‘এইসব “ডক্টর” লইয়া আমরা কী করিব’ শিরোনামে ২০২৪ সালের ২৮ জুন প্রথম আলোয় একটি লেখা লিখেছিলাম তৎকালীন কুখ্যাত তিন ব্যক্তিত্বের—সেনাপ্রধান আজিজ, পুলিশপ্রধান বেনজীর আর ছাগল-কাণ্ডের মতিউর—তথাকথিত ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়ে।

সে লেখার একটি অংশ ‘দোর্দণ্ড প্রতাপ, ক্ষমতা, রাষ্ট্রীয় পদক ও অর্থবিত্তের বিপুল সম্ভারের পরও যেন তাঁদের বুকে একটা শূন্যতা রয়ে যায়। আর তা হচ্ছে একটা ডক্টরেট ডিগ্রি! নামের আগে ড.

যোগ।

এত প্রাপ্তিযোগের পর এ খায়েশটি তাহলে কেন অপূর্ণ থাকবে? এটাও খেতে হবে। লুৎফর রহমান রিটনের সেই বিখ্যাত “খিদে” কবিতার মতো।’ সংগত কারণেই তাঁরা সবাই সাবেক স্বৈরাচারী শাসকের খুব কাছের লোক ছিলেন।

আরও পড়ুনএইসব ‘ডক্টর’ লইয়া আমরা কী করিব২৮ জুন ২০২৪

সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ পেল তাঁদের আরেক ঘনিষ্ঠজন তুরিন আফরোজের পিএইচডি তথা ডক্টরেট ডিগ্রি জালিয়াতি। পিএইচডি শেষই করেননি, তবু নামের আগে ড. লিখতেন বা নিজেকে ড. পরিচয় দিতেন।

এ যেন কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ খুঁজে পাওয়ার মতো। তুরিন আফরোজ তাঁর মাকে স্বীকার করেন না। আর সেই মামলায় আইনজীবী সাক্ষ্যপ্রমাণের জন্য বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সময় তিনি মায়ের নাম কী লিখেছেন, তা খুঁজতে গিয়ে জানা গেল যে তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি ভুয়া, অর্জনই করেননি।

দিনক্ষণসহ তাঁর পিএইচডি সুপারভাইজর ই-মেইল করে জানান, তাঁর অধীন পিএইচডি শুরু করলেও তিনি শেষ করেননি, বাংলাদেশে ফিরে গেছেন।

তুরিনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ এখনো আসেনি বিধায় ধরে নিতে পারি, এটাই সত্য। তা ছাড়া সুপারভাইজারের ভুল হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে, এ নামে কাউকে তারা পিএইচডি দেয়নি।

আরও পড়ুনআজিজ-বেনজীরকে এমন পিএইচডি কীভাবে দিল বিশ্ববিদ্যালয় ২৩ জুন ২০২৪

মজার কথা হচ্ছে, স্বৈরাচারের দোসরদের এই পিএইচডি-প্রীতির আগে, স্বয়ং স্বৈরাচার, অর্থাৎ তাদের নেত্রী কি কম গিয়েছিলেন?

হাসিনার প্রথম মেয়াদকাল, অর্থাৎ ১৯৯৬-২০০১ সালে তিনি এক ডজনের মতো ‘সম্মানসূচক ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়েছিলেন তথা কিনেছিলেন।

তখন কূটনীতিপাড়ায় একটি কৌতুক প্রচারিত ছিল, বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর তখনকার অন্যতম দায়িত্বের মধ্যে একটা ছিল হাসিনার জন্য সেই দেশ থেকে একটি  ‘সম্মানসূচক ডক্টরেট’ ডিগ্রির ব্যবস্থা করা।

আর তা করতে পারলে সেই রাষ্ট্রদূতের উন্নতি শনৈঃশনৈঃ! ভারত থেকে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ডিগ্রি নিয়েছিলেন তিনি।

একনায়ক কিংবা স্বৈরাচারদের এই পিএইচডি-প্রীতি কিন্তু নতুন কিছু নয়। ২০১২ সালে মুক্তি পায় বিশ্বখ্যাত হলিউড চলচ্চিত্র ‘দ্য ডিক্টেটর’।

