Prothomalo:
2025-06-21@19:43:29 GMT

তাঁর সঙ্গে যত স্মৃতি

Published: 6th, May 2025 GMT

আশির দশকের মাঝামাঝি সময়। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সম্মেলন হবে। এর আগের রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব গেটে একটা ব্যানার লাগাচ্ছি। নিচে মই ধরে দাঁড়িয়ে আছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি কর্নেল (অব.) কাজী নূর–উজ্জামান। বিকেল থেকে তিনি আমাদের সঙ্গে আছেন। মই, ব্যানার-পোস্টারের প্যাকেট, আঠার বালতি টেনে টেনে নিয়ে আসছেন। রাত তিনটার সময় গাড়ি চালিয়ে চানখাঁরপুল থেকে খাবার এনে আমাদের খাওয়ালেন।

আমাদের মধ্য থেকে কেউ একজন বলল, ‘একজন সেক্টর কমান্ডারকে দিয়ে মই-আঠার বালতি টানাচ্ছ! মাসুক, তোমরা কি জানো, এই কর্নেল সাহেব তিন দেশের হয়ে যুদ্ধ করেছেন?’

আমি জানি, তিনি ডা.

নায়লা জামান ও নৃত্যশিল্পী লুবনা মরিয়মের বাবা। সাপ্তাহিক বিচিত্রায় চাকরিসূত্রে নায়লা আপাদের সঙ্গে পরিচয়। নায়লা আপার বর শহীদুল্লাহ খান বাদল। তাঁর অনেক পরিচয়। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বিচিত্রার সম্পাদক শাহাদত চৌধুরীর সহযোদ্ধা। রাশেদ খান মেননের ছোট ভাই। ডেইলি নিউজ ও উইকলি হলিডের প্রকাশক। কয়েক দিন আগেও নায়লা আপা ছিলেন শিশু হাসপাতালের বড় ডাক্তার।

আমরা বিচিত্রার কর্মীরা আশির দশকে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখেছি নায়লা আপার বাসায়। সেই সূত্রেই কর্নেল কাজী নূর–উজ্জামানকে খালু ডাকতাম। তাঁর স্ত্রী চিকিৎসক সুলতানা জামানকে খালাম্মা ডেকেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন নারী ইমেরিটাস অধ্যাপকের একজন সুলতানা জামান। অটিস্টিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করেছেন সারা জীবন। প্রতিবন্ধী ও মানসিক প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন নামে তাঁর একটা সংস্থা আছে। ফাউন্ডেশনের পোস্টার, ব্যানার প্রকাশনার কাজ করে দিয়েছি। সুলতানা জামানের ভাই বিজ্ঞানী জামাল নজরুল ইসলাম। প্রখ্যাত লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তাঁর ফুফাতো ভাই।

এই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ২৮ মার্চ কর্নেল নূর–উজ্জামান ভারতে চলে যান। তাঁর স্ত্রী সুলতানা জামান সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় ৭ নম্বর সেক্টরের মহদীপুরে একটি হাসপাতাল গড়ে তোলেন। তাঁর ১৫ বছরের ছেলে নাদিম ওমর লালগোলায়, ৭ নম্বর সাবসেক্টরে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের অধীনে যুদ্ধ করেন। কর্নেল নূর–উজ্জামানের দুই মেয়ে লুবনা মরিয়ম ও নায়লা জামান এপ্রিলের শেষ দিকে ভারতে চলে যান। তখন লুবনা ও নায়লা ছিলেন প্রায় কিশোরী। বাংলাদেশ মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থায় যোগ দেন তাঁরা। তাঁদের কাজ ছিল ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করা। মুক্তির গান চলচ্চিত্রে যে গানের দলটাকে দেখা যায়, সেখানে তাঁরা ছিলেন। কর্নেল নূর–উজ্জামান তখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৯ নম্বর সেক্টরের। স্ত্রী ও ছেলে ৭ নম্বর সেক্টরে। পুরো যুদ্ধের সময়টা পরিবারে কেউ কাউকে দেখেননি। তাঁদের মধ্যে কোনো যোগাযোগও ছিল না।

কর্নেল নূর–উজ্জামান পড়তেন কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে, রসায়নে। পড়ার সময় ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বার্মা উপকূলের সুমাত্রায় যুদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হলে কাজী নূর–উজ্জামান পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে নবীন অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানের হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। আবার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ‘বীর উত্তম’ খেতাব পান। ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রধান কৃতিত্ব গণমানুষের’, এই যুক্তিতে তিনি অবশ্য বীর উত্তম উপাধি গ্রহণ করেননি, কখনো ব্যবহার করেননি।

এরশাদের জমানায় আন্দোলন করতে গিয়ে জেল খেটেছিলেন। কাজী নূর–উজ্জামান নিয়মিত লেখালেখি করতেন পত্রপত্রিকায়। তাঁর লেখা বইয়ের মধ্যে রয়েছে স্বদেশচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, একজন সেক্টর কমান্ডারের স্মৃতিকথা। তিনি সাপ্তাহিক নয়া পদধ্বনি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। এই পত্রিকার সূত্রে নূর–উজ্জামান খালুর সঙ্গে যোগাযোগ। সেক্টর কমান্ডার ফোরামের পোস্টার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পোস্টার, ফেস্টুন—অনেক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ হয়েছে।

তিনি ভক্সওয়াগন গাড়ি চালিয়ে আমার শাহজাহানপুরের বাসায় আসতেন। আমি অনেকবার তাঁর বেইলি রোডের আমিনাবাদ কলোনির বাসায় গিয়েছি।

২০১১ সালের ৬ মে ঢাকায় মৃত্যু হয় কাজী নূর–উজ্জামানের। প্রায়ই এই বীরের কথা মনে পড়ে। বীরকে সালাম।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য দ ধ কর র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

বিগ ব্যাশে রিশাদ কেন আবার দল পেলেন

প্রথমবারের ড্রাফটেই দল পেয়েছিলেন। বিগ ব্যাশে গত মৌসুমের ড্রাফটে তাঁকে দলে নিয়েছিল হোবার্ট হ্যারিকেনস। বিসিবির অনাপত্তিপত্ত (এনওসি) না পাওয়ায় খেলা হয়নি। এবারের ড্রাফটে দল পেলেন এবারও। সেই হোবার্টই তাঁকে আবার দলে নিয়েছে। বিগ ব্যাশে রিশাদের এই চাহিদার কারণ কী?

হোবার্ট অধিনায়ক নাথান এলিসের কথায় কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। রিশাদকে দলে নেওয়ার পর এলিস স্পষ্ট করেই বলেছেন, মাঝের ওভারে বেশি উইকেট চান। সে কারণেই তো ইংল্যান্ডের রেহান আহমেদকেও কিনেছে দলটি।

এলিস কী বলেছেন শুনুন তাঁর মুখেই, ‘রিশাদ ও রেহানকে নিয়েছি, কারণ মাঝের ওভারে আমাদের উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য বাড়াতে চেয়েছি। আমরা রিশাদকে গত বছর নিতে চেয়েছিলাম, এবারও নিতে পেরেছি। ওকে দলে পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ও ইতিমধ্যে সম্ভাবনাময় এক লেগ স্পিনার হিসেবে ঝলক দেখিয়েছে।’

রশিদ খানের কথা যদি ধরি, জোরের ওপর স্টাম্পে বোলিং করে। রিশাদ ভিন্ন। ও বল হাওয়ায় ভাসাবে, দারুণ গুগলি আছে, গতির ব্যবহার করে।অ্যারন ফিঞ্চ

বিগ ব্যাশের পডকাস্টে দলগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। অস্ট্রেলিয়ানরা যে রিশাদকে কতটা ভালো মানের বোলার বিবেচনা করে, তা বোঝা যাবে তাঁর কথাতেই। সেখানে রিশাদের বোলিং নিয়ে ফিঞ্চ বলেছেন এভাবে, ‘রিশাদ দারুণ একজন বাংলাদেশি লেগ স্পিনার। আধুনিক লেগ স্পিনারদের চেয়ে সে একটু অন্য রকম। সে হাওয়ায় ভাসিয়ে বোলিং করতে পছন্দ করে। চাপে থাকলে বলের গতি কমায়।’

আরও পড়ুনদুই হাতে ‘ক্র্যাম্প’ নিয়েও জয়সোয়ালের ইতিহাস২ ঘণ্টা আগে

ফিঞ্চ রিশাদের বোলিংকে নিউজিল্যান্ডের লেগ স্পিনার ইশ সোধির সঙ্গে তুলনা করেছেন, ‘আমি যাদের বোলিং করতে দেখেছি, তাদের কারও সঙ্গে যদি রিশাদের বোলিং তুলনা করতে চাই তাহলে ওকে নিউজিল্যান্ডের ইশ সোধির সঙ্গে তুলনা করব।  রশিদ খানের কথা যদি ধরি, জোরের ওপর স্টাম্পে বোলিং করে। রিশাদ ভিন্ন। ও বল হাওয়ায় ভাসাবে, দারুণ গুগলি আছে, গতির ব্যবহার করে। দারুণ একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কাটিয়েছে রিশাদ। অসাধারণ একজন বোলার। রিকি পন্টিংও রিশাদ সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলেন।’

রিশাদ হোসেন এবার কি বিগ ব্যাশে খেলবেন?

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বড় হওয়ার ক্ষেত্রে পরিবারকেও ভূমিকা রাখতে হয়
  • একটি সম্ভাবনাময় উদ্যোগ
  • করোনায় আরো ২ জনের মৃত্যু
  • বেরোবি শিক্ষকের মুক্তি চায় রাবির সাংবাদিকতা বিভাগ
  • চট্টগ্রামে করোনায় একজনের মৃত্যু, মোট আক্রান্ত ৬২ 
  • ডেঙ্গুতে এক দিনে ৩৫২ জন হাসপাতালে, মৃত্যু ১
  • একদিনে রেকর্ড ৩৫২ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে, মৃত্যু একজনের
  • মাহামুদুল হকের মুক্তি দাবি রাবির সাংবাদিকতা বিভাগের
  • নারী সহপাঠীকে হলের কক্ষে নিয়ে যাওয়ায় ছাত্রের আসন বাতিল
  • বিগ ব্যাশে রিশাদ কেন আবার দল পেলেন