কুষ্টিয়ায় মাজারে মাদক বিরোধী অভিযানে বাধা
Published: 20th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় একটি মাজারে মাদক বিরোধী অভিযানে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরে প্রশাসনের লোকজন অভিযান না চালিয়ে ফিরে আসেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযানের সময় মাজারের লোকজন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ভেড়ামারার সাতবাড়ীয়া বিত্তিপাড়া এলাকার ঘোড়াশাহ বাবার মাজারে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনায় ঘোড়াশাহ মাজারে যান। এসময় তাদের বাধা দেন মাজারে উপস্থিত ভক্ত-অনুসারীরা। তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন ও অভিযান টিমের সদস্যদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ছাত্র সমন্বয়কদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা
গোপালগঞ্জে গোবিপ্রবির ছাত্র অধিকার পরিষদের ২ নেতাকে মারধর
ভেড়ামারা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, “মাদক বিরোধী অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন এসিল্যান্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মাজারের লোকজনদের বাধার মুখে ফিরে আসেন তারা। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন বলেন, “মাদক বিরোধী অভিযানে গেলে মাজারের লোকজন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। যে কারণে অভিযান পরিচালনা করতে না পেরে আমরা ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। কারা এই উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। আপাতত এ বিষয়ে আর কিছু বলা যাচ্ছে না।”
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসনের লোকজন দেখেই উষ্মা প্রকাশ করেন লাল পোশাক পরিহিত কিছু উচ্ছৃঙ্খল ভক্ত-আশেকান। প্রশাসন কাজ শুরুর আগেই তারা আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন। বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের লোকজন ফিরে আসেন।”
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো.
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ অভ য ন র ল কজন র সদস
এছাড়াও পড়ুন:
সবুজ এলাকায় পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার কম হয়
উন্মুক্ত স্থান সবুজ থাকার সঙ্গে পুলিশি সহিংসতার সম্পর্ক আছে। সবুজ পরিসর বেশি এমন এলাকায় পুলিশ প্রাণঘাতী গুলি কম চালায়। সবুজ ভূমির সঙ্গে পুলিশের আচরণের এই সম্পর্ক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক ও গবেষক। গবেষণার ফলাফল নিয়ে একটি প্রবন্ধ ‘এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড বিহেভিয়ার’ নামের সাময়িকীতে ছাপা হয়েছে। ওই প্রবন্ধে বলা হয়েছে, নিরাপদ পাড়াপড়শি ও এলাকা নিরাপদ হওয়ার পেছনে ভূপ্রকৃতির মান ও পরিমাণের সম্পর্ক আছে।
গবেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ৩ হাজার ১০০ কাউন্টির (যুক্তরাষ্ট্রের সর্বনিম্ন প্রশাসনিক অঞ্চল) সবুজ পরিসর ও পুলিশের প্রাণঘাতী গুলির ঘটনার পাঁচ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছেন। সময় ছিল ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল। কাউন্টির মধ্যে মেট্রোপলিটন এলাকার ৮০৫টি কাউন্টিও ছিল।
গবেষণায় সামাজিক একটি পরিপ্রেক্ষিত যুক্ত করার জন্য গবেষকেরা সামাজিক বঞ্চনার কিছু সূচক ব্যবহার করেছিলেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য, শিক্ষার স্তর, শুধু বাবা অথবা মা থাকা পরিবার, ভাড়া বাস, ঘন বসতি, গাড়িবিহীন পরিবার, চাকরিতে থাকা ৬৫ বছরের কম বয়সীদের হার। গবেষকেরা দাবি করেছেন, কঠোর নিয়মকানুন মেনে গবেষণাটি করা হয়েছে।
গবেষকদের মধ্যে একজনের সংশয় ছিল যে সবুজের সঙ্গে প্রাণঘাতী গুলি বেশি ব্যবহারের সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে নেতিবাচক সম্পর্কই পাওয়া যায়। অর্থাৎ সবুজ যেখানে বেশি, গুলির ব্যবহার সেখানে কম।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মেট্রোপলিটন এলাকার যেসব কাউন্টিতে সবুজ বেশি, সেখানে প্রাণঘাতী গুলির ব্যবহার ১৫ শতাংশ কম। আর পুরো যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কাউন্টিতে সবুজ বেশি, সেখানে প্রাণঘাতী গুলির ব্যবহার ৯ শতাংশ কম। আবার সবুজের পাশাপাশি বঞ্চনা বেশি এমন এলাকাগুলোতে পুলিশের গুলির ঘটনা কম। সামাজিক বঞ্চনার নানা স্তরেই এটা দেখা গেছে।
সবুজের সঙ্গে পুলিশি সহিংসতার সম্পর্ক কী
গবেষকেরা বলছেন, সবুজ এলাকা যত বেশি, পুলিশি সহিংসতা তত কম হওয়ার সম্ভাব্য চারটি কারণ থাকতে পারে: ক. কোনো এলাকা সবুজ থাকার অর্থ এলাকাটিতে আশপাশের মানুষের আনাগোনা বেশি; খ. কোনো এলাকা সবুজ থাকার অর্থ এলাকাটির নিয়মিত যত্ন নেওয়া হয়, দেখভাল করা হয়; গ. সবুজ এলাকায় স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে; ঘ. সবুজ পরিবেশে অপরাধ কম হয়।
গবেষণা প্রবন্ধে আগের গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সবুজ পরিসর মানসিক চাপ থেকে দ্রুত সামলে উঠতে সহায়তা করে। সবুজের কারণে অপরাধ ও সহিংসতা কম হয়।
গবেষকেরা বলছেন, সবুজ এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তারা কম মানসিক চাপে থাকেন, তাঁরা দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব দেখাতে চান। তাঁরা সহিংস আচরণ থেকে বিরত থাকেন। অন্যদিকে সবুজের ভেতরে বেশি সময় কাটানোর কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হয়, এলাকায় একধরনের অনানুষ্ঠানিক নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে ওঠে এবং ঝগড়া-দ্বন্দ্ব অহিংস পন্থায় মিটমাট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। গবেষকেরা এ-ও বলছেন, বিষয়টি আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য আরও গবেষণা হওয়া দরকার। কারণ, অনেক সবুজ এলাকায় দুষ্কৃতকারীদের দল বা গ্যাং সক্রিয় থাকে, সবুজ ঝোপঝাড়ের আড়ালে কিছু মানুষ লুকিয়ে অবৈধ কাজ করে। এসব বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নেওয়ার জন্য সবুজের সঙ্গে সহিংসতার সম্পর্ক নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।