চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ নিহত ২
Published: 20th, April 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আলাদা দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরএলাকার সোনারমোড় ও সদর উপজেলার আমনুরা বাইপাস এলাকায় দুর্ঘটনাগুলো ঘটে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রৃাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান।
নিহতরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরএলাকার বেলেপুকুর মহল্লার সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাবিকুন নাহার (২০) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের উজ্জলটোলা গ্রামের মো.
ওসি মতিউর রহমান জানান, জেলা শহরের সোনারমোড় জেলা আদর্শ স্কুলের সামনে শিবগঞ্জের দিক থেকে আসা একটি ট্রাক পিছন হতে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুতর আহত হন চালক চালক ইসমাইল হোসেন।
এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। রাজশাহীতে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
অন্যদিকে সদর উপজেলার আমনুরা বাইপাস এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাবিকুন নাহার (২০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অপর একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মো. মতিউর রহমান বলেন, “সদর উপজেলায় আলাদা দুটি দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। সোনার মোড়ের দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছে। দুটি ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”
ঢাকা/শিয়াম/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ সদর উপজ ল দ র ঘটন ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত নদী, সিমেন্টের পদ্ম
অস্তিত্বের ছায়ালেখা
একবার যে নিজ হতে হারায়—
তার পদচিহ্নে ঘাস গজায় না আর,
বাতাসও চেনে না তার গন্ধ,
কুয়াশায় ভেসে যায় নামের উচ্চারণ।
সে তখন দাঁড়িয়ে থাকে
অদৃশ্য কোনো সন্ধ্যার পাড়ে,
যেখানে আলো আর অন্ধকার
একই শরীরের দুই নিশ্বাস।
তার চোখে জেগে থাকে শূন্য,
যেন সময়ের ভেতর সময়ের প্রতিধ্বনি—
সে আর ‘আমি’ নয়,
সে এক অবিরাম নীরবতার জনপদ।
একবার যে নিজ হতে হারায়,
সে আর কারোর নয়—
সে তখন নদীর অস্থিরতায় মিশে যায়,
অথবা বাতাসের অচেনা এক দার্শনিক প্রশ্ন হয়ে থাকে।
গল্পগুলো এমন কেন সত্যগুলো হারিয়ে ফেলে,
যেমন নদী নিজের স্রোতে নিজেরই ছায়া মুছে দেয়।
অচেতন এক আনুগত্যে সময় আসে—নীরব হাত বাড়িয়ে,
এক এক করে পুরোনো অঙ্গীকার লোপ করে নিয়ে যায়।
সত্য থাকে কোথাও—ছায়ার আড়ালে,নিস্তব্ধ
শব্দের মধ্যে, মন—নীরবতার গভীরে কিংবা অস্তিত্বের অন্তঃস্থ গভীর ভাষায়।
কিন্তু গল্পেরা, তারা চুপচাপ আসে—
সেই সত্যকে মাখিয়ে দেয় মায়ার রঙে, যেন হোলি খেলে চলে
পরতে পরতে অচেনা ভুবনে।
এক ভুবনে রূপান্তরিত করে যেখানে আমাদের স্মৃতি সুখের মতো বিরামহীন।
আমরা হাসি—আমরা ভুলে যাই,
কারণ গল্পগুলো সুন্দর, কিন্তু সত্য হয় চির অস্থায়ী;
অন্তহীন এক ধ্রুবতারা, যা শুধুই চায় নিজেকে হারিয়ে দিতে।
তুমি কে—জানি না,
তবু প্রতিটি রূপে
তোমাকেই খুঁজি।
চুম্বনের আড়ালে তুমি,
আধো ঘুমের স্বপ্নে তুমি,
প্রতিটি ভালোবাসার ভেতরে
তোমার ছায়া।
প্রেম এক—
পাত্র অনেক।
মদ অমর,
কিন্তু পেয়ালা বদলায়।
তাই জন্মে জন্মে,
না-পাওয়ার আগুনে জ্বলি—
আমি নীরবে,
তুমি আমার চিরন্তন প্রিয়।
তোমার ছায়া ছুঁয়ে দেখি
প্রতিটি চোখের ভেতর,
তবু তুমি অধরা—
আকাশের তারার মতো দূর,
বুকের ভেতরে জ্বলন্ত আগুনের মতো কাছে।
যত রূপ দেখি পৃথিবীতে—
সব তোমারই অচেনা আয়না।
প্রতিটি স্পর্শে তোমার অনুপস্থিতি,
প্রতিটি প্রেমে
তোমার অনন্ত উপস্থিতি।
রাত এখন রাষ্ট্রের সম্পত্তি,
অন্ধকারে টহল দেয় বিজ্ঞাপন।
ঘুম নয়—
আমাদের চোখে ঢুকে পড়ে নতুন অফারের পর্দা।
দেশ নামের শব্দটা এখন ডেটা সেন্টারে বন্দী,
মানুষ নামের উপাত্ত বিক্রি হয় প্রতি বাইটে,
মায়ের কোলে জন্ম নেয় ক্যামেরার ফ্ল্যাশ।
রাস্তার পাশে মৃত নদী—
তার বুকে গজিয়েছে সিমেন্টের পদ্ম,
তবু কেউ বলে—উন্নয়ন হচ্ছে,
কারণ ধ্বংসেরও আজ একটা সুন্দর ভাষা আছে।
আমরা সবাই চাকর—
কখনো স্ক্রিনের, কখনো টাকার, কখনো তেলের গন্ধের।
শিশুরা শেখে: ভবিষ্যৎ মানে পাসওয়ার্ড,
আর ন্যায় মানে ফাইল নং ৩৭৪বি।
আমি বুঝি—
আমি ভুল কালে জন্মেছি,
আমার ভাষা পুরোনো, আমার রাগ অচল।
যখন মানুষের চোখে জল ছিল,
যখন মৃত্যু মানে ছিল ভয় নয়, প্রার্থনা।
এখানে ক্ষুধা মানে পেট নয়, ক্ষুধা মানে ক্ষমতা,
ভালোবাসা মানে ট্রেন্ড,
আর সত্য মানে—যে কথা সবচেয়ে জোরে বাজে।
আমি বুঝি—
ভুল সময়ে জন্মেছি,
এই সময় আমার নয়।
এখানে করুণা বিক্রি হয় কেজি দরে,
বিশ্বাসের বাজারে ছারপোকা ঘুরে বেড়ায়,
আর দেবতারাও আজ পে-স্লিপে বাঁধা।
আমি হয়তো আসিনি আগেভাগে,
সময়টাই এসেছিল দেরিতে—
যখন মানুষ হয়ে বাঁচা এক দোষ,
আর মিথ্যে হয়ে ওঠা একমাত্র মুক্তি।
এখন মৃত্যু কেবল একটি সহজ সংবাদ,
এবং জীবন—এক অঘোষিত জরুরি অবস্থা।
বেলা গেল বয়ে
সময়ের ধোঁয়াশায়,
আসা-যাওয়ার খেলায়
প্রৌঢ় বিকেলের ক্লান্তি।
চেয়ে দেখি—
আরও এক নতুন জীবন,
যেন মৃত্যুর অন্ধকার গলি পেরিয়ে
অপর প্রান্তে আলোর ঝলকানি।
দিনের শেষে ক্লান্ত শরীর বলে,
সব শেষ হয়নি—
অন্তরালে লুকানো রয়েছে
এক নবতর জাগরণের প্রতিশ্রুতি।
বেলা ফুরোয়,
কিন্তু সময় থামে না;
মৃত্যুরও ওপারে
বয়ে চলে জীবনের স্রোত।