আরও পড়ুনবিদেশে পিএইচডি ডিগ্রি নিতে যাওয়া কি অপরাধ৩০ নভেম্বর ২০২৩

নায়ক অ্যাডমিরাল আলাদিন ওয়াদিয়া রাজ্যের তথাকথিত অবিসংবাদিত নেতা, কিন্তু আসলে একজন ‘ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসক’। ছবির ভাষ্যমতে, রাজ্যজুড়ে তাঁর এতটাই কর্তৃত্ব যে একাধারে তিনি রাষ্ট্রপ্রধান, রাজ্যের প্রধান চিকিৎসক এবং সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড়। তিনি তাঁর রাজ্যে নিজেই একটি মিথ্যা অলিম্পিকের আয়োজন করে নিজেই ১৪টি সোনা জেতেন।

ছবিতে দেখা যায়, আগে দৌড় শুরু করাসহ প্রতিদ্বন্দ্বী খেলোয়াড়দের গুলি করে আহত করার মধ্য দিয়ে একটি দৌড় প্রতিযোগিতায় তিনি সোনা জেতা নিশ্চিত করছেন। সব রাস্তাঘাট ও প্রতিষ্ঠান তাঁর নামে—মূর্তি সর্বত্র।

এমনকি দেশের ভাষা পরিবর্তন করে প্রায় অধিকাংশ শব্দের আগে-পরে তিনি ‘আলাদিন’ যোগের নির্দেশ দেন। যেমন আপনি যদি ‘হ্যাঁ’ বলতে চান বা ‘না’ বলতে চান, এ দুই ক্ষেত্রেই আপনাকে ‘আলাদিন’ বলতে হবে, তবে মুখের ভাব দুই ক্ষেত্রে দুই রকম হবে।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, তিনি রাজ্যের সর্বোচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিও বটে, যিনি ১১৮টি পিএইচডি ডিগ্রি ও ৩০টি পোস্টডক্টরাল সম্পন্ন করেছেন। রাজ্যের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাধ্যতামূলকভাবে তাঁকে ডিগ্রি দিয়ে থাকে।

সে তুলনায় হাসিনার পিএইচডির সংখ্যা কিছুটা কমই ছিল। তবে ২০০৮-২০২৪ মেয়াদে তাঁর নজর পিএইচডি নয়, বরং এর চেয়েও বড় কিছুতে পড়েছিল, আর তা হচ্ছে ‘নোবেল প্রাইজ’।

ওয়াদিয়া রাজ্যের আলাদিনও যে চেষ্টা করেননি, শেখ হাসিনাকে সেই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে শোনা যায়। ‘লবিস্ট’ থেকে আরম্ভ করে চামচা সাংবাদিক—সবাই এই অসিলায় তাঁর কাছ থেকে টাকা বাগিয়েছেন।

২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার দিন তিনি নাকি সারা দিন ফোনের কাছে বসে ছিলেন এই আশায় যে নোবেল প্রাপ্তির খবর দেওয়ার জন্য আসা ফোনকলটা না আবার মিস করেন।

তাঁর বদলে ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তিতে তিনি ব্যাপকভাবে আহত ও রাগান্বিত হয়েছিলেন, যে গোস্‌সা দিন দিন বাড়তেই থাকে। তবে ‘একবার না পারিলে দেখো শতবার’-এর মতো তাঁকে এ চেষ্টা দ্বিতীয়বারও করতে দেখা যায়।

রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করে আবারও বুক বাঁধতে দেখা যায় একটি ‘নোবেল’-এর আশায়। সেই লক্ষ্যে ভাসানচরে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে বানিয়েছেন সুদৃশ্য স্থাপনা। কিন্তু আবারও বিফল! কারণ, নকল কিংবা ভুয়া ‘নোবেল’-এর প্রচলন এখনো শুরু হয়নি।

ফলে, ২০০৮-২০২৪ মেয়াদে নেত্রীর ‘নোবেল’-চেষ্টার বিপরীতে ছোট মাপে পিএইচডি ডিগ্রি প্রাপ্তির চেষ্টাটি তাঁর চামচা বা ঘনিষ্ঠ অনুসারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা যায়—আজিজ, বেনজীর, তুরিন কিংবা মতিউর।

তবে স্থান-কাল-পাত্রনির্বিশেষে প্রায় সব সরকারের আমলেই আমাদের মতো দুর্নীতিপীড়িত দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের অপরিসীম লোভ-লালসার অংশ হিসেবে পিএইচডি-প্রীতি বরাবরই ছিল।

‘গাছেরটা খাওয়া আর তলারটাও কুড়নো’-র মতো শেষ জীবনে এসে তাঁদের আধ্যাত্মিকতা তথা জ্ঞানচর্চার ব্যাপক আকাঙ্ক্ষার জন্ম হয়। শুধু তা-ই নয়, শেষ জীবনে নামীদামি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষক হওয়ার জন্যও তাঁরা উঠেপড়ে লাগেন।

তাঁদের ডিগ্রি দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে, ঠিক ওয়াদিয়া রাজ্যের মতো। নিশ্চিত করেই বলতে পারি, আগের সরকারটি আর কিছুদিন বেঁচে থাকলে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে এর পরের পিএইচডি ডিগ্রিটি পেত পুলিশের বিখ্যাত সেই ‘হারুন’। ডিগ্রিটি দিতেন অধ্যাপক ‘মিজান’ কিংবা ‘ছলিমুল্লাহ’ (কল্পিত নাম)।

আফসোসের বিষয়, ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়েও এই প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের একজন জাঁদরেল সচিব নামের আগে ড. লেখেন, কিন্তু সবাই জানে যে তাঁর ডিগ্রিটি ভুয়া।

অথচ তাঁর হার্ভার্ড থেকে একটি মাস্টার্স ডিগ্রি আছে এবং এটাই তাঁর বিদ্যার দৌড় প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট ছিল। ভুয়া পিএইচডিটি লিখে নিজেকে আরও ছোট করলেন।

এ ধরনের ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি নিয়ে আমার এক বন্ধু তাঁর একটি অভিজ্ঞতার গল্প করলেন এরূপ: ‘বনানীতে একবার “ইউনিভার্সিটি অব হনলুলু (ইউএসএ)” লেখা একটি বিলবোর্ড দেখলাম। কৌতূহলবশত আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম যে তারা খুব কম খরচে মাস্টার্স ও পিএইচডি অফার করছে! আমি নিশ্চিত ছিলাম যে এটি জাল! এক বছর পর এটি অদৃশ্য হয়ে গেল!

‘কয়েক বছর পর আমি একটি বিখ্যাত এনজিওর এক নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে দেখা করি এবং তিনি যখন তাঁর ভিজিটিং কার্ডটি আমাকে দেন, তখন আমি দেখতে পাই যে তাঁর নামের আগে ডক্টর লেখা এবং সেই পিএইচডি ডিগ্রি করেছেন হনলুলু বিশ্ববিদ্যালয় (ইউএসএ) থেকে।’

উল্লেখ্য, হনলুলু নামে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। আছে ‘হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়, হনলুলু, ইউএসএ’। শুধু অনলাইনে দৃশ্যমান, বাস্তবে অস্তিত্বহীন—এ ধরনের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পাবেন নেট দুনিয়ায়। শুধু পিএইচডি ডিগ্রি নয়, নেট দুনিয়ায় নকল জার্নাল, যা ‘প্রিডেটরি জার্নাল’ হিসেবে পরিচিত, এর সংখ্যা আসল জার্নালের চেয়ে বেশি।

আছে ভুয়া পাবলিশার, যেখানে আপনি যেকোনো লেখাই বই আকারে প্রকাশ করতে পারেন ইত্যাদি।      

এসব ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ে থাকেন সরকারি কর্মকর্তারা। তাঁরা মূলত সেই ব্রিটিশরাজের আমল থেকেই রাজা। জনগণকে ভাবেন প্রজা, যদিও জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তাঁদের বেতন হয়।

ভয় হয়, এর অপব্যবহার আরও বাড়বে কি না! প্রথম সারির দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এই যোগ্যতা আছে বলে মনে হয় না। ভুয়া পিএইচডি নিয়ে এই তেলেসমাতি যুগ যুগ ধরে চলমান। আর সে জন্যই, বিখ্যাত সে গল্প—ঘোড়া আর গাধার পিএইচডি লোকের মুখে মুখে। ক্ষমতাধরদের এই ভুয়া পিএইচডি-প্রীতিকে নেহাতই একটি নিষ্পাপ ‘খায়েশ’ হিসেবে হেসে উড়িয়ে দেওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়।

