৎসব’ শিরোনামের প্রতিবেদনে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর সূত্রে জানা যাইতেছে, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করিয়াই কর্মকর্তাদের নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত বিপুল অঙ্কের ঋণ প্রদান করিয়াছে ইউজিসি। অনেক কর্মকর্তাকেই নিয়ম ভঙ্গ করিয়া প্রাপ্যতার অধিক ঋণ দেওয়া হইয়াছে। অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটির অনেক কর্মী দীর্ঘ দিনব্যাপী চাকুরি করিলেও বাড়ি তৈয়ারিতে ঋণ পাইতেছেন না। অথচ একই ব্যক্তি একাধিকবার ঋণ গ্রহণ করিয়াছেন।  উচ্চশিক্ষায় উদ্ভাবন ও গবেষণায় উৎকর্ষ অর্জনের মাধ্যমে টেকসই আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়িয়া তুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ কী ভূমিকা রাখিতে পারে, তাহা আমরা জানি। সেই ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে সার্বিক সুবিধা ও দিকনির্দেশনা দান ইউজিসির...
    বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মঙ্গলবার জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে যেই উদ্বেগ ব্যক্ত করিয়াছেন, উহা আমলে লইবার বিকল্প নাই। সেনাবাহিনী প্রধানরূপে এই প্রকার বক্তব্য সাম্প্রতিককালে বিরল হইলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সময়োচিত। বিশেষত যখন গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দূরত্ব ও অনৈক্য ক্রমবর্ধমান, তখন সেনাবাহিনী প্রধানের সতর্কবার্তা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি যথার্থই বলিয়াছেন, নিজেরা কর্দম নিক্ষেপ ও হানাহানিতে লিপ্ত থাকিলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিতে পারে। আমরা প্রত্যাশা করিব, সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্যের অন্তর্নিহিত অর্থ সংশ্লিষ্টরা অনুধাবনে সক্ষম হইবেন। সেনাবাহিনী প্রধান এমন সময়ে এই বক্তব্য দিয়াছেন, যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি লইয়া বিলক্ষণ উদ্বেগ তৈয়ার হইয়াছে। গত কিছু দিবসে সংঘটিত বেশ কিছু চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় এমনকি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা লইয়াও প্রশ্ন উঠিয়াছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা...
    মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসার জন্য অপরিহার্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র তথা আইসিইউ লইয়া দেশে যাহা চলিতেছে তাহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সরকারি হাসপাতালে শক্ত তদবির ব্যতীত আইসিইউ বরাদ্দ মিলিতেছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাগিতেছে ঘুষও। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে এই সেবার নামে কাটা হইতেছে রোগী ও স্বজনের পকেট। উপরন্তু, সমন্বয়হীনতার কারণে সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসিতেছে না। এক কথায় আইসিইউ লইয়া দেশের চিকিৎসা খাতে এক নৈরাজ্য চলিতেছে। শনিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন বলিতেছে, দেশে আইসিইউর শয্যা আছে সর্বমোট প্রায় বারো শত, যাহার ৭৫ শতাংশই রাজধানী ঢাকায়। উপরন্তু, ৩৪ জেলায় কোনো আইসিইউ নাই। তৈলাক্ত মস্তকে তৈল মর্দন সম্ভবত ইহাকেই বলে। ঢাকায় যেহেতু সরকারের শীর্ষ ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ থাকেন, পাশাপাশি আছেন দেশের সর্বাধিক অর্থবিত্তসম্পন্ন মানুষেরা, ওই কথাটি নিশ্চয় সচেতন কাহারও নিকট অপ্রাসঙ্গিক ঠেকিবে না। অন্যদিকে ঢাকাকেন্দ্রিক অতি...
    সোমবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ‘সব্যসাচী’ নামক এক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী বিপণিকেন্দ্রে যেই ঘটনা ঘটিয়াছে, উহা কেবল নিন্দনীয়ই নহে; যথেষ্ট উদ্বেগজনক বটে। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক দল ব্যক্তি নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রয়ের অভিযোগ তুলিয়া হট্টগোলের সূচনা করে। প্রকাশক শতাব্দী ভব প্রতিবাদ করিলে হট্টগোলকারী জনতা তাঁহার উপর হামলা করিতে উদ্যত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসিয়া প্রকাশককে স্বীয় জিম্মায় লইয়া বিপণিকেন্দ্রটি বন্ধ করিয়া দেয়। সামাজিক মাধ্যমে বিস্তৃত ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, পুলিশের সুরক্ষা অবস্থাতেই কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি শতাব্দী ভবের উপর হামলা চালায়। গ্রন্থ বিপণনের ফলস্বরূপ এহেন দলবদ্ধ হট্টগোল ও হামলায় আমরা উদ্বিগ্ন না হইয়া পারি না। আমরা মনে করি, যেই কোনো গ্রন্থ লইয়া যে কাহারও ভিন্নমত বা আপত্তি থাকিতে পারে। দেশে সেই ভিন্নমত বা আপত্তি প্রকাশের আইনসংগত...
