গেজেট হলেই সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু: ইসি
Published: 7th, May 2025 GMT
৬১টি সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তনের জন্য আবেদন পেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত বিদ্যমান আইনের সংশোধনীর গেজেট পেলেই সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু করবে সাংবিধানিক এই সংস্থা।
আজ বুধবার বিকেলে ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ইসি বলে আসছিল, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত বিদ্যমান আইনের একটি ধারায় মুদ্রণত্রুটি আছে। যে কারণে ইসি চাইলেও নতুন করে বড় আকারে সীমানায় পরিবর্তন আনতে পারবে না, শুধু কোনো প্রশাসনিক পরিবর্তন থাকলে তা অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। তাই ইসি এখানে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করেছিল। গতকাল মঙ্গলবার উপদেষ্টা পরিষদ ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ (সংশোধন) অধ্যাদেশ–২০২৫’–এর অনুমোদন দেয়। তবে এখনো গেজেট প্রকাশ করা হয়নি।
ইসি সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত ৬১টি সংসদীয় আসনের বিষয়ে ৪০৫টি আবেদন এসেছে। একেকটি আসনে একাধিক আবেদনও আছে। গেজেট পেলে তাঁরা কাজ শুরু করবেন। যত দ্রুত সম্ভব, আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করা হবে।
অতীতে দেখা গেছে, প্রথমে নির্বাচন কমিশন ৩০০ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করে। এরপর খসড়া নিয়ে কারও দাবি বা আপত্তি থাকলে তা নিয়ে ইসিতে আবেদন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়। এরপর শুনানি করে সীমানা পুনর্নির্ধারণ চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু এবার ইসি বলছে, ৬১টি আসনে পরিবর্তনের আবেদন এসেছে। তাহলে কি ইসি শুধু এসব আবেদনের ভিত্তিতে ৬১টি আসনে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এই ৬১টি আসন ইসির প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ। একটি আসনে পরিবর্তন আনতে গেলে হয়তো পাশের আসনেও পরিবর্তন আনতে হবে। এ জন্য সংখ্যাটি বলা যাচ্ছে না। ৬১টি আসনের আবেদনের সূত্র থেকেই কাজটি শুরু হবে। আবার সব আবেদন হয়তো যৌক্তিক নয়। পর্যালোচনার পরে এটি বলা যাবে।
ইসি সচিব বলেন, পদ্ধতিগত পর্যালোচনার ক্ষেত্রে আইনে যেভাবে আছে, সেভাবেই করা হবে। আইনে একটা কাঠামো দেওয়া আছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত একটি নতুন আইনের খসড়া প্রস্তাব করেছে। তাদের প্রস্তাব নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত আইনের বিষয়ে ঐকমত্য হয়, তখন কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘যদি’র ওপর তাঁর কিছু বলার সুযোগ নেই। যদি হয়, তখন সে ‘যদি’ অনুযায়ী হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, যাঁরা আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের আবেদন করেছেন, তাঁদের আবেদন করার জন্য ইসি অনুরোধ করেনি। নতুন করে কেউ যদি আবেদন করতে চান, করতে পারবেন। ইসি আবেদনের কোনো সময়সীমা দেয়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের কমিটিতে হত্যা মামলার আসামি, ছাত্রলীগের কর্মী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বর্ধিত কমিটি এবং ১৭টি আবাসিক হলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কমিটিতে পদ পেয়েছেন হত্যা মামলার আসামি এবং ছাত্রলীগ কর্মীরাও। এ ছাড়া ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত না থেকেও পদ পেয়েছেন কেউ কেউ।
গতকাল শুক্রবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭০ সদস্যের বর্ধিত কমিটি ঘোষণা করা হয়। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন (বাবর) ও সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে ১৭টি আবাসিক হল ও ১টি অনুষদের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি ১৭৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সেই হিসাবে কমিটির সদস্যসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪৭ জনে।
নবগঠিত বর্ধিত কমিটি ও ১৭টি হলের কমিটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার আসামি (বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত) হামিদুল্লাহ সালমান, রাজু আহমেদ ও মোহাম্মদ রাজন মিয়া ছাত্রদলে পদ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে হামিদুল্লাহ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ছাত্রদলের সভাপতি, রাজু শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং রাজন সদস্যপদ পেয়েছেন।
এ বিষয়ে হামিদুল্লাহ সালমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওই হত্যার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই মবের চাপে তড়িঘড়ি করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়। এ ঘটনায় আমাকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কারও করেছিল। এখন আমি নিয়মিত শিক্ষার্থী। ওই মামলা এখনো তদন্তাধীন। মামলার সঠিক তদন্ত হলে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হব।’
পদ পেয়েছেন ছাত্রলীগ কর্মীরানিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এমন কয়েকজন ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রোকেয়া হলে সভাপতি পদ পেয়েছেন কাজী মৌসুমী আফরোজ। তিনি শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেছে তাঁকে। ২১ নম্বর ছাত্র হলে সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া ফিরোজ আহমেদ এবং একই হলের সহসভাপতি সাইদুর রহমানও ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
১০ নম্বর হল ছাত্রদলের সভাপতি সাইফ বিন মাহবুব, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাকিব মাওলা, বর্ধিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পাওয়া মো. শাকুর বাপ্পী, বর্ধিত কমিটির সদস্য শুভজিৎ বিশ্বাস, শাবাব সবুজ অর্ণব, ইমরান আজিজ—তাঁদের সবাইকে বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের মিছিল-সমাবেশে দেখা গেছে। তবে তাঁরা ছাত্রলীগের কোনো পদে ছিলেন না। এ ছাড়া শহীদ সালাম-বরকত হল ছাত্রদলের সভাপতির পদ পাওয়া সাইদুল ইসলাম ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের বিগত কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন।
জাবি ছাত্রদলের ২১ নম্বর হলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ছাত্রলীগ কর্মী ফিরোজ আহমেদ।ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর ছবি