চিকিৎসকদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক সায়েদুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, বর্তমানে চিকিৎসকদের বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার বয়স ৩২ বছর। এটাকে দুই বছর বাড়িয়ে চিকিৎসকদের বিসিএস পরীক্ষার বয়স ৩৪ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনপরিসংখ্যান ব্যুরোতে বড় নিয়োগ, পদ ২৬৬৩ ঘণ্টা আগে

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের সময় বঞ্চিত হয়ে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের কারণে চিকিৎসকেরা গত বুধবার তাঁদের বেতন-ভাতা নিয়ে ধর্মঘট করেছিলেন। তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে বর্তমান সরকার আন্তরিক। অন্তর্বর্তী সরকার শিগগিরই কিছু সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাঁদের এসব দাবি পূরণ করার চেষ্টা করবে।

আরও পড়ুনআইইএলটিএস প্রস্তুতি, ইংরেজির স্পষ্ট উচ্চারণের জন্য প্রতিদিন করণীয়৪ ঘণ্টা আগে

সরকারের আশ্বাসের ভিত্তিতে চিকিৎসকেরা গতকাল বুধবার আন্দোলন থেকে সরে এসেছে জানিয়ে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ‘তবে এখনো কিছু ইন্টার্ন চিকিৎসক শিক্ষার্থীরা ক্লাশে অনুপস্থিত রয়েছেন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি, সবাই যেন নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন।’ চিকিৎসক এবং রোগীদের সুরক্ষার জন্য আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উঠবে। এক সপ্তাহের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ার কাজটি শেষ হবে বলেও জানান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র রহম ন চ ক ৎসক ব স এস সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা জানালেন ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়েছেন তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই চিকিৎসকের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ–সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠান।

‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ আপডেট’ শীর্ষক ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত কয়েক দিনের বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষায় তাঁর স্বাস্থ্যে বেশ কিছু জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা এবং বিআইপিএপি মেশিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁর ফুসফুস ও অন্যান্য অর্গানকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য তাঁকে ইলেক্টিভ ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়।’

গত ২৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার ‘অ্যাকিউট প্যানক্রিয়েটাইটিস’ ধরা পড়ে, যেগুলোর নিবিড় চিকিৎসা এখনো চলছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। তাতে বলা হয়, ‘শরীরে গুরুতর ইনফেকশনের (ব্যাকটেরিয়া অ্যান্ড ফাঙ্গাল ইনফেকশন) কারণে তাঁকে উন্নত অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

পাশাপাশি কিডনির কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁর ডায়ালাইসিস শুরু করা হয়। এখনো নিয়মিত ডায়ালাইসিস দিতে হচ্ছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে। এ ছাড়া পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও ‘ডিআইসি’র ফলস্বরূপ তাঁকে রক্ত ও রক্তের বিভিন্ন উপাদান (ব্লাড অ্যান্ড ব্লাড প্রোডাকশন) ট্রানফিউশন দিতে হচ্ছে।

সব চিকিৎসার পরও জ্বর না কমার কারণে এবং পাশাপাশি রেগুলার ইকোকার্ডিওগ্রাফিতে অরটিক ভাল্‌ভে কিছু সমস্যা পরিলক্ষিত হওয়ায় টিইই (ট্রান্স অয়েসোপিগাল ইকো) করা হয় এবং সেখানে ইনফেক্টিভ এন্ডোকার্ডাইটিস ধরা পরে। সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের পরামর্শে এ রোগের চিকিৎসা গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়।

সাবেক এই সরকারপ্রধান দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে রয়েছে লিভারসংক্রান্ত জটিলতা, কিডনিসংক্রান্ত জটিলতা, হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ও ইনফেকশন–জনিত সমস্যা। এগুলোর চিকিৎসা তিনি দীর্ঘদিন ধরে পেয়ে আসছেন।

নিজ বাসভবনে অবস্থানকালে তাঁর শ্বাসকষ্ট, কাশি, জ্বর ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা যায়। কিন্তু ক্রমান্বয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি-পরবর্তী পরীক্ষা–নিরীক্ষায় তাঁর ফুসফুস, হৃদ্‌যন্ত্র ও কিডনির অবস্থার দ্রুত অবনতি পরিলক্ষিত হওয়ায় তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে কেবিন থেকে উন্নত চিকিৎসা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।

চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ

খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসংক্রান্ত এসব তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি বিবৃতিতে তুলে ধরা হয় চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণও। তাতে বলা হয়, ‘দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রতিদিন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে তাঁর চিকিৎসা দিয়ে আসছেন।’ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা নিয়ে কোনো অনুমান বা ভুল তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বানও জানানো হয় তাতে।

গত ২৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।

আরও পড়ুনচিকিৎসায় ‘সাড়া দিচ্ছেন’ খালেদা জিয়া১০ ডিসেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনআপাতত ঢাকায় রেখে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চিকিৎসকদের ডিপফেক ভিডিও দিয়ে ভুয়া স্বাস্থ্যতথ্য ছড়ানোর অভিযোগ
  • খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা জানালেন ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার