ব্রাজিলে আবারো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ২
Published: 16th, February 2025 GMT
ব্রাজিলে আবারো বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব সাও পাওলো রাজ্যের একটি গ্রামীণ শহরে একটি ছোট বিমান আখ ক্ষেতে বিধ্বস্ত হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় দমকল বিভাগের বরাত দিয়ে রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে সিনহুয়া নিউজ।
দমকল বিভাগের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, কাছের একটি বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর কোয়াড্রাহাদ শহরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, এতে আরোহী দুজন নিহত হন।
আরো পড়ুন:
চ্যাম্পিয়ন হতে অপেক্ষা বাড়ল ব্রাজিলের, আর্জেন্টিনারও
৬ গোল খাওয়া ব্রাজিল এখন আর্জেন্টিনার ওপরে
তিনি আরো জানান, বিমানটি জরুরি অবতরণের চেষ্টা করেছিল কিন্তু আখ ক্ষেতের সঙ্গে ধাক্কায় বিস্ফোরিত হয়।
এর আগে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সাও পাওলোর একটি ব্যস্ত সড়কে একটি ছোট বিমান বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ওই দুর্ঘটনায় পাইলট এবং একজন যাত্রী নিহত এবং ছয়জন আহত হন।
ব্রাজিলের টিভি চ্যানেল গ্লোবোনিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ব্রাজিলে সাতটি বিমান দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দিনমজুর বাদশা মিয়াকে আমাদের সাধুবাদ
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের দিনমজুর বাদশা মিয়া তাঁর এলাকায় ‘গাছের বন্ধু বাদশা’ নামে পরিচিত। এই পরিচয় কোনো সরকারি পদক বা ধনাঢ্য প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি থেকে আসেনি; এসেছে বিগত ২০ বছর ধরে ৩০ হাজারের বেশি গাছ লাগিয়ে। তাঁর এ কাজ প্রমাণ করে, পরিবেশপ্রেম ও নিঃস্বার্থ সামাজিক দায়বদ্ধতা কোনো অর্থ বা ক্ষমতার মুখাপেক্ষী নয়, এটি গভীর মানবিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ।
৭২ বছর বয়সী বাদশা মিয়ার স্লোগান—এক মুঠো ভাত নয়, এক মুঠো অক্সিজেন চাই। আজকের পরিবেশ সংকটের যুগে এক শক্তিশালী দার্শনিক বার্তা। বাদশা মিয়ার গাছ লাগানোর গল্পটি কেবল সবুজায়নের নয়, এটি এক পিতার গভীর আবেগের গল্প। ২০০৪ সালের এক বিকেলে, টাকার অভাবে সন্তানদের আমের আবদার মেটাতে না পারার কষ্ট থেকে তিনি উপলব্ধি করেন, তাঁর মতো গরিব প্রতিবেশীর সন্তানেরাও ফল কিনতে পারে না। সেই ব্যক্তিগত বেদনা থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন—তিনি এমন কিছু করবেন, যা তাঁর নিজের ও দরিদ্র প্রতিবেশীদের সন্তানদের জন্য ফলের অধিকার নিশ্চিত করবে।
এই স্বপ্ন পূরণে বাদশা মিয়ার ত্যাগ ছিল হিমালয়সম। প্রাথমিক পুঁজি জোগাতে তিনি মেয়ের কানের সোনার রিং বিক্রি করে গাছের গোড়ায় খুঁটি দেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেন, দিনমজুরি করে যা আয় করবেন, তার চার ভাগের এক ভাগ ব্যয় করবেন চারা লাগানো এবং পরিচর্যার পেছনে। একজন ভূমিহীন দিনমজুরের কাছে আয়ের এক-চতুর্থাংশ মানে জীবনধারণের সঙ্গে সরাসরি আপস করা। এই আত্মত্যাগই প্রমাণ করে, তাঁর কাছে এই গাছগুলো নিছক চারা নয়—গভীর মমতায় লালন করা এগুলো যেন তাঁর সন্তানের মতোই।
বাদশা মিয়ার কাজকে সমাজ প্রথম দিকে মোটেই সহজভাবে নেয়নি। উল্টো গ্রামের কিছু মানুষ তাঁকে ‘পাগল’ বলে উপহাস করেছে। গাছের চারা লাগাতে গিয়ে তিনি মানুষের বাধা পেয়েছেন, তাঁর লাগানো গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং একপর্যায়ে তাঁকে মারধরও করা হয়েছে। কিন্তু সেই সমাজের মানুষই এখন বাদশা মিয়ার দীর্ঘ ত্যাগ ও পরিশ্রমের সুফল ভোগ করছে।
বাদশা মিয়ার এই উদ্যোগ কেবল একটি স্থানীয় গল্প নয়, এটি সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি শিক্ষা। কোটি কোটি টাকার বন সৃজন প্রকল্প যেখানে অনেক সময় লোকদেখানো বা অপচয়ের শিকার হয়, সেখানে একজন দিনমজুর দেখিয়ে দিলেন, ভালোবাসা ও সদিচ্ছা থাকলে সামান্য সম্পদ দিয়েই পরিবেশবিপ্লব ঘটানো সম্ভব।
উপজেলা প্রশাসন বাদশা মিয়াকে পুরস্কৃত করেছে, যা প্রশংসনীয়। আমরা আশা করব, স্থানীয় বন বিভাগ ও কৃষি বিভাগ বাদশাকে গাছ লাগানোর কাজে স্থায়ীভাবে সহযোগিতা করবে। বাদশা মিয়ারা আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁর প্রতি আমাদের অভিবাদন।