বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় ছাত্র গ্রেপ্তার
Published: 5th, February 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক ছাত্রী। এ ঘটনায় ওই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বাদী হয়ে বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পরেই ওই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম আজ বুধবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, অভিযুক্ত ছাত্র দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভুক্তভোগী তাঁর এক সহপাঠীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর ষষ্ঠতলায় পড়াশোনা নিয়ে আলাপ করছিলেন। ওই সময় ওই ছাত্র তাঁকে ফোন করে সিঁড়ির কাছে আসতে বলেন। সেখানে পৌঁছালে তিনি জোরপূর্বক তাঁকে টেনেহিঁচড়ে সিঁড়ির ওপরের ছাদে নিয়ে যান। এরপর বেঞ্চের ওপর বসিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী প্রতিরোধ করলে ওই ছাত্র তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন, এতে তাঁর বাঁ হাতে সামান্য আঘাত লাগে। ঘটনার পর তিনি (ভুক্তভোগী ছাত্রী) চিৎকার দিলে সহপাঠীরা ছুটে আসেন। পরে তাঁর বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও ছাত্র উপদেষ্টার মাধ্যমে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে বিষয়টি লিখিত অভিযোগ দেন।
শিক্ষার্থীদের সূত্র জানায়, ঘটনার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে। এ সময় দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে প্রক্টর, দুই বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বন্দর থানায় গিয়ে মামলা করেন।
অভিযুক্ত ছাত্র অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই ছাত্রীর সঙ্গে তাঁর চার-পাঁচ মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর সূত্র ধরে মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যার। এ সময় সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহের জেরে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জেরেই তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ টি এম রফিকুল ইসলাম বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিই। দুজন নারী সহকারী প্রক্টরকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মাধ্যমে আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আশ্বস্ত করি যে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একাডেমিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে সে ক্ষেত্রেও আমরা তাঁকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেব। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ, ৬ ঘণ্টা পর পুকুরে ভেসে উঠল নানি-নাতির মরদেহ
নাটোরের লালপুরে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে নানি ও নাতির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার পুরাতন ঈশ্বরদী ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত দুজন হলেন সাদিপুর গ্রামের নূর মোহাম্মদের মেয়ে মানু খাতুন (৫৬) ও তাঁর নাতি আল আমিন (৮)। আল আমিন লালপুর উপজেলার পালিদহ গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।
থানা–পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আল আমিন সাদিপুর গ্রামে নানির বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। গতকাল দুপুরে সে নানির সঙ্গে গ্রামের একটি পুকুরে গোসল করতে যায়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তাঁরা বাড়িতে না ফেরায় স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় ওই পুকুরে প্রথমে মানু খাতুনের, পরে আল আমিনের মরদেহ ভেসে ওঠে। স্থানীয় লোকজন দুটি মরদেহ উদ্ধার করে নূর মোহাম্মদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। পুলিশের অনুমতি নিয়ে রাতেই তাঁদের দাফন সম্পন্ন হয়।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুজ্জামান জানান, পুকুরে গোসল করতে গিয়ে গভীর পানিতে নেমে হয়তো তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে কারও কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয়েছে।