    আলু লইয়া কৃষক এইবারও দুর্দশায় নিপতিত হইল। রবিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন বলিতেছে, এক কেজি আলুর উৎপাদন ব্যয় ১৪ হইতে ১৬ টাকা হইলেও কৃষককে উহা বিক্রয় করিতে হইতেছে মাত্র ১০-১২ টাকায়। ফলে প্রতি কেজি আলুতে কৃষককে লোকসান গুনিতে হইতেছে ৫ টাকা অবধি। শুধু উহাই নহে, লোকসান হইতে বাঁচিতে বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার কৃষকের হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও নূতন সংকট সৃষ্টি হইয়াছে। প্রথমত, দেশে চলতি বৎসর আলু উৎপাদন ১ কোটি ২০ লক্ষ টন হইবে বলিয়া ধারণা করা হইতেছে। কিন্তু বিদ্যমান হিমাগারসমূহের মোট ধারণক্ষমতা মাত্র ৪৫ লক্ষ টন। সেই হিসাবে বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারের বাহিরে থাকিবে। দ্বিতীয়ত, গত বৎসর অপেক্ষা এইবার কেজিতে ১ টাকা বৃদ্ধি করিয়া হিমাগার ভাড়া ৮ টাকা করা হইয়াছে, যাহা বহন করা বিশেষত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকের পক্ষে কঠিন। উপরন্তু, পূর্বে...
    দাগি অপরাধীদের অপতৎপরতার পাশাপাশি ধারাবাহিক ছিনতাই, ডাকাতি ও চাঁদাবাজির ঘটনায় জনমনে যেই আতঙ্ক ছড়াইতেছে উহা সকলের জন্যই উদ্বেগজনক। শনিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘদিন কারাগারে থাকিবার পর সম্প্রতি যেই সকল চিহ্নিত সন্ত্রাসী জামিনে বাহির হইয়া আসিয়াছে, তাহারা সাঙ্গোপাঙ্গ লইয়া ফের অপরাধজগৎ দাপাইয়া বেড়াইতেছে। ফলস্বরূপ খুন, জখম, দখল, ছিনতাই, চাঁদাবাজির ন্যায় অপরাধ বাড়িতেছে; এমনকি চাঁদা ও ভাগবাটোয়ারা লইয়া নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের পাশাপাশি খুনোখুনিও চলিতেছে। পুলিশের অপরাধ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাইতেছে, গত সেপ্টেম্বর হইতে ডিসেম্বর অবধি চার মাসে ঢাকাসহ সারাদেশে ৯৪৭ জন খুন হইয়াছেন। ডাকাতি ও ছিনতাই ঘটনায় ওই চার মাসে মামলা হইয়াছে ৭৯৬টি, অপহরণের ঘটনায় মামলা হয় ৩০২টি। এই সকল পরিসংখ্যানই বলিয়া দেয়, নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা কতটা হুমকির সম্মুখীন। বলিয়া রাখা প্রয়োজন, মামলার সংখ্যা দিয়া দেশের প্রকৃত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কখনোই নিরূপণ...
    বুধবার যেইভাবে গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকরা দফায় দফায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালাইয়াছে, উহা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্বেগজনক। সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাইতেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের কয়েকটি কারখানা মাসখানেক পূর্বে বন্ধ হইবার কারণে শ্রমিকরা বর্তমানে কর্মহারা। একদিকে তাহাদের কর্মসংস্থানের জন্য কারখানা খুলিয়া দেওয়া জরুরি, অন্যদিকে বকেয়া পারিশ্রমিক পরিশোধও কম গুরুত্বপূর্ণ নহে। আমরা দেখিয়াছি, ইহার পূর্বেও শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ে রাস্তায় নামিয়াছেন; সপ্তাহখানেক পূর্বে কারখানা খুলিয়া দিবার জন্য মানববন্ধনও করিয়াছেন। আমরা মনে করি, শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য এবং কেবল তাহাদের কর্মসংস্থানের জন্যই নহে, বরং দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদনশক্তি চালু রাখিবার তাগিদ হইতেও কারখানা খুলিয়া দেওয়া জরুরি।  আমরা জানি, গত মধ্য ডিসেম্বরে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর ১৬টি...
    পাঠ্যবইয়ের মলাটে ‘আদিবাসী’ শব্দ-সংবলিত গ্রাফিতি ব্যবহারের পক্ষে-বিপক্ষে দুইটি সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরিয়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সম্মুখে সংঘর্ষের বিষয় নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। পাঠ্যপুস্তকের আধেয় বিষয়ে মতপার্থক্য থাকিতেই পারে। উহা লইয়া পরস্পরবিরোধী কর্মসূচিতেও আপত্তি নাই। কিন্তু এক পক্ষ যখন অপর পক্ষের উপর শারীরিকভাবে হামলা করিয়া থাকে, তখন উহা সন্দেহাতীতভাবেই ফৌজদারি অপরাধ। বিশেষত বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে যেইভাবে এক পক্ষকে প্রহার ও রক্তাক্ত করা হইয়াছে, উহা সন্ত্রাসী তৎপরতা ব্যতীত কী হইতে পারে! আমরা দেখিতে চাহিব, অবিলম্বে দায়ীদিগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা লওয়া হইয়াছে। বৃহস্পতিবার যদিও অন্তত দুইজন হামলাকারী আটকের খবর পাওয়া গিয়াছে, দায়ী সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ব্যতীত এই প্রকার অঘটনের আরও শঙ্কা থাকিয়া যায়।    আলোচ্য সংঘর্ষের নেপথ্যে যদিও পার্বত্য চট্টগ্রামকেন্দ্রিক দুইটি সংগঠন যথাক্রমে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা এবং স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টির নাম আসিয়াছে...
۱