Risingbd:
2025-11-17@11:02:39 GMT

নায়ক রুবেলের অজানা তথ্য

Published: 3rd, May 2025 GMT

নায়ক রুবেলের অজানা তথ্য

বাংলা চলচ্চিত্রের মার্শাল আর্ট কিং মাসুম পারভেজ রুবেল। পর্দায় কুংফু-কারাতের দুর্দান্ত কৌশল দেখিয়ে এনে দিয়েছেন নতুন ধারার অ্যাকশন সিনেমা। আজ ৩ মে, এই অ্যাকশন হিরোর জন্মদিনে চলুন এক নজরে জেনে নিই তার জীবনের অজানা গল্পগুলো।
ক্যারিয়ারের সূচনা ও উত্থান : ১৯৮৬ সালে ‘লড়াকু’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রায় আড়াইশ সিনেমায় অভিনয় করেছেন, যার প্রায় সবই সুপারহিট। শুধু অভিনয় নয়, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবেও সমান সফল। তার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বিচ্ছু বাহিনী’, ‘মায়ের জন্য যুদ্ধ’, ‘প্রবেশ নিষেধ’।

মার্শাল আর্ট ও অ্যাকশন কিং : রুবেল দুইবার জাতীয় কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জয় করেছেন। তিনি গড়েছেন নিজস্ব ফাইটিং গ্রুপ ‘দ্যা একশন ওয়ারিয়র্স’ এবং জনপ্রিয় করেছেন ‘ড্রাংকিং কংফু’, ‘উইপিং কংফু’সহ মার্শাল আর্ট কৌশল। তার হাত ধরেই বাংলা সিনেমায় অ্যাকশনের ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়।

গিনেস বুকে নাম লেখানোর স্বপ্ন : এখন পর্যন্ত ৯৭ জন নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন রুবেল। শিগগিরই এই সংখ্যা ১০০ পূর্ণ করে গিনেস বুকে নাম তোলার ইচ্ছা তার।

সহশিল্পী ও প্রিয় নায়িকারা : সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন পপি, মৌসুমী ও পূর্ণিমার সঙ্গে কাজ করতে। তবে তার ভাষায়, "স্পেশাল পপি। তার আগে ছিলো কবিতা।"

অভিনয়ের আগে প্লেব্যাক শিল্পী : নায়ক রুবেল ক্যারিয়ার শুরু করেন প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে। ‘জীবন নৌকা’ সিনেমায় বড় ভাই সোহেল রানার জন্য কণ্ঠ দিয়েছিলেন।

জাতীয় ক্রীড়াবিদ হিসেবেও সফল : ব্যাডমিন্টন, ফুটবল ও কারাতে— এই তিন খেলাতেই জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছেন রুবেল।

পারিবারিক জীবন ও সামাজিক ভূমিকা : রুবেলের স্ত্রী সুলতানা পারভেজ নীলা, একমাত্র পুত্র নিলয় পারভেজ। ফাইট ডিরেক্টর হিসেবে যেমন জনপ্রিয়, তেমনি সমাজ সচেতনতায়ও ভূমিকা রাখেন। নারীদের আত্মরক্ষার জন্য কারাতে শেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "ধর্ষণ থেকে বাঁচতে নারীদের কারাতে শেখা উচিত। স্কুল-কলেজে কারাতে শিক্ষা নারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।"

পুরস্কার ও সম্মাননা : জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মনোনয়ন না পেলেও দুইবার বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন — ২০০০ ও ২০০১ সালে।

শৈশব ও পারিবারিক পটভূমি  : ১৯৭০ সালের ১ জানুয়ারি বরিশালের গৌরনদীতে জন্ম। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বেড়ে ওঠা এই তারকার পিতা ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। শৈশবেই সংস্কৃতিমনস্ক রুবেল অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে।

সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আত্মীয়-সম্পর্ক : তার বড় ভাই মাসুদ পারভেজ, যিনি সোহেল রানা নামে খ্যাত। রুবেল ভাইয়ের প্রতি এতটাই শ্রদ্ধাশীল যে, কখনও সামনে বসেন না, বসলেও মেঝেতে। টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও উপস্থাপিকা তানিয়া আহমেদ তার ভাগ্নি।
নায়ক রুবেল শুধু রূপালি পর্দার নায়ক নন, বাস্তব জীবনেও একজন লড়াকু যোদ্ধা। অ্যাকশনের মঞ্চে যেমন দুর্দান্ত, তেমনি পরিবার, সমাজ আর সংস্কৃতির জন্যও নিবেদিত প্রাণ। 

ঢাকা/রাহাত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য় কর ছ ন অ য কশন প রস ক র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