ফলে আলাদিনের মতো ‘খায়েশ’-এর তাঁদের কমতি নেই। একটি সরকারি মিটিংয়ে একবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে চার মাসব্যাপী পরিচালিত একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন মূল্যায়ন করতে গিয়ে বারবার তাঁর পিএইচডি গবেষণার জের টানতে দেখলাম।

পরে শুনেছি, তিনিও ছয় মাসে পিএইচডিধারী সেই সরকারি কর্মকর্তাদেরই একজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ ধরনের পিএইচডি নেওয়ার সম্ভাবনা কম। কেননা, এখানে সবাই জানেন কোনটি ভুয়া আর কোনটি আসল বিশ্ববিদ্যালয়।

তবে তাঁদের ক্ষেত্রে যা হয়—নিম্নমানের ডিগ্রি কিংবা নকল করা অভিসন্দর্ভ। ৯৮ শতাংশ নকল করা এক পিএইচডি অভিসন্দর্ভ ধরা পরেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গত সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে এ ধরনের নিম্নমানের ডিগ্রিধারীর সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি।

ঢাকায় অবস্থিত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ দিই। স্মরণাতীতকালের ইতিহাসে সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটে নিয়োগ পেয়েছিলেন ভারত থেকে ডিগ্রি নেওয়া তিনজন।

বুয়েটের ইতিহাসে সম্ভবত হাতে গোনা দু-একজন ভারত থেকে ডিগ্রি নেওয়া বা বাংলাদেশি পিএইচডিধারী পাবেন। ৯৯ শতাংশই বিশ্বের নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী।

অথচ হাসিনা আমলে সেখানে প্রথমবারের মতো উপাচার্য নিয়োগ পেয়েছেন ভারত থেকে নেওয়া একজন পিএইচডিধারী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরপর দুজন ভারত থেকে নেওয়া ডিগ্রিধারী প্রায় পনেরো বছর ধরে উপাচার্য পদে আসীন ছিলেন।

একজন মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, আরেকজন আলীগড়ের পিএইচডি। অথচ অক্সফোর্ড-কেমব্রিজসহ বিশ্বের নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডিধারীদের ছড়াছড়ি সেখানে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে বহুদিন ছিলেন বাংলাদেশি পিএইচডিধারী বিখ্যাত এক টক শোবিদ, যিনি কিনা যুবলীগের প্রধান হওয়ার খায়েশও প্রকাশ করেছিলেন।

দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পিএইচডির মান নিয়ে বরাবরই ব্যাপক বিতর্ক আছে। আবার শুনেছি, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

ভয় হয়, এর অপব্যবহার আরও বাড়বে কি না! প্রথম সারির দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এই যোগ্যতা আছে বলে মনে হয় না।

ভুয়া পিএইচডি নিয়ে এই তেলেসমাতি যুগ যুগ ধরে চলমান। আর সে জন্যই, বিখ্যাত সে গল্প—ঘোড়া আর গাধার পিএইচডি লোকের মুখে মুখে। ক্ষমতাধরদের এই ভুয়া পিএইচডি-প্রীতিকে নেহাতই একটি নিষ্পাপ ‘খায়েশ’ হিসেবে হেসে উড়িয়ে দেওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়।

এটি উচ্চশিক্ষাকে প্রহসনে পরিণত করে, প্রকৃত পিএইচডিধারীরা বিব্রত হন এবং গবেষণার পরিবেশ নষ্ট হয়। সরকার চাইলে খুব সহজেই এই হাস্যকর প্রবণতা বন্ধ করতে পারে।

ইউজিসি বা অন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম থেকে পিএইচডি গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ের আগে কাউকে নামের সঙ্গে পিএইচডি টাইটেল যোগ করা যাবে না মর্মে একটি পরিপত্র জারি করলেই কিন্তু হয়ে যায়।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পিএইচডি ডিগ্রির মান নিয়ন্ত্রণেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ভালো মানের জার্নালে প্রকাশনা ছাড়া কাউকেই পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া উচিত নয়।

ড. মো. সিরাজুল ইসলাম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক

মতামত লেখকের নিজস্ব

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প এইচড ধ র র প এইচড কর মকর ত ই প এইচড ন ম র আগ এ ধরন র র জন য দ র এই আল দ ন সরক র প রথম সবচ য়

