এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিট খারিজ
Published: 10th, August 2025 GMT
এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠার জন্য জারি করা অধ্যাদেশটির বৈধতা নিয়ে রিট খারিজ হয়েছে। শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রিটটি উত্থাপিত হয়নি বিবেচনায় খারিজ করে দিয়েছেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামের নতুন দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠায় গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জুয়েল আজাদ গত ১৭ মে রিটটি করেন। আজ রিটটি শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ৭৪ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী জুয়েল আজাদ নিজে শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
হাইকোর্টে রিটটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অর্থাৎ রিটটি খারিজ হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়—এটি সরকারের পলিসি সিদ্ধান্ত, এতে আদালতের হস্তক্ষেপ করা সমীচীন হবে না। ওই অধ্যাদেশ নিয়ে জনস্বার্থ আকারে আবেদনকারী রিট করলেও কেন তিনি সংক্ষুব্ধ তা দেখাতে পারেননি। রিট খারিজ হওয়ায় দুটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠার জন্য জারি করা অধ্যাদেশ বলবৎ থাকবে।’
রিট আবেদনকারী আইনজীবী জুয়েল আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালত রুল না দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তখন রিটটি উত্থাপন না করার কথা বলেন। আদালত রিটটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন।’
‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ শিরোনামের ওই অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ কর আইন প্রয়োগ ও কর আদায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। রাজস্ব সংগ্রহের মূল কাজ করবে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, সংবিধানের ২৬, ৩১ ও ২৯(১) অনুচ্ছেদের আলোকে ওই অধ্যাদেশটি কেন সাংঘর্ষিক এবং আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছিল। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি সংস্কার বিষয়ে অংশীজনদের (দলগত) প্রস্তাব প্রকাশ করতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল। রুল বিচারাধীন অবস্থায় ওই অধ্যাদেশের কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়েছিল রিটে। আইনসচিব ও অর্থসচিবকে রিটে বিবাদী করা হয়েছিল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হয় ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নিউজিল্যান্ডে সন্তানদের হত্যা করে স্যুটকেসে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় মা দোষী সাব্যস্ত
নিউজিল্যান্ডে দুই সন্তানকে হত্যা করে তাদের মৃতদেহ স্যুটকেসে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এক নারী। প্রায় দুই সপ্তাহ বিচারকাজ চলার পর আজ মঙ্গলবার অকল্যান্ড হাইকোর্টে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন।
৪৪ বছর বয়সী ওই নারীর নাম হাকইয়ুং লি। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
আদালতে লির আইনজীবীরা যুক্তি দেখিয়েছিলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় তাঁদের মক্কেল মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর স্বামীর ক্যানসারে মৃত্যু হওয়ার কয়েক মাস পর এ ঘটনা ঘটেছিল। তবে সরকারি কৌঁসুলি দাবি করেন, লির কর্মকাণ্ড পরিকল্পিত ছিল।
২০২২ সালে অকল্যান্ডের একটি পরিবার লির সন্তানদের মরদেহগুলো খুঁজে পায়। পরিবারটি অকল্যান্ডের নিলাম থেকে একটি পরিত্যক্ত গুদামের জিনিসপত্র কিনেছিল। সেখানকারই একটি স্যুটকেসে দেহাবশেষগুলো খুঁজে পায় তারা। ধারণা করা হয়, কয়েক বছর ধরে দেহাবশেষগুলো গুদামে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল।
লি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার উলসান থেকে গ্রেপ্তার হন। সে বছরের শেষদিকে তাঁকে নিউজিল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়।
মামলা চলাকালে আদালতে বলা হয়, লির সন্তানদের মৃতদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল যে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকের বরাতে কৌঁসুলিরা বলেছেন, ওই শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। তবে ঠিক কী পদ্ধতিতে করা হয়েছে, তা নিশ্চিত নয়। তাদের বিষণ্নতারোধী একটি ওষুধ দেওয়া হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
কৌঁসুলিরা বলছেন, লি যথেষ্ট বুঝেশুনেই কাজ করেছেন। সন্তানদের মৃতদেহ লুকিয়ে রাখা, নিজের নাম পাল্টানো এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে যাওয়ার মতো সিদ্ধান্তগুলো তিনি সুচিন্তিতভাবেই নিয়েছিলেন।আদালতে বলা হয়েছে, লি ২০১৭ সালের আগস্টে একটি ফার্মেসি থেকে ওই ওষুধ কেনার জন্য প্রেসক্রিপশন নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী ইয়ান জোর ক্যানসার ধরা পড়ার পাঁচ মাস পরের ঘটনা এটি।
লির আইনজীবীর দাবি, স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় এবং তিনি মনে করতে শুরু করেন যে সবার একসঙ্গে মরে যাওয়াটাই ভালো। আর সে ভাবনা থেকেই তিনি নিজেকে ও সন্তানদের মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তিনি ওই ওষুধের ভুল ডোজ নেওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। ঘুম ভাঙার পর তিনি দেখেন তাঁর সন্তানেরা মারা গেছে।
নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের একটি পরিত্যক্ত গুদাম থেকে ২০২২ সালে লির সন্তানদের মরদেহ উদ্ধার হয়