ইয়ামালের একের পর এক শট ঠেকিয়ে মহানাটকের নায়ক সোমের
Published: 7th, May 2025 GMT
বলা হয়, গোলরক্ষকেরা যেখানে হাঁটেন, সেখানে নাকি ঘাসও জন্মায় না। মানে, এতটাই নেতিবাচক প্রভাব থাকে তাঁর মাঠে। স্বাভাবিক যে লোকটা গোল খেলে দল হেরে যায়, তাঁকে কে পছন্দ করবে!
তবে কথাটা সব সময় সত্যি নয়। গোলরক্ষকেরা অনেক সময় ফুলও ফোটাতে পারেন। পোস্টের নিচে তেমনই এক ফুল ফোটানো ম্যাচ গতকাল রাতে উপহার দিয়েছেন ইন্টার মিলান গোলরক্ষক ইয়ান সোমের। বার্সেলোনার বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ খেলেছেন সুইস এই গোলরক্ষক।
একের পর এক সেভ করে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ম্যাচটির অন্যতম নায়কও তিনিই। সোমেরের নৈপুণ্যেই বার্সেলোনার বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ গোলে জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইন্টার।
আরও পড়ুন৭ গোলের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বার্সেলোনাকে বিদায় করে ফাইনালে ইন্টার মিলান৫ ঘণ্টা আগেদুই লেগ মিলিয়ে সোমের হজম করেছেন ৬ গোল। সাদা চোখে মনে হতে পারে এতগুলো গোল খাওয়া একজন কীভাবে ম্যাচের নায়ক হন? কিন্তু যাঁরা দুই লেগের খেলা দেখেছেন, তাঁরাই শুধু বুঝবেন সোমেরের মাহাত্ম্য। কীভাবে বার্সার পরাক্রমশালী আক্রমণভাগের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে একের পর এক গোল বাঁচিয়েছেন! গতকাল রাতে সব মিলিয়ে সোমের ঠেকিয়েছেন ৭টি গোল হওয়ার মতো শট। আর দুই লেগ মিলিয়ে এই সুইস গোলরক্ষকের সেইভ ১৪টি!
পোস্টের নিচে মহানায়ক হওয়ার রাতে সোমের সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছেন বার্সার ‘পোস্টার বয়’ লামিনে ইয়ামালকে। ১৭ বছর বয়সী ‘নতুন মেসি’র শট একের পর এক ঠেকিয়েছেন সোমের। গতকাল রাতে সব মিলিয়ে ৯টি শট নেন ইয়ামাল। যার মধ্যে ৫টি ছিল লক্ষ্যে, কিন্তু কোনোটিই সোমেরের গড়ে তোলা ‘চীনের প্রাচীর’কে টপকাতে পারেনি। এর আগে প্রথম লেগে ৬টি শট নিয়ে ২টি লক্ষ্যে রাখেন ইয়ামাল। যার একটিই শুধু গোল হয়েছে।
গোল বাঁচাচ্ছেন সোমের.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক র পর এক
এছাড়াও পড়ুন:
গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ কষ্টে আছে
রোজা থেকে ঈদুল আজহা পর্যন্ত বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল থাকায় গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন। ঈদুল আজহার সপ্তাহখানেক পার না হতেই চালের দাম ফের বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে অস্বস্তি ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ধরনভেদে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও মিরপুর-৬ কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতারা জানান, এই সময়ে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ছয় থেকে আট টাকা বেড়েছে। আর মোটা ও মাঝারি চালের কেজিতে বেড়েছে দুই-তিন টাকা।
দেশে ধান-চালের অন্যতম উৎপাদনস্থল নওগাঁ জেলা। সেখানকার চালকলমালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার প্রথম আলোকে বলেন, জিরাশাইল ও কাটারিভোগ ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল ধানের দাম মণপ্রতি ১২৫-১৫০ টাকা ও কাটারিভোগ ধানের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাবে নওগাঁয় পাইকারিতে প্রতি কেজি চালে এক থেকে তিন টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাধারণত সরবরাহ কম ও চাহিদা বেশি থাকলে চালের দাম বাড়ে। কিন্তু বাজারে প্রচুর চাল থাকার পরও হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন বোরো ধান উৎপন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯৫ শতাংশের বেশি বোরো ধান কাটা শেষ হলেও কিছু এলাকায় কৃষকেরা ধান কাটছেন।
বাজার বিশ্লেষক ও কৃষি–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও মিলমালিকেরা ধান মজুত করে রেখেছেন এবং এখন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছেন। তাঁরা ঈদের আগেই কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে গুদামে মজুত করেছেন। এখন নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
সব সময় কৃষকের হাতে যখন ফসল থাকে, মিলমালিক ও মজুতদারেরা কম দামে তাঁদের কাছ থেকে ধান কেনেন। এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। আবার যখন কৃষকের হাত থেকে পণ্য চলে যায়, তখন তাঁরা দাম বাড়িয়ে দেন। সরকার মৌসুমের শুরুতে কৃষকের কাছ থেকে বেশি বেশি ধান চাল কিনলে মিলমালিক ও মজুতদারেরা সুবিধা করতে পারেন না। কৃষকও ভালো দাম পেতে পারেন। সরকার প্রতিবছর ধান ও চাল কেনার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে, তা পূরণ হয় না নানা কারণে। এ ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে।
ইতিমধ্যে মিলমালিক ও আড়তদারদের কাছে যে চাল চলে গেছে, সেটা হয়তো সরকার ফেরত আনতে পারবে না। কিন্তু নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালের সরবরাহ বাড়িয়ে কিংবা বিদেশ থেকে আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে খোলাবাজারে চাল বিক্রির পরিমাণ বাড়ানো।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় টিসিবি ও খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত কম দামে যে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এসব দোকান ও টিসিবির সামনে ক্রেতাদের লম্বা সারি দেখে ধারণা করা যায়, গরিব মানুষ অনেক কষ্টে আছে। তাদের কষ্টটা কোনোভাবে বাড়তে দেওয়া যাবে না। যেকোনো উপায়ে হোক চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতেই হবে। প্রয়োজনে সরকার বিদেশ থেকেও চাল আমদানি বাড়াতে পারে।