এছাড়াও পড়ুন:

১০৩ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে শুটিং ও অসুস্থ বাবা, প্রশংসা পাচ্ছে সেই নাটক

নাটকের নাম ‘মাটির মেয়ে’। নামের মাঝোই মাটির ঘ্রাণ রয়েছে যেনো। রয়েছে আবহমান বাংলার চিরায়ত গল্পের প্রতিচ্ছবি। যে নাটকে গ্রামের সহজ সরল একজন মেয়ের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। যাকে খাঁচায় বন্দি করা যায়, যাকে অত্যাচার করা যায়। এতোটাই সরল সে। মূলত কঠিন এই পৃথিবীতে একজন নারীর সহজ-সরল নারীর পরিণতির বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে। 

নাটকটি নির্মাণ করেছেন  নির্মাতা আর্থিক সজীব। এতে মূল ভুমিকায় অভিনয় করেছেন শায়লা সাথী।

অভিনেত্রীর ভাষ্য, চরিত্রটিতে অভিনয়ের দারুণ সুযোগ ছিল। ১০৩ডিগ্রী জ্বর ও বাবার অসুস্থতা মাথায় নিয়ে আমি নাটকটির শুটিং করেছি।  চেষ্টা করেছি বিপদে পড়া মেয়ের বাস্তবতা ফিল করতে।  চোখের ভাষায়, হাঁটাচলায় সেই অনুভূতিগুলো ফুটিয়ে তুলতে। দর্শক যদি একটু থেমে চরিত্রটার কষ্টটুকু উপলব্ধি করেন-তাহলেই আমার পরিশ্রম সার্থক।’

নাটকে শায়লা সাথীর পথচলা বেশ ক’বছরের। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। অভিনয়ের ছলাকলা শিখেই তাই এ অঙ্গনে পা রাখছেন। যার প্রমাণ নাটকটিতেও পাওয়া গেল। 

প্রচারের পর নাটক গ্রহণ করেছে দর্শক। প্রিয়ন্তি নামের একটি ইউটিউবে নাটকে প্রচারের দুই দিনেরম মাথায় প্রায় তিন মিলিয়ন ভিউ হয়েছে।  ক্লাসিক ফ্রেমিং দিয়ে, আবেগ ও আবহ সংগীতের সংমিশ্রণের এই নাটকের মন্তব্যের ঘরে সব মন্তব্যই পজেটিভ।  

নির্মাতা  বলেন, “এই নাটকটিতে আমি একজন সহজ সরল মাটির মেয়ের জীবনের কষ্ট গুলো তুলে ধরেছি, নাটকটিতে একাধিক মনটাজের ব্যবহার করা হয়েছে , এটি একটি অফ-ট্রাকের সিনেমাটিক গল্প ।এই গল্পে শায়লা সাথী দারুন অভিনয় করেছে। আমার বিশ্বাস দর্শকদের অন্যরকম এক আবেগে ভাসাবে নাটকটি। 

শায়লা সাথী ছাড়াও নাটকটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন, ইফতেখার দিনার, তামিম, তুহিন চৌধুরী, সাবেরি আলম, সূচনা শিকদারসহ অনেকেই। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রিকশাচালকদের জন্য প্রশিক্ষক তৈরিতে ব্যয় ৫৪ লাখ টাকা
  • হামজাকে দেখেই তাঁদের বাংলাদেশি হওয়ার স্বপ্ন জাগে
  • মাগুরায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, জেলের মরদেহ উদ্ধার
  • পুরো প্রজন্ম ধ্বংস করতে একজন মাদকাসক্তই যথেষ্ট : মাও. ফেরদাউস 
  • করোনাভাইরাস: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এক, আক্রান্ত ১০
  • ঘরে অসুস্থ বাবা আর ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে শুটিং করা নাটকটি প্রশংসা পাচ্ছে: শায়লা সাথী
  • শৈশবের স্মৃতি হাতড়াতে রাজশাহীতে কবিপুত্রের একদিন
  • গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে দুজনের মৃত্যু
  • ১০৩ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে শুটিং ও অসুস্থ বাবা, প্রশংসা পাচ্ছে সেই নাটক
  • প্রযুক্তিপণ্যের দাম দোকানভেদে সামান্য কমবেশি হলেও সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে